পালিত হল পঞ্চগড় মুক্ত দিবস
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
২৯ নভেম্বর ১৯৭২, দিনটি নিঃসন্দেহে পঞ্চগড়ের ইতিহাসে একটি ভিন্ন জায়গা করে নিয়েছে। দিনটি পঞ্চগড় মুক্ত দিবস। ‘৭১ সালের এই দিনে সাড়ে সাত মাস যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত হয় পঞ্চগড়। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে প্রতি বছরের ২৯ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
মুক্তিযুদ্ধে পঞ্চগড়ের ইতিহাস থেকে জানা যায়, পাকবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতের পর সারা দেশে একযোগে আক্রমণ শুরু করলেও পঞ্চগড় মুক্ত ছিল ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত।
কিন্তু ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় পাকবাহিনী সড়ক পথে দেবীগঞ্জ হয়ে পঞ্চগড় দখল করে। জেলার দেবীগঞ্জ,বোদা,আটোয়ারী ও সদর থানা দখল করে নেয়। তবে সদর উপজেলার অমরখানা চাওয়াই নদীতে সেতু না থাকায় পাকিস্তানি পাকবাহিনীর সৈন্যরা তেঁতুলিয়ায় প্রবেশে সক্ষম হয় নি। তাই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় তেঁতুলিয়া পুরোপুরি মুক্ত ছিল। ফলে মুক্ত অঞ্চল হিসেবে তেঁতুলিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হতে ও যুদ্ধ পরিকল্পনা করতে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হতেন।
তাছাড়া অস্থায়ী সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভা তেঁতুলিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে সেখানে একটি সেতু গেট নির্মাণ করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধারা ২০-২৮ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা হামলা চালায়। ২৮ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ঘিরে ফেলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। এরই মধ্য দিয়ে ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় জেলা পাকহানাদার মুক্ত হয়।
ওই যুদ্ধে ৪৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং আহত হন শতাধিক।
জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে ৬ নং সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার এ.কে. ভূঁইয়া জানান, আমরা যুদ্ধ করে ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড়কে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হই। গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে দ্রুত পঞ্চগড়কে মুক্ত করতে সক্ষম হই আমরা।
এদিকে পঞ্চগড় মুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে জেলার সরকারি বেসরকারি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনগুলো দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।