বৃক্ষ শিশু। হাত পায়ে গাছের শিকড়। চিকিৎসা সমস্যায় ভুগছে হতদরিদ্র রিপন।
সেলিনা জাহান প্রিয়াঃ- ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণীর হতদরিদ্র এক স্কুল ছাত্র নিউরন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাত-পায়ে গুটি ও গাছের শিকড় সমস্যায় ভুগছে। দীর্ঘদিন দিন ধরে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা করেও এ রোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না রিপন । অর্থের অভাবে অসুস্থ সন্তানের উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছেনা রিপনের বাবা মহেন্দ্র ঘরামী ।
জানা গেছে পীরগঞ্জ উপজেলার ৮নং দৌলতপুর ইউনিয়নের মহেন্দ্র’র পুত্র রিপনের হাত পায়ে জন্মের তিন মাস পর থেকেই গুটি ও গাছের শিকড়ের মত সমস্যা দেখা দেয়। স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা করেও এ রোগ নিরাময় করা সম্ভব হয়নি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে রিপনের হাতে পায়ে এ সমস্যা দিন দিন বাড়ছে ।
বর্তমানে ৭ বছর বয়সের রিপনকে কোন ভাবেই সুস্থ করতে পারেননি স্থানীয় চিকিৎসকরা। স্থানীয় চিকিৎসকরা ঢাকায় বা বিদেশে রিপনের উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিলেও পেশায় জুতা সেলাইয়ের কাজে নিয়োজিত বাবা মহেন্দ্র রায় ও অন্যের বাড়ীতে ঝিঁ এর কাজ করা মা গোলাপী’র পক্ষে কোন ভাবেই শিশু পুত্র রিপনের উন্নত চিকিৎসা করানো হচ্ছে না। মহেন্দ্র রায় এর তিন সন্তানের মধ্যে রিপন সবার ছোট। বর্তমাসে কেটগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেীণর ছাত্র রিপন ।
এ বিষয়ে কথা হলে রিপন বলে “আমার চলাফেরা করতে খুবই সমস্যা হয়। নিজে নিজে স্নান করতে পারি না। নিজ হাত দিয়ে ভাত খেতে পারি না। বন্ধুদের সাথে খেলতে ও নিয়মিত স্কুলে যেতেও পারি না। রিপনের বাবা মহেন্দ্র রায় বলেন “ ডাক্তাররা বইলছে ঢাকাত বা ভারত লেগান। কিন্তু হামার তো অর্থ নাই, কেমনে চিকিৎসা করা-ম ”।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হুমায়ুন কবির বলেন, ধারণা করা হয় এটা নিউরন সংক্রান্ত রোগ। এ জাতীয় রোগীদের হাত-পা গাছের শেকড়ের মতো হয়। গবেষকরা এ রোগের কারণ জানতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কারণ জানা যায়নি।
বিরল রোগে আক্রন্ত রিপনের স্বপ্ন, সে পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হতে চায়। কিন্তু রোগের ভারে সে তার স্বপ্নগুলো হারাতে বসেছে। অসুস্থ সন্তানের উন্নত চিকিৎসার জন্য যে কোন পর্যায়ের সাহায্য ও সহযোগীতা কামনা করেছেন রিপনের বাবা মহেন্দ্র ঘরামী ।