আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: কিছু কথা
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: কিছু কথা
রণেশ মৈত্র (সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত)
সভাপতি ম-লীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ
আমি ছোটবেলা থেকেই, বিশেষ করে ছাত্র ইউনিয়ন ১৯৫২ সাল থেকে করা কাল থেকেই। শিক্ষা পেয়েছি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতার। সেখান থেকে সরে আসি নি আজও। ফলে আমেরিকার নির্বাচন নিয়েও কোনদিন মাথা ঘামাই নি। কারণ একটাই, সেখানকার ব্যবস্থায় বাম-প্রগতিশীল শক্তিকে রাষ্ট্রীয় কার্য্যকলাপের অঙ্গণে দাঁড়াতেই দেওয়া হচ্ছে না। দ্বি-দলীয় যে ব্যবস্থা দেখে আসছি আমেরিকায় এবং বৃটেন, অষ্ট্রেলিয়াসহ আরও কতিপয় উন্নত দেশে-তাতে ক্ষমতার বদল হয়, দল-বদল হয়, ব্যক্তির বদল হয় কিন্তু সমাজ ব্যবস্থার বদল হয় না। পুঁজিবাদী বিশ্বব্যাপীই নিজ নিজ দেশের মানুষের কাছে নির্বাচন এখন একটি প্রথায় পরিণত হয়েছে মাত্র। এশিয়া, আফ্রিকার দেশগুলির অবস্থা তো আরও করুন।
বলছিলাম, আমেরিকার নির্বাচনের কথা-যে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হলো ৩ নভেম্বর তারিখে। ফলাফল টি.ভি চ্যানেলগুলির কল্যাণে গত ৭ নভেম্বর মধ্যরাতে দেখা গেল।
গোটা বিশ্বের মতো আমিও এবারের আমেরিকার নির্বাচনে যথেষ্ট কৌতুহলি ছিলাম। চাইছিলাম মনে প্রাণে ডোনাল্ড এবার যেন ব্যাপক ভোটে পরাজিত হন। কেন? বিগত চারটি বছর ধরে দেখেছি ট্রাম্পের মিথ্যাবাদিতা, দেখেছি করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণে কোটি লোকেরও বেশী আক্রান্ত এবং এ যাবত আড়াই লক্ষ মানুষের ঐ ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা সত্বেও বিষয়টাকে হালকা এবং “ওটা কিছু নয়” বলে উড়িয়ে দিয়ে সংক্রমণ প্রসারে ওয়াক-ওভার দেওয়া, বিশ্বে জলবায়ূ পরিবর্তন প্রতিরোধে ভূমিকা নিতে অস্বীকার এবং সংক্রান্ত গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অতিমাত্রায় “চীন সমর্থক” আখ্যা দিয়ে ঐ সংস্থা থেকেও বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের বিপদকালে প্রত্যাহার করে নেওয়া, জর্জ ফ্লয়েডসহ অনেকগুলি কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকে সরকারের পুলিশ গুলি করে হত্যা করে কঠোর বর্ণবাদী ভূমিকা গ্রহণ করা, রাজনৈতিক আদর্শিক মতানৈক্যের কারণে দুর্বলতা দেশগুলিকে বিপদে ফেলার অশুভ লক্ষ্য নিয়ে একের পর এক ঐ সব দেশগুলির বিরুদ্ধে “অর্থনৈতিক অবরোধ” জারী করার তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে।
তবে বিভিন্ন দেশকে “অর্থনৈতিক অবরোধ” জারীর মাধ্যমে তাদেরকে পোষ মানানোর অপচেষ্টা একমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পই করেছেন তা নয়। মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের এটি দীর্ঘ দিনের লালিত কৌশল।
