দেশেই ফলবে বেঁটে প্রজাতির ‘ম্যাজিক নারিকেল’
চারা লাগানোর দুই বছর পরই নারিকেল ধরা শুরু হবে। নারিকেল ঝুলবে মাটিতে। গাছে না উঠেই হাত দিয়ে শিশুরাও নারিকেল পাড়তে পারবে। এমনকি দেশি জাতের চেয়ে এই নারিকেলের ফলন হবে চার গুণ বেশি। সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয় ভিয়েতনাম থেকে এই ‘ম্যাজিক নারিকেল’-এর ২০ হাজার চারা আমদানি করেছে। চলতি বছর আরো ৭৫ হাজার চারা আমদানি করা হবে। এই চারা দক্ষিণাঞ্চলের ১৮টি জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে রোপণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের জন্য ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে নতুন একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এই প্রকল্পের অধীন প্রথম ধাপে ভিয়েতনাম থেকে ২০ হাজার নারিকেলের চারা আনা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আরো সাত লাখ ৫০ হাজার চারা আনা হবে।
প্রকল্প পরিচালক মেহেদী মাসুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বছরে দেশি একটি গাছে ৫০ থেকে ৬০টি নারিকেল ধরলেও আমদানিকৃত এই গাছে গড়ে ২০০টি নারিকেল ধরবে। বেঁটে প্রজাতি হওয়ার কারণে ঝড়ে এই গাছ ভাঙার কোনো ভয় নেই। শুধু নারিকেল উত্পাদনই নয়, এই জাতটি নারিকেলজাত শিল্পেরও সম্প্রসারণ ঘটাবে বলে জানান তিনি।
সূত্র আরো জানায় এ দেশে থাই পেয়ারার প্রবক্তা কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান ভিয়েতনামে গিয়ে সিয়াম গ্রিন কোকোনাট ও সিয়াম গ্লু কোকোনাট নামে উচ্চ ফলনশীল নারিকেলের দুটি জাত শনাক্ত করেন। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর নির্দেশে ভিয়েতনামের মাঠ-ঘাট চষে নিবিড় অনুসন্ধানের পর ওই দুটি উচ্চ ফলনশীল নারিকেলের জাত শনাক্ত করেন তিনি। এর বৈশিষ্ট্য হলো—নারিকেল থেকেই চারা হবে। দুই থেকে আড়াই বছরে গাছে নারিকেল ফলবে। প্রতিটি ডাব থেকে ৩০০ মিলিলিটার পানি পাওয়া যাবে। এবং পানি খুবই মিষ্টি এবং সুগন্ধিযুক্ত। বেঁটে প্রজাতির হওয়ার কারণে গাছ থেকে নারিকেল পাড়াও সহজ হবে।
মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে এখনো বেঁটে প্রজাতির নারিকলের কোনো জাত নেই। এই ম্যাজিক নারিকেল জাতটির খবর পেয়ে অনেকেই আমাদের কাছে চারা কেনার জন্য আসছেন। আমরা কৃষক পর্যায়ে আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে চারা বিক্রি করছি। নিজেরাও চারা লাগিয়ে পরবর্তী সময়ে চারা তৈরি করব।’