বাঙালির আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য নেই কপটতা, চরিত্র
বাঙালির আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য নেই কপটতা, চরিত্র
ডাঃ আওলাদ হোসেন,
গণতন্ত্রের জন্য বাংলার মানুষ আর জীবন দিতে প্রস্তুত না। কোনো আন্দোলনও পছন্দ করে না। চালের দাম ডালের দাম নিয়েও কথা বলতে রাজি না। আমরা যারা মফস্বলের হয়ে রাজধানীর কলামিস্টদের চামচাগিরি করে থাকি আমরা কোনো দিন নোবেল পুরস্কার পাবো না। স্থানীয়ভাবে ২/১ টি ক্রেষ্ট কালে ভদ্রে দয়া করে যদি কেউ দিয়ে থাকেন তাতে স্বভাব কবিরা এমন সব কথা লেখেন যা গুরুতর অন্যায়। যেমন গোলার ধান কাউকে আর দেব না আর বিডিআর (বি জি বি) এর গুণগান করে কবি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন অত্যন্ত পরিণত বয়সে। এখন তাকে পুরস্কৃত বা তিরস্কৃত করার কেউ নেই, তবে তারা দেশপ্রেমিক এবং গ্রাম গঞ্জের সহজ সরল শিশু সুলভ মন নিয়ে বেঁচেছিলেন। একবার এক রিপোর্ট নিয়ে জনৈক রোগীকে ডাক্তার খুঁজছিলেন তিনি বেঁচে আছেন কিনা, কারণ তার দেহে কিছু নেই, সবই শেষ। হঠাৎ করে ভায়েটা, টাঙ্গাইলের দানবীর লায়ন নজরুল ইসলাম ইহকাল ত্যাগ করলেন বিনা চিকিৎসায় টাকার অভাবে নয় আয়ুর অভাবে। আমার ইচ্ছা ছিল তার সংঙ্গে দেখা করার। এত সুন্দর দেহ শ্বেত শুভ্র দাড়ি, ধবধবে সাদা চুল, চিনতেই পারিনি আর তার নিথর দেহ পড়ে আছে প্রকৃতির নিয়মেই, আল্লাহ তাদের আত্মার মঙ্গল করুন। নগদ অর্থের জন্য এই দানবীরকে পত্রিকায় জীবনী ছাপা হতো, আর হবে না। তাকে বা পূর্বের কবিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়েছে কি না পত্রিকায় দেখিনি। মরনোত্তর পুরস্কার পেতে পারেন। আল্লাহ মাথার উপরে আছেন এই বিশ্বাস আমাদের আছে। কিন্তু আল্লাহকে দেখা যাবে না, পাওয়া যাবে না দীর্ঘ ৪০ বৎসর আল-কুরআন পাঠ করতে আয়ত্ব করতে পারি নি। কারণ একটাই ঈমান ঠিক নেই। মানুষকে শত সহস্রভাবে বুঝানো হয়েছে আল্লাহ এক অদৃশ্য বা গায়েব উপাসনা শুধু তাকেই করতে হবে, নবীজী (দঃ) শুধু পথ প্রদর্শক মাত্র। নবীজীর (দঃ) রওজা সেজদার জন্য নিষেধ, তারই এক অনুসারী খাজা বাবা এর দরবারে যা হয় তাতে ইসলামের শিক্ষা, আল-কুরআনের শিক্ষা অনেক কঠিন ও কঠোর। সব চাইতে অবাক লাগে মাজারের খাদেম হওয়ার চাইতে মাজারের মালিক হওয়া অনেক গৌরবের। আমি জানতে চাই কোন হুকুমে মাজারের মালিক হয়, হয়েছে, হচ্ছে আর কোন হুকুমে তা বন্ধ হয়েছে অথবা শুধু খাদেম হওয়া যাবে আর কিছুই হওয়া যাবে না। মাদ্রাসা শিক্ষায় এ ধরনের কোনো ফেরকা আছে কি না আমার জানা নেই, তবে আমার অনুরোধ থাকবে খাদেম হয়ে পয়সা উপার্জন করার চাইতে, ঝাড় ফুঁক, ধোয়া মোছা করার, চাইতে সত্যের পূজারী হলে মাজারের মালিক হওয়াই