বিএনপি প্রার্থীর গাড়িবহরে হামলাকারীর পরিচয় মিলেছে
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে বিএনপি প্রার্থী জিএম সিরাজের গাড়িবহরে হামলাকারীর পরিচয় মিলেছে। বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ হলে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবির দৃশ্য অনুয়ায়ী, বিএনপি প্রার্থী জিএম সিরাজের লাল রঙয়ের গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন ধুনট পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক পশ্চিম ভারনশাহী গ্রামের গোলাম হোসেন মাস্টারের ছেলে বিপুল আহম্মেদ।
হামলার সময় বিপুলের গায়ে লাল ও কালো রঙয়ের জ্যাকেট এবং হাতে হকিস্টিক ছিল। তার পাশে লাল রঙয়ের গেঞ্জি পরা কোদাল হাতে গাড়ি ভাঙচুরে অংশ নিয়েছেন পৌর ছাত্রলীগের সদস্য পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের আজিবর মল্লিকের ছেলে ইমন হোসেন। বিপুল হোসেনের ডান পাশে ছাই রঙয়ের গেঞ্জি পরা হকিস্টিক হাতে গাড়ি ভাঙচুর করছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ধুনট সদরপাড়ার আব্দুল বারিক স্বর্ণকারের ছেলে মাহমুদ হাসান রাসেল।
পাশাপাশি একই স্থানে গাড়ি ভাঙচুরের সময় রাস্তার পাশ থেকে ইট-পাটকেল ছুড়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ধুনট সদরপাড়ার আজির প্রামাণিকের ছেলে সুলতান মাহমুদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য মুরাদ হোসেনের বাড়িতে সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অগ্নিসংযোগ করে। মঙ্গলবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ওই বাড়ি পরিদর্শনে যাওয়ার সময় বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী জিএম সিরাজের গাড়িবহর ধুনট শহরের কলাপট্টি এলাকায় পৌঁছালে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়।
এ ভাঙচুরের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বিপুল, ইমন, রাসেল ও সুলতান মাহমুদ। এদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী অংশ নেয়।
তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে বিএনপি প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখে তাদের দলীয় ও স্থানীয় পরিচয় মিলেছে। প্রমাণ মিলেছে তারা সবাই ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার এ হামলার ঘটনা অস্বীকার করলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, সেখানে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা সংঘর্ষ ঠেকানোর চেষ্টা করেছি। সেখানে আমরা কোনো হামলা করিনি। তবে আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম।
এ বিষয়ে ধুনট পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক বিপুল আহম্মেদ বলেন, আমি সেখানে গিয়েছিলাম ঠিক আছে। আমরা বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ঠেকানোর চেষ্টা করেছি। ছবিতে লাঠি হাতে যাকে যাচ্ছে সে আমার মতো একই চেহারার অন্য কেউ হতে পারে।
ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মহসীন আলম বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের বিরোধ থেকে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে সেখানে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীরা গেলেও যেতে পারে। তবে হামলার সময় অনেক উৎসুক জনতা ছিল।
বিএনপি প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তারা আমার গাড়ি ভাঙচুর করেছে, মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে, নেতাকর্মীদের আহত করেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবিই তারই প্রমাণ। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ধুনট থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুকুল ইসলাম বলেন, যুবদল নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় এখনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।সূত্র-জাগোনিউজ।