“ও রিষষ সধশব অসবৎরপধ মৎবধঃ ধিমরহম” জাতীয় ফাঁকা বুলি বারংবার উচ্চারণ করে মার্কিন জনমতকে বিভ্রান্ত করে তাঁর প্রতি মোহবিষ্ট করার অপচেষ্টা, “অসবৎরপধ ভড়ৎ অসবৎরপধহ” বুলি আউড়িয়ে বিদেশ থেকে আমেরিকায় অভিবাসনকে দুরূহ করে তুলে শূক্ষ্মভাবে সাম্প্রদায়িক অভিবাসন নীতি গ্রহণ করা-ইত্যকার অসংখ্য অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। তাই আমেরিকা ও বিশ্ববাসীর স্বার্থেই একটা পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। তাই ট্রাম্পের পরাজয় ঘটুক, গোটা বিশ্ববাসীর মত আমিও তা চাইছিলাম। চাইছিলাম ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বোল্লিখিত ক্রিয়া কলাপের অবসান ঘটিয়ে আমেরিকার ও পৃথিবীর মানুষের স্বার্থের অনুকূলে নীতির বদল ঘটুক-এমন আন্তরিক কামনা থেকে।
অবশেষে রাষ্ট্রক্ষমতার পরিবর্তন ঘটলো-ঘটালেন আমেরিকার জনগণ। এই পরিবর্তনের আকাংখা সারা পৃথিবীর মানুষেরও ছিল তা পূরণ হলো। জো-বাইডেন ও কমলা হারিস জুটি সেই আকাংখ্যা বিপুল ভোটাধিক্যে বস্তুত: ভোট প্রাপ্তিতে একটি রেকর্ড তৈরী করে পূরণ করলেন।
কিন্তু এই দুই প্রার্থী যে বিপুল বিজয় অর্জন করলেন-তা নির্বাচন চলাকালে এবং বিজয় সুনিশ্চিত হওয়ার পরও তা নির্বিঘœ, সংশয়মুক্ত এবং অনিশ্চয়তামুক্ত হয় নি এই নিবন্ধ লেখা পর্য্যন্ত। গোড়াগড়ি থেকেই ট্রাম্প বলে আসছিলেন, পরাজিত হলে সে ফল তিনি মেনে নেবেন না। পরাজিত হলেন। এখন বলছেন, হোয়াইট হাউস ছেড়ে তিনি কোথাও যাবেন না। ভোট গ্রহণ চলাকালে কয়েকটি রাজ্যে ট্রাম্প সমর্থকের বাইডেন সমর্থকদের উপর সন্ত্রাসী আক্রমণ চালিয়েছে-কিছু সংখ্যক গ্রেফতারও হয়েছে। সর্বশেষ জানা গেল, ভোট যথার্থ হয় নি, এমন দাবী করে ফলাফল বাতিলের দাবীতে ট্রাম্প নাকি সুপ্রিম কোর্টে যাবেন ৯ নভেম্বর সোমবার। হয়তো ঐ মোকর্দমা এই নিবন্ধটি টাইপ হওয়ার আগেই দায়ের হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, ভোটের দিন ভোট চলাকালেই ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন তিনটি রাজ্যে ভোটে কারচুপি হচ্ছে এমন দাবী করে সংশ্লিষ্ট আদলিতে ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের করেন কিন্তু প্রাথমিক শুনানীতেই আদালতগুলি ঐ দরখাস্ত নাকচ করে দেন। আসলে তিনি বুঝতে পারছিলেন যে ঐ রাজ্যগুলিতে ডেমোক্র্যাটরী বিপুল সংখ্যায় ভোট পাচ্ছেন। তাই সংকিত হয়ে ঐ মামলা দায়েরের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করাই ছিল তাঁর মতলব।
বাইডেন-কমলা জুটি
এবারকার মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বাইডেন কমলা জুটি ভোট প্রার্থীদের ক্ষেত্রে রেকর্ড সৃস্টি করেছেন। বাইডেন যে বিপুল পরিমাণ পপুলার ভোট ও রাজ্যগুলির ভোট পেয়েছেন তা অন্তত: অতীতের ১০০ বছরেও কোন প্রেসিডেন্সিয়াল প্রার্থী পান নি বলে নানা সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়। এতেই বুঝা যায়, আমেরিকার মানুষ কতটা ট্রাম্প বিরোধী এবং তাঁর অনুসৃত নীতির বিরোধী হয়ে পড়েছিলেন।
জানা যায়, করোনা, অর্থনৈতিক সংকটবৃদ্ধি, ব্ল্যাক লাইফ ম্যাটার্স আন্দোলন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এবারকার প্রেসিডেন্সিয়্যাল নির্বাচনে সর্বাধিক ভূমিকা রেখেছে। করোনার কারণে এবার ব্যাপকভাবে যে পোষ্টাল ব্যালট পড়ে তা শেষ পর্য্যন্ত ভোটের ফলাফল নিয়ামক ভূমিকা পালন করে।
জো বাইডেন কে?
