কাতার সম্পর্কে বিস্ময়কর ১১ তথ্য
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার এখন বিশ্ব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন প্রায় অর্ধডজন প্রতিবেশী দেশ কাতারের সঙ্গে তাদের সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এতে বেশ বিপাকে পড়েছে ছোট দেশ কাতার।
আগামী ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক কাতার। দেশটি সম্পর্কে আরো কিছু তথ্যে আপনি বিস্ময় বনে যাবেন। নিচে তেমনই কয়েকটি তথ্য তুলে ধরা হলো;
১. কাতারে জনসংখ্যায় নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি। দেশটির মোট জনসংখ্যা ২৫ লাখের মতো। কিন্তু এর মধ্যে নারীর সংখ্যা সাত লাখের কম। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাতারে হঠাৎ করে জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
২০০৩ সালে দেশটিতে মোট জনসংখ্যা ছিল সাত লাখের নিচে। কিন্তু ২০১৬ সালে মোট জনসংখ্যা হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ। অভিবাসী শ্রমিকদের দ্বারা কাতারে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। গত ১০ বছরে বিপুল পরিমাণে বিদেশি শ্রমিক কাতারে এসেছে। এদের বেশিরভাগই যুবক এবং পুরুষ। ফলে মোট জনসংখ্যায় নারী-পুরুষ ভারসাম্য নেই।
২. গত এক দশকে লন্ডনে প্রচুর সম্পদ কিনেছে কাতার। কয়েক মাস আগে কাতারের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, যুক্তরাজ্যে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৫ থেকে ৫১ বিলিয়ন ডলারের মতো। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আরো পাঁচ বিলিয়ন পাউন্ডের মতো সম্পদ ক্রয়ের ইচ্ছা আছে তাদের।
৩. পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মাথাপিছু আয়ের দেশ কাতার। ছোট এ দেশটিতে তেল ও গ্যাসের বিশাল মজুতের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এক হিসাবে দেখা যায়, কাতারে মাথাপিছু আয় প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮০ ডলার।
কাতারের পরে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইউরোপের দেশ লুক্সেমবার্গ। তাদের মাথাপিছু আয় কাতারের চেয়ে ২০ হাজার ডলার কম। তবে কাতারের সম্পদ বণ্টন বেশ অসামঞ্জস্য। দেশটির সাবেক আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানির সম্পদের পরিমাণ ২.৪ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু কাতারে একজন অভিবাসী শ্রমিকের মাসিক আয় ৩৫০ ডলার।
৪. কাতার একটি রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেশটি শিল্পকলার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে।
দেশটি নামী-দামী বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। কাতার আমিরের বোন চিত্রকর্মের জন্য বছরে এক বিলিয়ন ডলারের মতো ব্যয় করেছে বলে জানা যায়।
রাজধানী দোহায় ইসলামিক আর্ট জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রায় ১৪০০ বছরের নানা ধরনের চিত্রকর্ম এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে।
৫. শিল্পকর্মের প্রতি কাতারের আগ্রহ জাদুঘর থেকে বিস্তৃত হয়ে খোলা জায়গায় এসেছে। যারা দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়েছেন তাদের চোখে বিশাল আকৃতির একটি ভাল্লুকের শিল্পকর্ম চোখে পড়েছে নিশ্চয়ই।
প্রায় এক দশক আগে সুইজারল্যান্ডের একজন ভাস্করের তৈরি এ ভাস্কর্যটি ব্রোঞ্জের তৈরি এবং এর ওজন প্রায় ২০ টন।
২০১১ সালে নিউইয়র্কে এক নিলাম থেকে প্রায় সাত মিলিয়ন ডলার খরচ করে এ ভাস্কর্যটি ক্রয় করে কাতার সরকার।
৬. বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কাতারের রাজধানী দোহাতে তাদের ক্যাম্পাস স্থাপন করেছে। বিশ্বজুড়ে গবেষণা কাজে বিপুল পরিমাণ ফান্ড দিচ্ছে ‘কাতার ফাউন্ডেশান’।
৭. বিশ্বে ইসলামপন্থীদের প্রথম মানসম্পন্ন টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরা কিন্তু কাতারের। প্রতিষ্ঠানটির করা সর্বশেষ ‘ক্রুসেড সিরিজটা’ বিশ্বে আলোড়ন ফেলেছে। এ ছাড়া খেলাধুলার জনপ্রিয় চ্যানেল ‘বিএন’ও তাদের।
৮. কাতার অত্যন্ত গোছালো দেশ। দেশটির রাজধানী দোহা চিত্রপটের মতো। অথচ দেশটির বড় একটি অংশ মরুভূমি। প্রত্যেক শীতে আল সাহানিয়া মরুভূমিতে উড়ের রেস অনুষ্ঠিত হয়।
৯. কাতারে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি শুক্র ও শনিবার। শুক্রবার জুমা উপলক্ষে ভোর থেকে দেশটিতে কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলা হয় না। বাদ আসর এসব প্রতিষ্ঠান খোলা হয়।
১০. কাতারের আয়তন ১১ হাজার ৪৩৭ বর্গকিলোমিটার। দেশটির ২৫ লাখ মানুষের ৯০ শতাংশই বিদেশি। দেশটি প্রায় ৫৫ বছর ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থেকে ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়।
১১. ফুটবল ক্লাবগুলোর মধ্যে পিএসজি বেশ জনপ্রিয়। এই ক্লাবটির মালিক কাতার।
সূত্র: বিবিসি ও আরব নিউজ