আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস: প্রধান অতিথির বিলম্বের কারণে ঘণ্টাব্যাপী শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হলো
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
০৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সারাদেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে র্যালির আয়োজন করা হয়।
ব্যতিক্রম ছিল না পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে (সকাল সোয়া ১০ টা) র্যালির জন্য শিক্ষার্থীরা উপজেলা চত্বরে উপস্থিত হলেও র্যালি শুরু করা যায়নি। কারণ র্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে দেবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতির উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি।
উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে এই সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছুটা বিশৃংখলা দেখা দেয়।
আনুমানিক সোয়া ১১ টায় উপজেলা চেয়ারম্যান উপস্থিত হলে র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি উপজেলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিজয় চত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়।
এরপরও থেমে থাকেনি শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা। উপজেলা প্রশাসনিক ভবনে অতিথিরা দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড়িয়ে রেখে আলোচনা পর্ব শুরু হয়। আলোচনা পর্ব অব্যাহত থাকে আরও আধা ঘন্টা।
এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা প্রশাসনিক অফিসে ব্যক্তিগত কাজে আসা এক অভিভাবকের সাথে। তিনি বলেন, এভাবে রোদে দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করানোর পর র্যালি শেষ করে পুনরায় রোদে দাঁড়িয়ে রেখে অতিথিদের বক্তব্য প্রদানে আমি বিস্মিত। সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে যেহেতু সরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হয়েছে তাই এভাবে শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড়িয়ে না রেখে বড় উপজেলা হলরুমে আলোচনা সভা সম্পন্ন করা উচিত ছিল।
দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রাজু বলেন, একজন শিক্ষকই পারেন শিক্ষার্থীদের মাঝে সাক্ষরতার বিষয়গুলো ভালোভাবে উপস্থাপন করতে। সেক্ষেত্রে শ্রেণিকক্ষই হচ্ছে এর উৎকৃষ্ট স্থান। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের বাইরে এনে রোদে র্যালি করিয়ে ও রোদে দাঁড়িয়ে থেকে বক্তব্য শুনতে বাধ্য করায় তাদের মনোযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান শেষ করে শ্রেণিকক্ষে ফিরে গিয়ে মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে।
র্যালিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যয় হাসান এর সাথে কথা হয়। তিনি জানান, এধরনের র্যালিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকার ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে আজকের র্যালিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকার জন্য কোন বিদ্যালয়ে চিঠি প্রদান করা হয়নি। বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে যে র্যালির আয়োজন করা হয় তা সাধারণত উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে সম্পন্ন করা হয়। উপজেলা হলরুমে শিক্ষার্থীদের নিয়ে এধরনের আলোচনা সভার আয়োজন করা যায় কিনা জানতে চাইলে নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যয় হাসান জানান, এই ধরনের কোন সিদ্ধান্ত এখনও আমরা নেই নি। তবে আপনি যেহেতু জানালেন বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে।