বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বই লিখলেন নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ‘বঙ্গবন্ধু গবেষণা কেন্দ্র’ এর নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. আনোয়ারুল করীম
শেখমুজিবুররহমান; বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতিরপিতা, বঙ্গবন্ধুসহ আরো অজস্র বিশেষণ তাঁর নামের পূর্বে। এসবের বাইরেও তাঁর ছিল ব্যক্তি জীবন; স্ত্রী, পরিবার, বন্ধু, আত্মীয় সবই ছিল। ব্যক্তি জীবনের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশ্লেষণ কমই হয়েছে, যতটা হয়েছে তাঁর নেতৃত্ব, প্রশাসক, রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বিভিন্ন সফলতার বিশ্লেষণ।একজন বীর রাষ্ট্র প্রধানের জীবনে প্রতিটি মুহুর্তে ছিল দুঃসাহসিকতায় পূর্ণ। প্রতিটি মুহুর্তে জীবন-মৃত্যুকে বাজি রেখে দেশের জন্য স্বাধীনতা এনে দিলেন তিনি। জাতিতাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিয়েছেন। দেশের জন্য তাঁর অপরিসীম ত্যাগের জন্য তিনি বাংলাদেশের জনক হয়েছে। তাঁর দেশপ্রেম ও বীরত্বের জয়গাঁথা এবং পরিবারসহ শাহাদৎ লাভের ঘটনা নিয়ে রচিত হয়েছে ‘The Ballad of a Patriot’|
২০১৯ সালে নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বঙ্গবন্ধু গবেষনা কেন্দ্র’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন সাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এই গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর সাবেক শিক্ষা সচিব জনাব জহিরুল ইসলা মাখন ও দেশ-বিদেশের শুধীমন্ডলী এই গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ও পাশাপাশি ভূয়সী প্রসংশা করেন।
এই গবেষণা কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট লালন-রবীন্দ্র-নজরুল গবেষক প্রফেসর ড. আনোয়ারুল করীম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে নিয়ে দ্যা ব্যালাড অব এ প্যাট্টিয়ট: লাইফ এন্ড লিগেসি অব বঙ্গবন্ধু বইটি রচনা করেন আগামী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপন করার নিমিত্তে। তার লেখা এই ব্যতিক্রমী বইটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক আলোঢ়ন সৃষ্টি করেছে। ড. করীম এর উদ্যোগে এই গবেষনা কেন্দ্রটি দিনে দিনে অফুরন্ত জ্ঞানের ভান্ডারে পরিনত হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনী, পারিবারিক জীবনী থেকে শুরু করে সব ধরণের জানা-অজানা বিষয় নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে এই কেন্দ্রে।রয়েছে দেশি-বিদেশী অসংখ্যা বই। বঙ্গবন্ধু গবেষণা কেন্দ্র এর চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি খুলনা -এর উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মোঃ আব্দুল্লাহ। তিনি এই গবেষনা কেন্দ্রের উন্নতি ও গবেষণা কাজের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখেন।
চলতি বছর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য এক অনন্য সময়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী তথা ‘মুজিববর্ষ’ পালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু তারুণ্যের অনুপ্রেরণা। তিনি বিশ্বে মানবিকতা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও অণ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াকু সাহসী আগামী প্রজন্ম তৈরির অনুপ্রেরণা।
এ মহান পুরুষকে নিয়ে লেখা বইয়ে অনেক নতুন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে যা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে সহায়তা করবে এবং এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু কুষ্টিয়া সফরে গেলে অত্র গ্রন্থের লেখক ও সাংবাদিক হিসেবে তার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি স্পষ্ট করেই বলেন, বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। এদেশের মানুষ এখনো অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র এবং এদেশের মানুষ সব সময় অন্যের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তাই বিশাল সৈন্য বাহিনীর পিছনে অতিরিক্ত খরচ না করে কৃষি ও শিক্ষা খাতে ব্যয় বাড়িয়ে স্বাবলম্বী হওয়াই আমার প্রধান লক্ষ্য।
তিনি দেশের কর্তৃত্বভার বিত্তবান সমাজের বাইরে কৃষক, শ্রমিক ও মজুরদের হাতে তুলে দেবার জন্য ‘বাকশাল’ গঠন করেছিলেন। বস্তুত তাদের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে।
পনেরটি ভিন্ন অধ্যায়ের সমন্বয়ে বইটি লেখা ইংরেজিতে। মূলত বর্হিঃবিশ্বে বঙ্গবন্ধুর কীর্তি ছড়িয়ে দিতে ৪৫৫ পৃষ্ঠার বইটি প্রকাশ করেন বেকন প্রকাশনী থেকে। বইটি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অজানা তথ্যের ভান্ডার। বইটি আগামী প্রজন্ম কেন পড়া উচিৎ তা বিখ্যাত ইতিহাসবিদ পিলপার শালের ভাষায়, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনী অবশ্যই পড়তে হবে বিশেষ করে প্রতিটি কিশোর ও তরুণের। যারা ১৯৭১ সালের পাকিস্তানি নির্যাতন স্বচক্ষে দেখেননি, তারা অবশ্যই এমন বইয়ের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু ত্যাগকেউপলব্দি করতে পারবে।’
ইতোমধ্যে শুধী মহলে প্রশংসিত হয়েছে ড. আনোয়ারুল করীমের লেখা বইটি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই এর উপর শর্ট ফিল্ম নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শর্ট ফিল্ম নির্মাণে প্রযোজক ও পরিচালকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে।