সেই মুহূর্তটা
সেই মুহূর্তটা
সেলিনা জাহান প্রিয়া
পুরাতন শাড়ীর ভাঁজে তোমার চিঠিখানা আজ হাতে এলো
মাত্র কুড়িটা বসন্তের পাতা ঝরা সকাল অতীত অত্যয়িত ,
এতোদিন পর সরব হলো মনের আয়নায় তোমার ছেলেমানুষী !
মনের চিলেকোঠায় যে অক্ষরগুলো আমাকে ঘুমাতে দিত না
ব্যাকুল বৃষ্টি হয়ে ঝরে যেত আমার কত অভিমান বর্ষাহীন
আজ যেন আবছা হয়ে উঠেছিলো ধীরে ধীরে তাঁর গন্ধ !
অস্পষ্টতার জলছাপে ঢেকে গিয়েছিলো তোমার সবুজ লেখা
আজ হঠাৎই তা ডাক-চিৎকার করে জেগে উঠলো যেন !
কত যুগের কথা গল্প হয়ে আছে রাত দিনের এই পত্র পল্লবে ।
হৃদয়ের আঙিনা জুড়ে এলোমেলো ঝরা পাতা গুলো কাব্য যেন
বর্ণমালা সাজাতে লাগলো নিরব শব্দে শাড়ীর ভাঁজে ভাঁজে –
হৃদয়ের আঙিনা জুড়ে কান পেতে দিলাম আমি কালের আবর্তে –
মনে হলো,এক টুকরো হীরার আলো ছড়িয়েছে সবুজের বুকে
ডানা ঝাপটাতে গিয়েও থমকে দাঁড়ালো মেঘের আয়নার আড়ালে
হাজার হাজার হলুদ প্রজাপতি আমাকে তোমার কছে নিয়ে যাচ্ছে!
তোমার সবুজ কালির লেখা কথা গুলো এখনও আসে চুপি চুপি –
তবে হাসে না কিছুতেই আর কাদায় না আমাকে সময়ের সাথে !
মাটির সানকিতে পান্তা আর কাঁচা লঙ্কারা মানচিত্র আঁকে –
ভেসে ওঠে কিছু আটপৌরে গল্প আমি চেয়ে দেখি তোমার আঁখি –
খরতাপে পুড়ে খাঁক হয়ে যাওয়া জীবন যুদ্ধের এক সৈনিক
ভালবাসার হলুদ বিকেলেরা উঁকিঝুঁকি দেয় কখনোবা –
প্রলয় ওঠে হৃদয় তরঙ্গে তালপাতার বাঁশির মেঠো সুর
বাজে মিহি সুরে – বুকের ভেতর লালন করি অত্যয়িত জীবন !
পুতুল নাচের বাকহীন পদশব্দ আঁচড় কাটে আজও স্মৃতির জমিনে –
ধূসর থেকে ধূসরতম স্মৃতিগুলোও জেগে উঠতে চায় অরন্যে
আমি মানা করি না – কিন্তু সকালের সূর্য হেলে যায় সন্ধ্যায়
আমি অপেক্ষায় থাকি পথের শব্দ গুনে যাই নীরবে
প্রমান করে দিলে অপেক্ষার যাতনা গুলো কেমন ছিল
কাক ভেজা সময়টা তখন তোমার ছিল অপেক্ষা পালা
সেই চিঠিটা হাতে আসত কলেজ ছুটির সেই মুহূর্তটায় ।