চলন্ত বাসে রুপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ১২ ফেব্রুয়ারি
আইন-আদালত ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
আজ সোমবার আদালতে সকল সাক্ষী ও যুক্তিতর্ক সমাপ্ত শেষে টাঙ্গাইলের মধুপুরে আলোচিত চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রুপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলা রায়ের জন্য আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।
টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া সোমবার বেলা ১১টায় এই চাঞ্চল্যকর মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন। পরে আইনগত যুক্তিতর্ক শুরু হয়। প্রথমে বাদীপক্ষ এবং পরে আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। শেষে বিচারক পূর্বের সকল কার্যক্রম সমাপ্ত করে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত ৩ জানুয়ারি বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২০ দিনের মধ্যে এই মামলায় জব্দ তালিকা, সুরতাহাল রিপোর্ট, ৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৭ সাক্ষীর আদালতে সাক্ষ্য ও জেরা সমাপ্ত হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পি.পি. এড. নাছিমুল আক্তার এবং তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, অ্যাডভোকেট শামীম চৌধুরী দয়াল ও অ্যাডভোকেট দেলুয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালের বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্ষণ করে। পরে তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ওই রাতেই তার লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
রুপার ভাই ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় এসে লাশের ছবি দেখে রুপাকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫) এবং সহকারি শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীরকে (১৯) গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের কাছে তারা রুপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে ২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে আছেন।
৩১ আগস্ট রুপার লাশ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।