বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী
সম্পাদকীয় ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান কে এম ওবায়দুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৭ সালের ২১ মার্চ ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ১৯৪০ সালের ৫ মে গোপালগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া গ্রামের খোন্দকার পরিবারের সন্তান কে এম ওবায়দুর রহমান। তাঁর পিতার নাম মরহুম খন্দকার আতিকুর রহমান ও মাতা রাবেয়া বেগম। ছাত্রজীবনে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৫২ সালে অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনসভায় যোগদান করতে এসে তিনি গ্রেফতার হন। ১৯৬২ সালে আইয়ুববিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ওবায়দুর। ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২-৬৩ সালে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিক্ষোভ প্রদর্শনের অভিযোগে পাঁচ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ওবায়দুর রহমান পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে তিনি নিজেও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এপ্রিল মাসে পাকিস্তানি সৈন্যরা ফরিদপুর পুনর্দখল করলে ওবায়দুর রহমান ভারতে চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতের পুরুলিয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পলিটিক্যাল মোটিভেটর এবং পরে কলকাতায় আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
ওবায়দুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনে (১৯৭৩) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭৩-৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও তার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
১৯৭৮ সালে ওবায়দুর বিএনপিতে যোগ দেন ও ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি প্রথমে মৎস্য ও পশুপালন এবং পরে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বিএনপির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে কারাগারে থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী প্রার্থী সাজেদা চৌধুরীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালের ২১ মার্চ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনসহ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও পরে রাজনৈতিক কারণে তিনি ১০ বার মোট সাড়ে ১৩ বছর কারাবরণ করেছেন। ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি জেলহত্যা মামলায় সাড়ে তিন বছর কারাভোগ করেন।