বেহেতের। কিন্ত সে পথ কি কোনো কালে খোলা ছিল অথবা কোনো কালে বন্দ হয়ে যাওয়ার কোনো নির্দেশ ছিল বা আছে। অন্যায়ভাবে মুসলমানকে অসত্যের দিকে টেনে নিয়ে ইহকালতো গেলই পরকালে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হয়ে জবাবদিহী করতেই হবে, আর আল্লাহতো সত্য, আল-কুরআনের শিক্ষাই একটা, পৃথিবীতে মৃত্যুবরণ করতেই হবে এবং পুনরায় ঘুম থেকে জেগে উঠবে সূরা-ইয়াসিন না পড়লে তা বুঝা যাবে না। তারপরও যদি কারো কেরামতি আয়ত্বে থাকে অথবা হস্তগত হয়ে থাকে তবে তাদেরকে অনুরোধ করবো মুসলমানের রক্ত চোষা না হয়ে ইসরাইল হতে মুসলমানদেরকে ইহুদীদের হাত থেকে মুক্ত করান এবং নির্যাতিতদের রক্ষা করুন। মুসলমানদেরকে আন্ধা চক্র থেকে বেড়িয়ে আসতে দিন এবং আল্লাহর বাণী ঘরে বসেই প্রচার করুন। এ জন্যে কোনো পয়সা খরচ হবে না, অশেষ ছওয়াব হাসিল করা যাবে। বহুত ফায়দা হবে । আগেকার যুগে সমাজ সংস্কারদের ভূমিকা ছিল সব রকম কুসংস্কার থেকে জাতিকে রক্ষা করা। এখন সে ধারা বদলে গিয়েছে। জন প্রতিনিধি হওয়ার যে নিয়ম তা পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন জন প্রতিনিধি হতে যে প্রভাব প্রতিপত্তি থাকা দরকার তা পাওয়া যায় না। লেখাপড়ার কোনো মূল্য নেই ডিগ্রীর অভাব নেই অথচ সংসার অচল। দেশটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলো।
১। এক দল অপর দলকে সহ্য করতে পারে না। নাম পর্যন্ত মুছে ফেলে। দেশপ্রেম নেই।
২। নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ কি বলতে পারে না।
৩। দেশ স্বাধীনের দলিল কার হাতে তাও বলতে পারে না।
৪। বানের পানিতে দেশটি যখন ডুবে যায় তখন কোটে গেইল চেয়ারম্যান ভোট লাইগবার নয় ভোট।
৫। টঙ্গীতে লক্ষ লক্ষ লোকের জমায়েত হয় অথচ তাদের লক্ষ্য যদি এক হয় তাহলে বুকের ভাষা মুখে কি বলি। আল্লাহ্ মেহেরবান, মওলা মেহেরবান, কিন্ত গাঁজায় দম দিয়ে পাহাড় বয়ে যেতে পারে কিন্তু অলৌকিত্ব লাভের কোনো সম্ভাবনা নেই। অশ্লীলতা হারাম, অতএব এ নিয়ে রাজনীতি না করাই ভালো ।
৬। তসলিমা নাসরিন যে পরিমান বিদ্রোহী লেখা লিখেছেন মালালাকে নোবেল প্রাইজ না দিয়ে তসলিমা নাসরিনকে অনেক আগেই দেয়া যেতো শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে কলম ধরার জন্য। অবশ্য পরবর্তী ইতিহাসে কোনো মুসলমান মহিলা সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন বলে খ্যাতি অর্জন করতেন।
