‘বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ও নারী অধিকার আন্দোলন’ নামক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
গতকাল ১৫ই জুন, ২০১৯ (শনিবার) বিকেল ৪টায় রাজধানীর বনানীস্থ বিসিএফসি হলরুমে ‘বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ও নারী অধিকার আন্দোলন’ নামক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশিষ্ট সাংবাদিক রেহানা সালাম এর সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আম্বেদকর সোসাইটি-বাংলাদেশ এর সভাপতি এম. দেলওয়ার হোসেন।
মতবিনিময় সভাশেষে রেহেনা সালামকে আহবায়ক, আফরোজা খান, খালেদা ফেরদৌস ও নাজনীন সুলতানা লুনাকে যুগ্ম আহবায়ক এবং নাসরিন সুলতানাকে সদস্য সচিব করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সভায় উপস্থিত নারীনেত্রী ও সংগঠকদের উক্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় বক্তাগণ বিশেষ করে কিশোরী ও নারীদের অধিকার সুরক্ষা এবং বাল্যবিবাহ রোধকল্পে করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। বক্তাগণ বলেন, “বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী কিন্তু আজও বাংলাদেশের নারী সামাজিক এবং পারিবারিক ক্ষেত্রে অর্ধ মানুষ হিসেবে ক্রমাগত শোষিত এবং নির্যাতিত হচ্ছেন। সংবিধান বর্ণিত নারীর অধিকারসমূহ কুসংস্কার ও পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার ফলে আজও অর্জিত হয়নি। পরিবারে কন্যা সন্তান অনাদর অবহেলা এবং উদাসিনতার শিকার হওয়ার ফলে শারীরিক ও মানসিকভাবে নানা রোগ এবং উদাসীনতা আত্মবিশ্বাসহীনতায় আক্রান্ত হয়ে এক শক্তিহীন জনগোষ্ঠীতে পরিণত হচ্ছে। আমাদের রাষ্ট্র কাঠামো গণতান্ত্রিক হলেও নারীবান্ধব নয়। ফলে নারীর কল্যাণমূলক উদ্যোগ ও আইনসমূহ আজও সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়িত হয় নি।”
বক্তাগণ বলেন, “আমরা মনে করি এ অবস্থার এবং মানসিকতার পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে এই দেশের সচেতন, শিক্ষিত, আত্মবিশ্বাসী নারীদের এগিয়ে আসতে হবে। ভবিষ্যৎ নারীদের সর্বাত্মক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে সমাজের আলোকপ্রাপ্ত নারীদের অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় নিজ বিবেক এবং ইতিহাসের দরবারে আমরা ভবিষ্যৎ নারীদের কাছে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হবো। এ প্রসঙ্গে আমরা মনে করি অধিকার অর্জনের পাশাপাশি নারীর সুরক্ষা উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। বিশেষ করে এদেশে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশী। এর কারণ এই দেশে সাবালক হওয়ার আগেই অপরিণত শরীর ও মনের বালিকা এবং কিশোরীদের বিবাহ দেওয়া হয়।
ফলে, সময়ের আগেই অপরিণত শরীরে বালিকা কিংবা কিশোরীটি গর্ভধারণ করে। যা তাকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আমাদের দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পাত্রীর বয়স ১৮ বছর এবং পাত্রের বয়স ২১ হওয়া বাধ্যতামূলক কিন্তু বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই আইন মানা হয় না।
আমরা মনে করি এর বিরুদ্ধে সারা দেশে ব্যপক গণসচেতনতা তৈরী করা প্রয়োজন। পাশাপাশি বালিকা ও কিশোরীদের বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী করে তোলার লক্ষে তাদের যাবতীয় সাহায্য সহযোগীতা, আশ্রয়, কর্মসংস্থান ও আইনী সহায়তা প্রদান করতে হবে। তবেই আগামী দিনগুলো এই সমাজে নারী আপন মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হবে। কুসংস্কার মুক্ত হবে এবং দেশের মূল কর্মপ্রবাহে নিজেদের অবস্থান মজবুত করবে।”
বার্তা প্রেরক-শিপন রবিদাস প্রাণকৃষ্ণ