৭৭ বছর বয়সী বাইডেনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের পেনসেলভিনিয়ায়। তাঁর পরিবার ছিল ক্যাথলিক খৃষ্টান সম্প্রদায়ভূক্ত। ছিলেন দরিদ্র বাবার সন্তান-অবশ্য শেষ জীবনে তিনি দারিদ্র্যের শিকার হন। মধ্যবিত্তের আর্থিক টানা পোড়েনের মধ্যেই মানুষ হন বাইডেন। ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। ১৯৬৫ সালের ব্যাচেলার অব আর্টস ডিগ্রী শেষ করেন। প্রথম বছর বাহামাতে চমন্তের ছুটি কাটিয়ে দেশে ফেরার পথে পরিচিত হন সিরাকিউস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিলিয়া হান্টারের সাথে। দু’জনে পরস্পরকে ভালবেসে ফেলেন-বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৬৬ সালে। ১৯৬৮ তে আইন পাস করেন।
রাজনীতিতে তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন ১৯৬১ সালের নির্বাচনের পর থেকে। তার আগে সম্পৃক্ত হন আইন পেশায়। একটি রিপাবলিকান দলের আইনজীবীর ল’ফার্মের সাথে যুক্ত হন কিন্তু রিপাবলিকান দলের রাজনীতি তাঁকে আকৃষ্ট করে নি। ১৯৬৯ সালে এক ডেমোক্র্যাট নেতার পক্ষে আইনী লড়াইয়ে যান তিনি। এর পরই ডেমোক্যাটিক পার্টিতে নাম লেখান। পরের বছর নিউক্যাসলের সিটি কাউন্সিল কাউন্সিলম্যান নির্বাচিত হন। দ্রুত তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। পরের বছর মাত্র ২৯ বছর বয়সে একটি রিপাবলিকান অধ্যুষিত এলাকায় সিনেট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি তাঁকে মনোনয়ন দেয়। অত্যন্ত জনপ্রিয় সেই রিপাবলিকান প্রার্থীকে পরাজিত করে বাইডেন চমক সৃষ্টি করেন। প্রায় চার দশক ধরে সিনেটর হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার পটভূমিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট সংক্রান্ত নীতি নির্ধারকদের একটি পদে তিনি মনোনীত হন। সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে সরাসরি অস্ত্র হামলায় না যাওয়ার পক্ষে দৃঢ়মত পোষণ করে আমেরিকাকে তেমন ভূমিকা পালন না করতে দেওয়ায় মার্কিন জনগণ এখনও সিনেটের বাইডেনের কাছে কৃতজ্ঞ। সর্বদা শান্তির পক্ষে থাকা বাইডেন দারফুরে মার্কিন হামলা এবং প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের ইরাক আগ্রাসনের কট্টর বিরোধী ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে আনলেও বারাক ওবামা সে দফায় ডেমোক্যাট দলীয় মনোনয়ন পান। তিনি জো বাইডেনকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত করেন। ২০১৭ সাল পর্য্যন্ত তিনি আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আসীন ছিলেন।
২০২০ সালের নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলীয় প্রাইমারি নির্বাচনে জিতে ও কানসালে জো বাইডেনেকেই ডেমোক্যাটিক দলীয় প্রার্থী হিসেবে বেছে নেন তাঁকে। প্রচার অভিযানে নেমে তিনি সার্থকভাবে ট্রাম্পের ব্যর্থতা ও নিজ প্রতিশ্রুতি সাফল্যের সাথে জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি। অবশেষে পেলেন ঐতিহাসিক বিজয় যদিও এই নিবন্ধ লেখা পর্য্যন্ত পরাজয় মেনে নেন নি ডোনাল্ড ট্রাম্প।
কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং কোন ধনী পরিবারের সন্তান নন। বিজয় ভাষণে বলেছেন, তাঁর এই সাফল্য আমেরিকান জনগণের সাফল্য। এর পেছনে তাঁর মায়ের অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে তুলে ধরেন। নানা নির্বাচনী পদে ব্ল্যাক ওম্যান হয়েও কমলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিজয়ী হয়েছেন। ব্ল্যাক লাইফ ম্যাটার্স আন্দোলনে ওত:প্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।