৭। গরীব ধনী দুইটি শ্রেনীতে দেশটি ভাগ হয়ে আছে। অর্থনীতিতে exploitation বলে একটি কথা চালু আছে যার উদাহরন হচ্ছে Capitalism আমাদের ছোট বেলায় Marxism খুব ধাপটের সংঙ্গে ঘোড়া দাবড়িয়ে বেড়াতো। তার পূর্বে ডারউইন মানুষকে বিবর্তনবাদের মাধ্যমে বানর বানিয়ে বোকা ও নির্বোধ করে রেখেছিল। এখন বিজ্ঞানের যুগে বিশাল কর্মকান্ডে সৃষ্টির শুরু এবং শেষ খুঁজে পাওয়া যায় না। শুধু বিজ্ঞানের একটি শাখা এনাটমি এর বিচার বিশ্লেষণ, বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গের বৈচিত্র তা মানুষের চামড়া আর গন্ডারের চামড়ায় যে পার্থক্য ডা. হ্যানিম্যান তার একটি লেখায় প্রমাণ করে ছেড়েছেন যে মানুষ ছাড়া অন্য সব প্রাণী নিজের অস্তিত্ব কিভাবে রক্ষা করে, যে প্রাণীকে যা দেয়া দরকার স্রষ্টা তা দিয়েছেন তার বিবরন দেয়া মানুষের পক্ষে সম্ভব না। Molecule এর বিন্যাসের কারণে একই মাটি হতে মরিচ গাছ, তেঁতুলগাছ, ফুলের ঘ্রাণ ও সৌন্দর্য্য প্রকাশ পেয়ে থাকে। এখানে বিবর্তনবাদ কাজ করে নাই। যে শক্তি এই বিশেষত্বের মূল, সেটাই অদৃশ্য।
৮। আত্মাকে অস্বীকার করাতো আদি রোগ, আল্লাহ পাক এই রোগকে আরও বাড়িয়ে দেন, অথচ বিবেকসম্পন্ন মানুষই সৌন্দর্য একটি শিল্প চর্চার নামে মেয়েদের নেংটি পড়িয়ে কে কত সুন্দর তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নির্লজ্জতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে বানরের নাচের মত বাহবা পেয়ে থাকে। অথচ মানুষ সৃষ্টির মধ্যে যে কত সূক্ষ্ম কারুকার্য তা বুঝিয়ে শেষ করা যাবে না, অথচ ঐ বয়সের কোটি কোটি যুবতীরা এই রূপ ও সৌন্দর্য বহন করে যা কারো দেহে ভিন্ন রকমের বিচিত্রতায় ভরপুর, যা স্রষ্টার সৃষ্টি অপরূপ, অফুরন্ত, ঝর্ণাধারা যেখানে চুলচেরা বিচার বিশ্লেষনের প্রশ্নই ওঠে না, বিচারের নামে অন্যায়ের প্রশ্রয় দেয়া হয়। ঘর ছাড়া করা হয় আর ঘরে ফেরা হয় না।
বলতেই হবে রব্বানা মা খালাকতা হাযা বাতিলা। এবার আরও কিছুই জানেন না পড়েনও নাই। ফা ছুবহানাল্লাজি বিইয়াদিহী মালাকুতু কুল্লু শাইইন ওয়া ইলাইহি তুরজাউন (ফিরে যাওয়া)। কুল্লু শাইয়িন হালেকুন (মৃত্যু) ইল্লা ওয়াজহাহু। কুল্লু মান আলাইহে ফানে ওয়া ইয়াবকা ওয়াজহু রাব্বিকা জুলজালালি ওয়াল ইকরাম। আলায়ছাল্লাহু বি আহ্কামিল হাকিমীন। হা-মীম, তানজিলুল কিতাবী মিনাল্লাহেল আজিজুল হাকীম। ওয়া হুয়া আলা কুল্লে শাইয়িন কাদির। ইযা আরাদা শাইয়েন আইয়া কুলালাহু কুন ফাইয়াকুন। হও বল্লেই হয়ে যায় ওয়াহুয়া মাকুম আয়নামা কুনতুম। ফাযকুরুনি আযকুরুকুম, ওয়াশকুরুলি ওয়ালা তাকফুরুন। ওয়াইজা ছালাকা ইবাদি আন্নি ফাইন্নি কারিবুন…….। আরও হাজার হাজার আয়াত আছে। ধর্মকে নিয়ে অনেকে না জেনে অনেক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। আরবের কাফেররা যে সমস্ত প্রশ্ন করেছিল তার উপরে আর কোন প্রশ্ন হতে পারে না। যেমন তারা বলেছিল আল্লাহকে আমাদের সামনা সামনি নিয়ে আস তবেই ঈমান আনব। উত্তরে ওহী এল আমি তোমাদের মতই মানুষ, আমার কাজ হচ্ছে শুধু