মশার প্রজনন ক্ষমতা রোহিঙ্গাদের মতোই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
এডিস মশার বংশবিস্তার প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘মশার প্রজনন ক্ষমতা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মতোই। এদের প্রজনন ক্ষমতা অনেক বেশি। এডিস মশা বৃদ্ধির কারণেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজে আয়োজিত ‘ডেঙ্গু : চেঞ্জিং ট্রেন্ডস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ ও সোসাইটি অব মেডিসিন যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন এত ডেঙ্গু কেন? গত বছর এত ছিল না, তার আগের বছর এত ছিল না। আমাদের দেশে হঠাৎ করে এত বেশি কেন? একটা সিম্পল উত্তর, আমার পক্ষ থেকে। সেটা হলো মশা বেশি। মশা বেশি কেন? বাড়ছে কেন? যেহেতু প্রোডাকশন বেশি। যেভাবে রোহিঙ্গা পপুলেশন বাড়ে আমাদের দেশে মসকিউটো (মশা) পপুলেশন বেড়ে যাচ্ছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসার কোনো অভাব নাই। একটি রোগীও চিকিৎসার বাইরে নাই। একটি রোগীও বিনা চিকিৎসায় ফেরত যায় নাই।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রপারলি যদি নাই হতো তাহলে মাত্র আটটা মৃত্যু হতো না। তাহলে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মতো শত শত মৃত্যু হতো। কিন্তু বাংলাদেশে তা হয়নি। আপনাদের, সাংবাদিক ভাইদের জানতে হবে যে আমাদের দেশে প্রতিদিন অ্যাক্সিডেন্টেও ১৫ জন মারা যায়। ১৫-২০ জন রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়। প্রায় ১০ জন রোজ সাপের কামড়ে মারা যায়। আর আমাদের এ পর্যন্ত এ কয়েকমাসে মাত্র আটজন ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুবরণ করেছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, এডিস মশা খুব দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। এরা সাধারণত বাসাবাড়িতেই বেশি জন্ম নেয়। আমরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। কিন্তু এ ধরনের মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। আমরা আশা করছি সিটি করপোরেশন এ মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে ফিলিপাইনে প্রায় ৫০০ জন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ায় প্রায় ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে গত জানুয়ারি থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সাত হাজার ৭৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হলেও পাঁচ হাজার ৯৩৮ জন ডেঙ্গু রোগীই দেশের সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেছে। এর মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে দেশে মাত্র আটজনের প্রাণহানি ঘটেছে। যদিও প্রতিদিনই নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে, একই সাথে প্রতিদিনই প্রচুর সংখ্যক মানুষ সুচিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে যাচ্ছে। সুতরাং ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই।’
অধিবেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক মো. বিল্লাল আলম, মহাসচিব অধ্যাপক আহমেদুল কবির প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। উৎস-এনটিভি।