৯০’র আন্দোলন ও হারিয়ে যাওয়া একটি বিজয় দিবস

৯০’র আন্দোলন ও হারিয়ে যাওয়া একটি বিজয় দিবস
-মুখলেছউদ্দিন শাহীন
৯০’র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও সাবেক আহবায়ক , বিপ্লবী ছাত্র সংঘ।

৪ ডিসেম্বর ১৯৯০ তৎকালীন স্বৈরশাসক জেনেরেল এরশাদের পদত্যাগের ঘোষণা ও ৬ই ডিসেম্বর পদত্যাগের মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটেছিল ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ থেকে ডিসেম্বর ৪, ১৯৯০ পর্যন্ত চলা দীর্ঘ ৯ বৎসরের আন্দোলন।

বর্তমান প্রজেন্মর কাছে নীতি বিবর্জিত রাজনীতির কারনে দীর্ঘ ৯ বৎসরের ত্যাগ, মৃত্যু ও সংগ্রামের ইতিহাস আজ অজানা। অথচ রাজনীতিতে একটি প্রচলিত কথা আছে “৯০’র প্রজন্ম”। একটি প্রজন্ম তাঁদের জীবনের সকল কিছুকে উপেক্ষা করতে হয়েছে এই দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনা করতে।

এর শুরুটা ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদ তৎকালীন নির্বাচিত বিএনপি সরকারের রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার এর কাছ থেকে ২৪শে মার্চ রাতের আঁধারে বন্দুকের নলের মুখে বলপূর্বক ক্ষমতা নিয়ে সারা দেশে সামরিক শাসন জারি করে। সংবিধান স্থগিত করে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। নিজেকে চিপ মার্শাল ল এডমিনিস্ট্রেটর ও নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানদের ডেপুটি চিপ মার্শাল ল এডমিনিস্ট্রেটর ঘোষণা করে প্রতিটি জেলায় জেলায় কর্নেল বা লেঃ কর্নেল পদ মর্যাদার অফিসার দিয়ে ডিসট্রিক্ট মার্শাল ল এডমিনিস্ট্রেটর চালু করে। সরকারী – আধা সরকারী সকল জায়গায় সামরিক বাহিনীর অফিসারদের মাধ্যমে কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু করে।

এমতবস্থায় কোন রাজনৈতিক প্রতিবাদ মানেই সামরিক বাহিনীর নির্যাতন। সময়টা আমার জানা নেই কিন্তু শুনেছিলাম দলমত নির্বিশেষে ১৯৮৩ সালের প্রথম দিকে কোন এক সময় ছাত্রদের একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয় আর সেই মিছিলে সামরিক বাহিনী হামলা করে তৎকালীন ছাত্র নেতা শিবলী কাইয়ুমকে প্রথম গ্রেফতার হন। ঠিক তার কিছুদিন পর ১৯৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে গঠিত হয় ডাকসু ও ১৪টি ছাত্র সংগঠনের জোট ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের বাইরে থাকে। তখন ডাকসু ভিপি ছিলেন বাসদ ছাত্রলীগ নেতা আখতারুজ্জামান ও জিএস ছিলেন জিয়াউদ্দিন বাবলু। ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের প্রথম প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। সেই মিছিলের উপর সামরিক জান্তা ট্রাক তুলে দিলে সেলিম – দেলোয়ার নিহত হয়। ১৫ই ফেব্রুয়ারি আবারও প্রতিবাদ মিছিল বের হলে জাফর – জয়নাল – কাঞ্চন – দীপালী সাহা সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়। ১৯৮৪ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে আবারও ছাত্রদের প্রতিবাদ মিছিল বের হলে সামরিক বাহিনী পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হলে হলে ঢুকে ব্যপক নির্যাতন চালায়।

এই সময়কার আন্দোলন সংগ্রামের প্রকৃত বর্ণনা আমি দিতে পারবো না কারন আমি তখন উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে স্পষ্টতই মনে আছে যে ১৯৮৪ সালে ঘরোয়া রাজনীতির সুযোগ দেয়া হয়। মানে শুধু রাজনৈতিক অফিসের অভ্যন্তরে আলোচনা করা যাবে, রাস্তায় বা বাহিরে কোন রাজনৈতিক কার্যকলাপ করা যাবে না। এই সময় গঠিত হয় আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে ১৫ দলীয় জোট (আওয়ামীলীগ, সিপিবি, বাসদ, জাসদ, গণতান্ত্রিক পার্টি, বাকশাল, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল উল্লেখযোগ্য) এবং বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দলীয় জোট (বিএনপি, কাজি জাফরের ইউপিপি, অলি আহাদের ডেমোক্রেটিক লীগ উল্লেখযোগ্য)। গঠিত হয় ১৫ দল ও ৭ দলের লিয়াজো কমিটি। মুলত ১৫টি ছাত্র সংগঠনের উদ্যেগে গঠিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চাপে রাজনৈতিক দলগুলোর এই সমস্ত জোট গড়ে উঠে। এরশাদের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে তখন ঘরোয়া রাজনীতি থাকা অবস্থায় হরতাল আহবান করা হয় । সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালিত হয় । এইভাবে ২/৩ টি হরতাল পালিত হলে আবারও রাজনীতি বন্ধ করে দেয়া হয়।

