পঞ্চগড়ে আদালতের নির্দেশে সন্তানকে ফিরে পেলেন মা
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
দাম্পত্য কলহে বিচ্ছেদের পর দীর্ঘদিন ধরে ছেলেকে নিয়ে পালানো এক বাবা আদালতের নির্দেশে তার সন্তানকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে মায়ের মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে সন্তানকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের হেদায়েতপুর গ্রামের কবির হোসেন প্রধানের মেয়ে সিফাত-ই-তানজিলা সিজতির সঙ্গে দিনাজপুরের উপশহর এলাকার সেরাজ উদ্দিনের ছেলে সেলিম লিটনের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর ২০১২ সালের মার্চে ওই দম্পতির ঘরে ছেলে সন্তান আসে। দাম্পত্য
কলহের কারণে ২০১৬ সালের জুনে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর সন্তান নিয়েই
দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। একপর্যায়ে শালিসের কথা বলে সেলিম
ছেলে সাফওয়ান আহম্মদকে (৭) নিয়ে পালিয়ে যায়। সন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য
সিফাত-ই-তানজিলা সিজতি ২০১৭ সালে দেবীগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের
করেন। ওই মামলায় ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল আদালতের বিচারক মিনহাজুর রহমান ১৫
দিনের মধ্যে সন্তানকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।
এ নির্দেশের পরে সেলিম পারিবারিক জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও সুপ্রীম
কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন। কিন্তু সব আদালতের বিচারক নিম্ন আদালতের
রায় বহাল রাখেন ও পরবর্তী ধার্য তারিখে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল সন্তানসহ
সেলিমকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সেলিম তার সন্তানকে আদালতে
হাজির না করায় আদালত তাকে ওই দিন ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
বাধ্য হয়ে ওই দিন বিকেলেই সন্তানকে আদালতে হাজির করে রায় মানতে আদালতে
আবেদন করেন। বিচারক আবেদন গ্রহণ করে সন্তানকে মায়ের নিকট হস্তান্তর করে
দণ্ডাদেশ থেকে সেলিমকে অব্যাহতি দেন।
সিফাত-ই-তানজিলা সিজতি বলেন, ‘দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। এর
থেকে আনন্দ আর কি হতে পারে? আমরা খুবই ভালো আছি।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী একেএম আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের বলেন, ‘আদালতের আদেশ মেনে নিয়ে সন্তানকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ায় আদালত সাজার আদেশ প্রত্যাহার
করেন। তার বাবা সাফওয়ানকে নানা বাড়িতে না যাওয়ার জন্য বিভিন্নরকম ভয়ভীতি
দেখিয়েছিল। বর্তমানে মা-ছেলে খুবই আনন্দে আছে।’