‘ফিলিস্তিন-ইসরাইলের সংঘাত ইহুদীদেরকে চূড়ান্ত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে’
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং এর অন্যান্য মিত্ররা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের প্রভাব ফিলিস্তিনের সমস্ত ভূমিতে পৌঁছে গেছে এবং এর ফলে সেখানকার পরিস্থিতি আরো বেশি উত্তপ্ত হয়ে আছে।
ইসরাইল যদি স্বেচ্ছায় ফিলিস্তিনিদের নিকট দখলকৃত কিছু ভূমি ছেড়ে দিতে রাজি হয় এবং কিছু সুনির্দিষ্ট দাবী দাওয়া মেনে নিতে ইচ্ছুক হয় শুধুমাত্র তখনই ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যকার শান্তি প্রতিষ্ঠা হওয়া সম্ভব।
কিন্তু ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একজন উচ্চ পদস্থ পরামর্শদাতা পরিষ্কার করে জানিয়েছেন যে, শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসলামি শরিয়া আইন বাস্তবায়ন তাদের লক্ষ্য নয় বরং পুরো বিশ্বে শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করা তাদের অন্যতম লক্ষ্য।
মাহমুদ আল-হাব্বাস নামে এই ব্যক্তিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হয়। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলের মধ্যকার সংঘাত শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক সমস্যা নয় বরং এটি ইসলাম এবং ‘শয়তানের সংস্কৃতির’ মধ্যকার একটি সংঘাত।
‘The History of Jihad From Muhammad to ISIS’ নামক গ্রন্থের লেখক রবার্ট স্পেন্সার তার জিহাদ ওয়াচ নামক ব্লগে লিখেন- ‘ইতিহাস আমাদেরকে দেখাচ্ছে যে, ইসলামের শত্রু হচ্ছে সেসব অমুসলিম যারা শরিয়া আইন মেনে নিতে ইচ্ছুক নয়।’
তিনি আরো লিখেন, ‘ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যকার সমস্যা দু’পক্ষের মধ্যে কিছু সমঝোতার ভিত্তিতে মেটানো সম্ভব এমনটি যারা মনে করেন, তাদেরকে আমি মাহমুদ আল-হাব্বাস এর উক্তিগুলো মনে করিয়ে দিতে চাই।’
ফিলিস্তিনের স্থানীয় একটি মিডিয়াতে মাহমুদ আল-হাব্বাস এর একটি ভিডিও বার্তা দেখানো হয়। যেখানে তিনি বলেন,‘ইসরাইলের সাথে ফিলিস্তিনের সংঘাত আমাদেরকে ইসলাম এবং ইসরাইলের-ইহুদিদের মধ্যকার আসন্ন যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামের ইতিহাসের সকল যুদ্ধ ছিল ইসলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে।’
‘ইসরাইল এবং ইহুদিরা ইসলামের শত্রু, মুসলিমদের শত্রু। তারা শয়তানের আনুগত্য করে এবং শয়তানের সংস্কৃতি অনুসরণ করে।’
অধিকন্তু তিনি বলেন, ইসরাইলের সাথে বর্তমানের চলমান যুদ্ধক্ষেত্র অতীতের মত সাধারণ কোনো যুদ্ধ নয়, বরং এটি হচ্ছে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত চূড়ান্ত যুদ্ধ যার মাধ্যমে- ‘প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইসরাইলের ধ্বংস সাধন হবে।’
বার্তা সংস্থা PMW এর মতে, মাহমুদ আল-হাব্বাস ফিলিস্তিনি জনগণের নিকট ধর্মকে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। সম্প্রতি চালানো এক জরীপে দেখা গিয়েছে যে, ৯৫ শতাংশ ফিলিস্তিনির নিকট ‘ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়।
মাহমুদ আল-হাব্বাস বলেন, ‘জেরুজালেম হচ্ছে আমাদের এবং সাম্রাজ্যবাদী ইসরাইলের মধ্যকার সংঘাতের মূল লীলাভূমি।’
‘জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ ইসলাম এবং এর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের চিহ্ন বহন করে চলেছে। এই মসজিদটি মুসলিম এবং মুসলিমদের শত্রুদের মধ্যকার, ইসলামি সংস্কৃতি এবং শয়তানের সংস্কৃতির মধ্যকার যুদ্ধের একটি কেন্দ্র। আল-আকসা মসজিদটি সে সমস্ত শয়তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কেন্দ্র যারা বিশ্বময় শয়তানের সংস্কৃতি এবং বহুত্ববাদী ছড়িয়ে দিতে চায়।’- মাহমুদ আল-হাব্বাস এমনটি বলেন।
তিন বলেন, ‘জেরুজালেম শহরটি পবিত্র কুরআনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চূড়ান্ত যুদ্ধের কেন্দ্র।’
প্রসঙ্গত, পবিত্র কুরআনের আল-ইসরা (১৭ নম্বর সূরা) নামের সূরাতে ‘চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতির’ কথা বলা হয়েছে এবং এই সূরায় মহান আল্লাহ তায়ালা ইহুদিদেরকে ‘ইসরাইলের শিশু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তবে অনেকে ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতির’ যুদ্ধ অতীতে ঘটে গিয়েছে। কিন্তু মাহমুদ আল-হাব্বাস বলেন, তিনি এবং অন্য বিশিষ্ট আলেমগণ ভবিষ্যতে মুসলিম এবং ইহুদিদের মধ্যে একটি চূড়ান্ত যুদ্ধের বিষয়টি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন যার মাধ্যমে ইহুদিরা চূড়ান্তভাবে ধ্বংস হবে।
পবিত্র জেরুজালেম শহরকে কেন্দ্র করে ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার চলমান সংঘাত আমাদেরকে ‘চূড়ান্ত ধ্বংসের যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে।’
সূত্রঃ wnd.com।