যে ৫ কারণে ঐশীর সাজা কমলো
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের মৃত্যুদণ্ড সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। পাঁচটি বিষয় বিবেচনায় ঐশীর সাজা কমানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, আমরা এ মামলার রায় ঘোষণার পূর্বে পাঁচটি বিষয় বিবেচনায় নিয়েছি। তা হলো-
১ . ঐশী বংশগতভাবে তার নানি ও মামার মতো অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত ছিল।
২ . ঐশীর বয়স (বর্তমান বয়স ১৯) কম। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মায়ের আদর-যত্নের অভাবে ঐশী মানসিক বিকারগ্রস্থ ছিল।
৩ . ঐশী মাদকাসক্ত ছিল।
৪ . হত্যার দু’দিন পরই ঐশী আত্মসমর্পণ করে।
৫ . ঐশীর পরিবার-পরিজনদের মধ্যে কারো ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড নেই।
এ পাঁচটি বৈষয়িক বিষয় বিবেচনা করে তার সাজা কমানো হয়েছে।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও নিজামুল হক নিজাম। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি। গত ৭ মে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মামলাটি যেকোনো দিন রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়।
এর আগে স্ত্রীসহ পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলায় তাদের একমাত্র মেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমানের মামলাটি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন ঐশী। পরে ১২ মার্চ এ মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজ বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মা-বাবা খুন হওয়ার পর পালিয়ে যান ঐশী। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ১৭ আগস্ট ঐশী রহমান রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। এরপর ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন ঐশী।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের মাতুব্বর আসামিদের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিশোর আইনে এবং ঐশীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অরেকটি চার্জশিট দাখিল করেন। সুমির মামলার বিচার কার্যক্রম কিশোর আদালতে পরিচালনা হচ্ছে। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধান আসামি ঐশী রহমানকে ডাবল মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন আদালত। অপর দুই আসামি ঐশীর বন্ধু রনিকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও জনিকে খালাস দেওয়া হয়।