এম এস ইসলাম আকাশ এর গল্প-প্রতিশোধ-দ্যা রিভেঞ্জ
গল্প
প্রতিশোধ দ্যা রিভেঞ্জ
এম এস ইসলাম আকাশ
একবার এক অতিশয় বজ্জাত লোকের অভিনয় করার খুব শখ হলো-এক পরিচালক মহোদয়কে গিয়ে অনেক অনুনয়বিনয় করলেন। শেষে কোন উপায় না পেয়ে হুমকি ধামকি দিলেন। এমনকি স্যুটিং করতে দিবেন না বলে আলটিমেটাম দিলেন। অগত্যা কোন উপায় না পেয়ে পরিচালক রাজি হলেন। কিন্তু কি চরিত্র দিবেন চিন্তায় পড়ে গেলেন। অবশেষে ঠিক করা হলো যুদ্ধ শেষে আত্মত্যাগকারী মুক্তিযোদ্ধার চরিত্র দিবেন। কিন্তু সমস্যা হলো উনি তোতলা। সংলাপ বলতে পারেননা। কি করা যায় কি করা যায় পরিচালক মহোদয় মহা চিন্তায় পড়ে গেলেন। উনাকে একদিন ডাকলেন। উনিতো মহাখুশি। দলবল নিয়ে অভিনয় করতে এলেন। পরিচালক লাইট ক্যামেরা একশন বলে শর্ট নিলেন। পুরোদমে যুদ্ধ চলছে, পরিচালক অভিনেতা মহোদয়কে বললেন আপনার বুকে গুলি লেগেছে। আপনি মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবেন যুদ্ধক্ষেত্রে। তিনি সেভাবেই পড়ে রইলেন। পরিচালক বললেন কাট। অভিনেতা মহোদয় পরিচালককে জিঙ্গাসা করলেন বস আমার সংলাপ কই? পরিচালক বললেন অন্যকে দিয়ে ডাবিং করে সংলাপ বসানো হবে। উনি মহাখুশী, পরিচালক সহ ইউনিটের সবাইকে ভূরিভোজ করালেন।
স্যুটিং ইউনিট চলে গেল ঢাকায়। মাস ছয়েক কেটে গেল। সব কাজ সম্পূর্ণ হলো। এবার ছবি মুক্তির প্রহর এলো।
মহা ধূমধামে মুক্তি পেল ছবিটি। নেতা-অভিনেতা মহোদয় মহাসমারহে দলবল নিয়ে ছুটলেন সিনেমা দেখতে। সে এক এলাহী কান্ড। কিন্তু কোথায় কি পুরা সপ্তাহ সিনেমাটি দেখলেন। কিন্তু কোথাও নিজেকে খু্জে পেলেন না। শেষে মান অপমানের চুড়ান্ত হয়ে পরিচালককে ফোন দিলেন। তাকে অনেক শাসালেন। কিন্তু পরিচালক মহোদয় ধ্যৈয্যের পরাকাষ্টা দেখালেন। অবশেষে তাকে বললেন, আরে বস রাগ করেন কেন? আপনি তো আমার সিনেমার মুল চরিত্র। অভিনেতা রেগমেগে জিঙ্গেস করলেন, কি ভাবে? পরিচালক মহোদয় সুন্দর করে বুঝালেন, ছবির নামটা বুঝলেন না, ওটা তো মুখ থুবড়ে পড়া। আর এর কেন্দ্রীয় চরিত্র হলো মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা লোকটি। আর ঐ লোকটি হলেন আপনি। খেয়াল করে দেখেন শেষ দৃশ্যটা ধান ক্ষেতে পড়ে থাকা লোকটিই হলেন আপনি। ফোনটা রেখে দিয়ে মুচকি হাসলেন পরিচালক। তারপর চলে গেলেন ফ্লাশ ব্যাকে, ছোট থেকেই অভিনয়ের পোকাটা তার মাথায় গেথে ছিল। গ্রামের ছেলেদের নিয়ে নাটক করার কারনে তোতলা তোতা মিয়া গ্রামের হুজুর কে দিয়ে সমাজের কান ভারি করে গ্রাম ছাড়া করেন তাকে। এখানে ওখানে ঠোকর খেয়ে ইউনিটে ইউনিটে ফুট ফরমাশ খেটে ভাগ্যের সহায়তায় আজ তিনি পরিচালক।