বিএনপির যেসব নেতার ভোটের লড়াই অনিশ্চিত!
আইন-আদালত ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত কোনও আসামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ পর্যেবেক্ষণে এ রায় দেন। আর এই রায়ের ফলে বিএনপির একাধিক নেতার আবেদন খারিজ হয়ে গেছে।
তারা হলেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউলাহ আমান, বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়া, সাবেক সংসদ সদস্য ও ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ মো. মশিউর রহমান এবং বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আব্দুল ওহাব।
আজ হাইকোর্ট এক রায়ে বলেছেন, নিম্ন আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে উচ্চ আদালতে তার সাজা স্থগিত বা জামিন হলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন।
দুর্নীতির দায়ে বিচারিক আদালতের দেয়া দণ্ড ও সাজা (কনভিকশন অ্যান্ড সেন্টেন্স) স্থগিত চেয়ে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানসহ বিএনপির পাঁচ নেতার করা আবেদন খারিজের রায়ে আদালত এ আদেশ দেন।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল বা স্থগিত করে তাকে জামিন দেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন দুটি দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত, সাজা ভোগ বাতিল ও জামিন চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। আর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় উচ্চ আদালত সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। ফলে দলের চেয়ারপারনের নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়াও অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
এদিকে হাইকোর্টের দেয়া এ রায়কে ‘অগ্রহণযোগ্য ও সরকারের ইচ্ছের প্রতিফলন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রায়ের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘এ রায় সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন।’
নির্বাচন থেকে খালেদা জিয়াকে দূরে রাখতেই সরকারের ইচ্ছায় আদালত এ রায় দিয়েছে বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টকে প্রতিহত করার জন্যই সরকারের ইচ্ছায় এ রায় দেয়া হয়েছে।’
তবে অতীতেও বিচারিক আদালতে দণ্ডিত হওয়ার পর আপিল করে সংসদ সদস্য পদ বহাল থাকার নজির আছে। দুর্নীতির মামলায় ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি আদালত ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীকে ১৩ বছর কারাদণ্ড দেন। আর সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর সরকারদলীয় সংসদ আবদুর রহমান বদির তিন বছর কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত।