বাংলাদেশের আপামর জনগণের ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা, এর সমাধান কল্পে যাবতীয় করণীয় নির্ধারণ এবং বাংলাদেশ ভূমি অধিকার সংরক্ষন জাতীয় কমিটি সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করার লক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
অদ্যই ০৮ এপ্রিল, ২০১৯ সোমবার সকাল ১১.৩০টায় ‘বাংলাদেশ ভূমি অধিকার সংরক্ষন জাতীয় কমিটি’ এর এক সংবাদ সম্মেলন জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ‘বাংলাদেশ ভূমি অধিকার সংরক্ষন জাতীয় কমিটি’ এর আহবায়ক এম. দেলওয়ার হোসেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক এম.এ. হালিম, আফরোজা খান, শাহজাহান শেখ, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম শামীম, সাংগঠনিক সহকারী মাহবুবুল হক মাহবুব, শিপন কুমার রবিদাস, প্রভাতী রানী রবিদাস, সাইফুল আলম সাবু, কামরুজ্জামান কামরুল, আবুল কাশেম মজুমদার, মাসুদুর রহমান, আহ্বায়কের বিশেষ সহকারী আল আমিন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কবি আবু সালেহ, মিজানুর রহমান, নিরব রবিদাস প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ভূমির মালিকানা, ভূমির ব্যবস্থাপনা, ভূমি জরিপ ও রেকর্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা এবং শত্রু সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি, বিণিময়কৃত সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে, একইসঙ্গে বন বিভাগ কর্তৃক কৃষকদের জমি দখল, নদীভাঙ্গনে জমিহারা মানুষের সমস্যা, ভূমি বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনায় রাজউকের অন্যায়, দূর্নীতি, বেসরকারী হাউজিং কোম্পানীসমূহ থেকে সময়মতো প্লট ও ফ্লাট বুঝে পাওয়ার সমস্যা, ভূমি ক্রয়-বিক্রয়ের সমস্যা এবং ভূমি বিক্রির টাকা কালোটাকায় রুপান্তরিত হওয়া ঘটনাসমূহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশ্নোত্তর প্রদানসহ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
গৃহীত ঘোষণাপত্রের আলোকে সংবাদ সম্মেলনে নিম্নক্ত দাবীসমূহ সরকারের নিকট আপনাদের মাধ্যমে পেশ করা হয়। প্রত্যাশা রেখে বলা হয়, জনস্বার্থে আমাদের গণতান্ত্রিক সরকার এই দাবীসমূহ বাস্তবায়ন করে দেশ ও জাতিকে দীর্ঘদিনের ভূমি সমস্যা থেকে মুক্তি প্রদান করবেন।
১. ভূমির উপর মানুষের জন্মগত অধিকার সংরক্ষণ নিশ্চিত কর।
২. সকল ভূমিহারাকে ভূমি প্রদান কর।
৩. বনে বাসকারীদের বনভূমির মালিকানা দাও।
৪. সকল গৃহহীনকে স্থায়ীভাবে বাসস্থান দাও।
৫. বাংলাদেশ ভূমি অধিকার জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে চলমান লক্ষ-লক্ষ বিচারাধীন মামলা আরবিটেশনের মাধ্যমে আগামী ০৩ বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি করে ভূমি মালিকদের সমস্যা নিরসন করার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।
৬. জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের পর ১৯৫১-৫৫ সালের মধ্যে প্রস্তুতকৃত আরওআর তথা ১৯৬২ সালের এসএ রেকর্ড মোতাবেক মালিকদের বৈধ বর্তমান উত্তরাধীকারী ভূমি মালিকানার প্রত্যয়নপত্র প্রত্যেক জেলা ভূমি অফিস থেকে প্রদানের দাবী জানাচ্ছি। একইসাথে জেলা প্রশাসকের দপ্তরের বাইরে জেলা ভূমি অফিস স্থাপন করার অনুরোধ করছি।
৭. ১৯৫৯ সালের প্রাইভেট ফরেস্ট আইনের জমি যা গরীব কৃষকদের ফিরিয়ে দিতে হবে। এইসব জমি কোনভাবে ১৯২৭ সালের বন আইনে নিয়ন্ত্রন করা যাবে না।
৮. নদী ভাঙ্গনে ভূমিহারা মানুষদের বিভিন্ন নদীতে জেগে ওঠা চরে ভূমি প্রদানের দাবী জানাচ্ছি।
৯. রাজউককে ভূমি নিয়ন্ত্রনের ও ভূমি বানিজ্য করার অধিকার একইসঙ্গে দেওয়া প্রত্যাহার করার দাবী জানাচ্ছি।
১০. ভূমি জরিপ কাজ দক্ষ ও স্থায়ী কর্মচারী দ্বারা করার দাবী জানাচ্ছি।
১১. ১৯২৭ সালের বন আইনের ফলে বনে বসবাসকারী উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষকে অন্যায়ভাবে ভূমিহারা করেছে। তাই তাদেরকে ১০ একর করে বন ভূমির মালিকানা প্রদানের দাবী জানাচ্ছি।
১২. জমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনার জন্য ভূমি বন্ধক, রেহান, বায়নামা সকল তথ্য ০৭ দিনের মধ্যে তহসিল অফিসে তথ্য ফাইল করার দাবী জানাচ্ছি।
১৩. বনিময়কৃত সম্পত্তি, শত্রু সম্পত্তি ও অর্পিত সম্পত্তির বিরোধ নিষ্পত্তি করে সঠিক মালিকদের নিকট আগামী ০১ বছরের মধ্যে জেলা প্রশাসকগণকে বুঝাইয়া দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করার দাবী জানাচ্ছি।
১৪. জমি বিক্রির কর বা ট্যাক্স কমিয়ে ২৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার দাবী জানাচ্ছি।
বার্তা প্রেরক-শিপন রবিদাস প্রাণকৃষ্ণ, সাংগঠনিক সহকারী, বাংলাদেশ ভূমি অধিকার সংরক্ষণ জাতীয় কমিটি।