মধুপুরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করলেন আ: কদ্দুস
মো: লিটন সরকার, মধুপুর(টাংগাইল), বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম
সারা দিন যায় খুব কষ্ট আর ব্যস্ত সময়ের মাঝে, খাবারের সময়টাও কম। আজ প্রায় ৫ বছর ধরে দোকানদারী করে আসছি। কথা গুলো বলছিলেন তরুন উদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধি মো: আব্দুল কদ্দুস।
ছোট থেকে বেড়ে ওঠা টাংগাইলের মধুপুর উপজেলার অরখোলা ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামে। সংসারের অভাব অনটনের কারনে লেখা পড়া করতে পারেনি। নেমে যায় জীবন যুদ্ধে। বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র থেকে নিজের নাম স্বাক্ষর, হিসাব টুকু অর্জন করেন।
ভ্যান ও দিন মুজুরী ছিল তার উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম। ২০০৯ সালে শুরু করেন নতুন জীবন। তাদের মাঝে একে একে দুই মেয়ে সন্তানে আগমন ঘটে। সামান্য দিন মুজুর ও ভ্যান চালিয়ে স্ত্রী, ২ সন্তান সহ ও বাবা-মার খরচ বহন করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। বাস্তবতা ছিল তার কাছে নিছির্দ্র অন্ধকার।
তিনি জানান, তখন আল্লাহ রহমতে আরেক জন তরুন ব্যবসায়ী কাবিল হোসেন সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে তার নিজের মনোহারী দোকানে কর্মচারী হিসেবে রাখেন। তার পর থেকে ভালোই চলছিলো কদ্দুসের সংসার। ২০১৪ সালের ৪ এপ্রিল মর্মান্তীক এক সড়ক দোর্ঘটনায় আহত হয়ে ৫ মাস চিকিতসা পর ডান পা হাড়ান।
গ্রামবসী, আত্বীয় স্বজন ও বন্ধদের সার্বিক ও আর্থিক সহযোগীতায় এক পা হারিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেন। তার এই অবস্থায় দোকানদার কারিল হোসেন নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করেন এবং সুস্থ্য আসার পর কদ্দুসকে আবারো কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেন। তার পর এক পা দিয়েই শুরু করেন জীবন যোদ্ধ। শুরু হয় নতুন এক অধ্যায়।
এভাবে দিন, মাস, যায় ঘুরে আসে বছর। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বদলে যায় তার কর্মের বুদ্ধি মত্তা। নিজে নিজে কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নেয় কদ্দুস। যেই ভাবনা সেই কাজ, ৫-৬ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মাত্র ২০ হাজার টাকা পুজি নিয়ে ৭/৮ মাসে উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে শান্তির বাজার মোড়ে মনোহারী দোকান দেন।
এলাকাবসী থেকে জানা যায়, বর্তমানে জাঙ্গালিয়া গ্রামে শান্তির বাজার মোড়ে আ: কদ্দুসের দোকান ভালো চলছে।
আব্দুল কদ্দুস জানান, স্ত্রী , ২ মেয়ে নিয়ে সুখে আছে। আগের চেয়ে তারা বর্তমানে ভালো চলছে। ২ মেয়েকেই ভালো একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করাচ্ছে। তাই সে এখন অনেকটাই সাবলম্বী।
তবে তার অন্তরের মধ্যে এই ব্যবসা কে প্রসার ঘটানোর জন্য প্রতি দিন স্বপ্ন বীজ বুনে যাচ্ছেন। ইচ্ছা বড় একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দারকরানো। তার মতো আরো অনেকেই কাজ করবে। কাজ করে তারা তাদের সংসার থেকে দুর করবে সেই ভয়ানক অভাব নামক জিনিসটা।
তিনি আরো বলেন, অসুস্থ্য সময় আমাদের ওয়ার্ড মেম্বার বিভিন্ন আশা দিয়েও পরবর্তিতে কোন খোজ খবর নেইনি। আমাকে সরকারী প্রতিবন্ধি কার্ড করে দিতে চেয়েও দেয় নাই।
কদ্দুস তার গ্রামবাসী, আত্বীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের ভালো বাসা আর দোয়া নিয়া বেচে থাকতে চাই।