জো বাইডেন তাঁর বিজয় ভাষণে একদিকে যেমন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতি জোর দিয়েছেন তেমনই আবার অভিবাসন নীতির প্রসার ও সহজতর করা, বর্ণবৈষম্য দূর করা, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ দূরীকরণে উপযুক্ত ভূমিকা গ্রহণ সহ কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ।
এই কর্মসূচীগুলি জরুরী গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এগুলির প্রতি সমর্থন কাটিয়ে এবং সত্বর তার বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে তাঁর ঘোষিত কর্মসূচীর মৌলিক দুর্বলতাগুলি চিহ্নিত করতে চাই।
এক. জো বাইডেন মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কোন পারিবর্তন করবেন কি করবেন না সে বিষয়ে নিশ্চুপ থাকায় ধরে নিতেই পারি যে, তিনি এতকাল ধরে আমেরিকা যে পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে এসেছে তাই পালন করে যাবেন। যদি তাই হয় তবে অনুন্নত বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত হতেই থাকবে;
দুই. বিশ্ব নিয়ন্ত্রীকরণ কর্মসূচীর প্রতি আমেরিকা এ যাবত কোন দিনই ইতিবাচকব ভূমিকা গ্রহণ তো করেই নি বরং ব্যাপক ভিত্তিতে মারণাস্ত্র উৎপাদন করে সর্মথক দুর্বল দেশগুলির কাছে বিক্রী করে চলেছে কিন্তু আনবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গঠনের দাবীতে সমর্থন ঘোষণা করলেও নিজেরা তা না করে অপরাপর আনবিক শক্তিধরদেশগুলিকে নিরস্ত্রীকরণের দাবী জানিয়ে তাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করে রাখতে সচেষ্ট থেকেছে।
নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয় অর্জনের পর এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দীর্ঘকাল যাবত পালিত নীতির মৌলিক পরিবর্তন ঘটালে শান্তিময় এবং প্রাচুর্য্যভরা বিশ্ব গঠন সম্ভব হতে পারে।
তিন. অর্থনীতির মৌলিক পরিবর্তন সাধনের ব্যাপারেও কোন কিছু লিখিত না থাকায় বাইডেনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি যদি পূরাপুরি আস্তবায়িত হয়ও-তার দ্বারা মধ্যবিত্ত, নি¤œ-মধ্যবিত্ত ও বেকার জনগণের মূল সমস্যার আদৌ কোন সমাধান সম্ভব হবে না। উল্লেখ্য যে মাস তিনেক আগেই পত্রিকায়খবর বেরিয়েছিলো যে করোনা দুর্য্যােগের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক কোটিরও বেশী মানুষ নতুন করে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। পরবর্তী তিন মাসে এই সংখ্যা আরও বেড়ে থাকতে পারে।
তাই এই কঠিন সমস্যাকে সকল পুঁজিবাদী রাষ্ট্রেই কর্পোরেট পুঁজি মালিকেরা কঠিনতর করে তুলছে-আমেরিকায় তো ঐ কর্পোরেট পুঁজি অধিকতর শক্তিশালী। তারাই বরং সরকারকে এতাকাল নিয়ন্ত্রণ করে এসেছে এখনও করবে। তাই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমেরিকায় অনুসৃত নীতির মৌলিক পরিবর্তন ঘটিয়ে তার সম্পদের সামাজিকীকরণ বা অপুঁজিবাদী পথে অগ্রসর করলে তবেই শুধু মার্কিন নাগরিকদের জীবনে সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক সমৃত্ধি ঘটতে পারে। কিন্তু এমন কোন নীতি বদলের ঈঙ্গিত নেই তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে।
চার. বর্ণবৈষম্যের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি তিনি স্পষ্ট ভাষায়ই দিয়েছেন। কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা কমলা হারিসকে তাঁর রানিং মেট করায় ঐ ব্যাপারে তিনি তাঁর সদিচ্ছারওপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। এমন প্রতিশ্রুতি প্রতি নির্বাচনেই প্রতিটি দলই দিয়ে থাকে কিন্তু তা কার্য্যকর হওয়ার কোন নজির নেই। বাইডেন পারবেন কি আমেরিকান সমাজ ও প্রশাসন এবং নানা বাহিনীকে বর্ণ বৈষম্য বিরোধী করে গড়ে তুলতে?
এ প্রশ্নগুলি নেহায়েতই বাস্তব এবং এই প্রশ্নগুলিই মানুষকে সন্দিহান করে তোলে মার্কিন সরকারকে। বাইডেন কমলা জুটি এই বিষয়গুলিকে সমাধানে এগিয়ে এলে ভাল করবেন।
তাঁদের নির্বাচনী সাফল্যের জন্য অভিনন্দন।