পঞ্চগড়ে চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
পঞ্চগড়ের বোদায় একটি চিতাবাঘকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দিনভর ওই এলাকার শত শত মানুষ বাঘটিকে ঘিরে রাখে। খবর পেয়ে বোদা থানা পুলিশ ও বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়েও বাঘটিকে রক্ষা কিংবা উদ্ধার করতে পারেনি। তাদের সামনেই পিটিয়ে হত্যা করা হয় চিতাটিকে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বণ্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞসহ পরিবেশবিদরা।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলার বোদা উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়ন ও ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী দৌলতপুর পাথরাজ নদীর পাড় এলাকায় বাঘটিকে হত্যা করা হয়। বাঘটিকে মারতে গিয়ে আহত হয়েছেন ৪ জন। এদের মধ্যে দু’জনকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
বোদা উপজেলার বসুনিয়াপাড়ার ইসমাইল হোসেন জানান, দুপুরে তার মেয়ে প্রথমে বাঘটিকে দেখতে পেয়ে বাড়ির বড়দের জানায়। পরে চিৎকার করলে চারদিক থেকে জড়ো হতে থাকে শত শত মানুষ। মানুষ দেখে ভয় পেয়ে বাঘটি পাথরাজ নদীর পাড়ে ঝোপের মধ্যে আশ্রয় নেয়। স্থানীয় লোকজন পুলিশ ও বনবিভাগের কর্মীদের সামনেই বাঘটিকে ঢিল ছুড়তে থাকে।
এলাকাবাসী আরও জানান, চিতা বাঘটিকে দেখতে আসা লোকজনের ভিড় সামলাতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। উৎসুক লোকজন ঢিল ছুড়ে চিৎকার করে বাঘটিকে ঝোপের ভেতর থেকে বের করার চেষ্টা করে। কিন্ত বাঘটি সেখান থেকে বের হয়নি। সন্ধ্যায় ঝোপের বাইরে আসার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন লাঠিসোটা দিয়ে বাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা করে।
বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জব্বার বাঘ পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ আবু হায়দার মো. আশরাফুজ্জামান জানান, বাঘ রক্ষার জন্য পুলিশ সেখানে যায়নি। বাঘ রক্ষার জন্য বনবিভাগ ছিল। পুলিশ সেখানে জনগণের নিরাপত্তার জন্য গিয়েছিল। সন্ধ্যায় ওই ঝোপ থেকে বাঘ বের হয়ে দৌড় দিলে স্থানীয় লোকজন সেটিকে মেরে ফেলে। পরে বাঘটির মৃতদেহ আমরা উদ্ধার করে বোদা থানায় নিয়ে আসি।
বোদা উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা স্থানীয় লোকজনকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি। বাঘটি ঝোপের বাইরে বের হলে স্থানীয় লোকজন তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।
মৃত বাঘটিকে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ হাসান।