প্রচার করা তোমাদের একমাত্র ইলাহ আল্লাহ। আল্লাহর একত্ববাদ ছাড়া আর কোন প্রচারের কথা বলা হয় নাই। অথচ মূসা (আ:) নবী যখন মোজেজা দেখালেন ফেরাউন সমস্ত যাদুকরদের ডেকে আনলেন, যাদুকররা যখন দেখলো মূসা (আ:) যাদুকর নন তখনই সিজদায় পড়ে গেল এবং ঈমান আনলো এবং মুত্যু বরণ করলো। কিন্ত ফেরাউন ঈমান আনলো না, দরিয়ায় ডুবে মরলো এবং যখন ঈমান আনলো তখন সময় শেষ, এটাকেই ফেরাউনী ঈমান বলা যেতে পারে যা আমাদের সময় আমরা মুসলমানেরা করে থাকি, তবে আল্লাহ পাকই ভাল জানেন। এর মধ্যেও অনেক কট্টরপন্থি আলেম (মুন্সী) জানাজার নামাজ পড়তে চান নাই। আমাদের দাম্ভিকতা এতটুকু প্রমান করতে পারেনি যে কোন ডাক্তার বলতে পারে না যে দেহের উপাদান কোথা থেকে এলো এবং ভিতরের যন্ত্রপাতি হার্ট, লিভার, কিডনি, স্টমাক, সেক্স কিভাবে কেমন করে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছে একটুও টের পাওয়া যায় না। যন্ত্র অচল হলে বুঝা যায় কত ধানে কত চাল অথবা কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে গড়ায়। স্রষ্টার খেলায় দেখা যায় যদি কেউ অন্যায় করে ঘরে ফেরার আগেই জানতে পারে বা দেখতে পায় যে অনুরূপ অনায় তার প্রতি অপর কেহ করে ফেলেছে শর্ত হচ্ছে Terms appointed সময় নির্দিষ্ট করা। ইতিহাসের অনেক কাহিনী দেয়া আছে যা আমরা বুঝতে চাইনা এবং মৌলভীদের দায়িত্ব বলে মনে করি ৯। এখানেও ধনী হওয়ার কারণে বদলে গেছে। ২৫০/৩০০ বৎসর পূর্বে ইংরেজরা মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষা এবং সাধারন শিক্ষা দুইটি ভাগে ভাগ করে দিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি করেছে যে কে যে কার লোক তা আর বলার উপায় নেই। যেখানে বিনা কারণে একটি লোককে হত্যা করার অনুমতি নেই, সেখানে তাদের খেতাব জঙ্গী, তালেবান নাম দিয়ে বিভক্ত জাতি আল্লাহর রশি ছেড়ে দিয়ে অন্ধকারে হাবু ডুবু খাচ্ছে এ যেন সবই আছে অথচ কিছুই নেই এর মত, বিদ্যাহীন মোড়ল গায়ের জোরে গ্রাম চষে বেড়াচ্ছে। কিন্তু শরীর উদলা হয়ে আছে বুদ্ধির অভাবে আমরা চির দিন গোলাম হয়েই থাকবো, অথবা মীরজাফর; সিরাজউদ্দৌলা হবার কোন লক্ষণ, চিন্তা চেতনা আমাদের মধ্যে নেই। বঙ্গবীর দু:খ করে বলে থাকেন দেশ স্বাধীন না হলে সেক্রেটারি না হয়ে পিয়ন হয়ে ধন্য হতে হত। বিদ্যার কোন বিকল্প নেই চারিদিকে জ্ঞানের প্রতিযোগিতায় মায়ানমার ও আমাদের পিছনের সারিতে ফেলে দিচ্ছে আরও কঠিন উদাহরণ দিলাম না, কানা মনে মনেই জানা। তবে বাঙালির আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য নেই কপটতা, চরিত্রের দৃঢ়তা।
কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
- প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।