আঃলীগের দুুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০, বেশ কিছু দোকান ভাঙচুর!
শরীয়তপুর প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
জেলার নড়িয়ার রাজনগর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হামলায় অন্তত ২০ জনেররও বেশি আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০টি ঘরবাড়ি ও পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে।
এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন তিন শতাধিক এর বেশি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর থেকে আন্ধারমানিক বাজারের দোকানপাটসহ সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ছয় জনকে আটক করেছে নড়িয়া থানা পুলিশ।রোববার এসব ঘটনা ঘটে।এখনও স্বাভাবিক হয় নি ঐ এলাকার জন জীবন ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই গ্রুপের মধ্যে রাতেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন গাজীর সঙ্গে রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেম্বার আবু সিদ্দিক খা এবং একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবু আলম মাদবর গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
এ নিয়ে শনিবার বিকেলে দুই গ্রুপের লোকজনই রাজনগর আন্ধারমানিক বাজারে মহড়া দেয়।
রোববার সকাল সাড়ে ৬টায় হঠাৎ করে এক পক্ষ অপর পক্ষের ঘরবাড়িতে ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালায়।
পুলিশ জানায়, রোববার সকালে নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক বাজর এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখা ও প্রতিষ্ঠা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।তবে হামালর ব্যাপারে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করছে। ককটেল বোমার আঘাতে ও হামলায় আহত হন- আলী আকবর কাজী, রিনা বেগম, রওশনারা বেগম, সম্রাট, সাগর মাদবর, আক্তার হোসেন মীর বহর, শাহিন সরদার, শরিফ মাদবরসহ অন্তত ২০জন ।আহতদেরকে ঢাকা ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে কোন পক্ষ আগে হামলা করেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
এদেকে ককটেল হামলার পর দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। এ সময় অন্তত দুইশ ককটেল বোমার বিস্ফোরণ হয় বলে এলাকাবাসীর দাবি।
এ ঘটনায় আন্ধারমানিক বাজার এলাকাসহ আশে পাশের কয়েকটি গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় হামলাকারীরা আলী আকবর কাজী, সেলিম মালত, শাহিদ মালত, মফিজল মাদবর, দেলোয়ার মীর বহর ও সাত্তার মাদবরের বাড়িঘরসহ ১০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
একই সাথে রাজনগর আন্ধারমানিক বাজারের খলিল মোল্যার তিনটি, মুনসুর মোল্যার একটি ও জমির উদ্দিন মোল্যার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এর পর ওই বাজারের সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।
রাজনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন গাজী বলেন, আমরা ঘুমে থাকা অবস্থায় গোলাম মাওলা মীর বহর, আবু সিদ্দিক খান ও আবু আলম মাদবরের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। এ সময় তারা আমার বাড়িতে গুলি ও ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
রাজনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বর ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু আলম মাদবর বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। চেয়ারম্যানের লোকজনই আমাদের সমর্থকদের বাড়িঘরে ককটেল বামা ফাটিয়ে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর ও মারধর করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইকরাম আলী মিয়া বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর পেয়ে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থাল থেকে ৬ জনকে আটক করার কথা জানায় পুলিশ। তবে আটককৃতদের নাম জানা যায়নি।