তখন জেনারেল এরশাদের ডাকে সংলাপের আহবান জানানো হয়। ইতিমধ্যেই ৭ দল থেকে কাজী জাফর, মওদুদ আহমেদ, শাহ্‌ ময়াজ্জেম এরশাদের মন্ত্রী সভায় যোগ দেয়, ১৫ দল থেকে মিজান চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম খান, আনোয়ার জাহিদ মন্ত্রী হয়। ছাত্র নেতাদের মধ্যে ডাকসু জিএস জিয়াউদ্দিন বাবলু, ছাত্রদল নেতা শামসুজ্জামান মিলন মন্ত্রী হয়। ১৯৮৫ সালের দিকে সংলাপ শুরু হয়। সংলাপে কোন সুরাহা হয় না। কাজী জাফর এরশাদের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিলে বিএনপি সংলাপের টেবিল থেকে উঠে চলে আসে। তখন জেনারেল এরশাদ নির্বাচনের ঘোষণা দিলে ১৫ দলের নেত্রী শেখ হাসিনা ১৫০টি ও ৭ দলের নেত্রী খালেদা জিয়া ১৫০টি আসনে নির্বাচনের অংশগ্রহনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। এই কৌশল এ নির্বাচন হলে এরশাদের হার অনিবার্য বিধায় রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্স জারি করে যে ৫টির বেশি আসনে কেউ প্রার্থী হতে পারবে না । তখন দুই জোটের লিয়াজো কমিটি আবারও তুমুল আন্দোলনের ডাক দেয়।

এই সময় সর্বপ্রথম জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সহ ২২টি ছাত্র সংগঠনের জোট গড়ে উঠে এবং সারা দেশে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠে। ১ দিনের বিরতি থেকে ৪৮ ঘণ্টা ও ৪৮ ঘণ্টা হরতাল পালিত হয়। হরতাল শেষে সারা দেশে সকল দল মিলে মশাল মিছিল করে অনির্দিষ্টকালের অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়। সেই দিনই সন্ধ্যায় বিবিসির খবরে বলা হয় ১৫ দল নির্বাচনে অংশ নিবে। উল্লেখ্য জেনারেল এরশাদ ইতিমধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিল। এতে সারা দেশের আন্দোলন হটাত থেমে যায়। ১৫ দল থেকে জাসদ, ২ বাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল বেড়িয়ে আসে। গঠিত হয় ৫ দল। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে নির্বাচনে চলে যায় ৮ দল। বিএনপি’র ৭ দল ও ৫ দল তখনও আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। ৮ দল ঘরে বাইরে আন্দোলনের কৌশল নেয় অর্থাৎ সংসদে ও সংসদের বাইরে আন্দোলন চালিয়ে যায়। ঠিক এই সময় নির্বাচন এ অংশগ্রহণকারী ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, জাতীয় ছাত্রলীগ ছাত্র আন্দোলন থেকে একটু দূরে সরে যায়। এরই মধ্যে ১৯৮৭ সালে আবারও তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠে। গঠিত হয় ৭ দল, ৮ দল ও ৫ দলের লিয়াজো কমিটি। ছাত্র অঙ্গনেও আবারও সবাই একত্রিত হয়। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে ৮ দল সংসদ থেকে পদত্যাগ করে আন্দোলনে যোগ দেয়। তীব্র আন্দোলনের মধ্যে জরুরী অবস্থা জারি করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়।

১৯৮৭’র আন্দোলনেই নিহত হয় গণতন্ত্রের প্রতিক নুর হোসেন এবং ভাঙ্গা হয় সচিবালয়য়ের দেয়াল। ১৯৮৮ সাল থেকে আন্দোলনকে আটকে রাখতে ছাত্র অঙ্গনে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইয়ে দেয়া হয়। সারাদেশের ছাত্ররা ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। ১৯৮৯ সালে দীর্ঘ ১৭ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচন ঘোষণা করা হয়। সমস্যা হচ্ছে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে হলে ছাত্র নেতাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব লাগবে। দীর্ঘ দিন নির্বাচন না হওয়ায় অনেক ছাত্র নেতাই ২/৩ বার করে মাস্টার্স পাশ করে ফেলেছে। তখন প্রতিটি ছাত্র সংগঠন থেকে ৫ টি করে ভর্তির সুযোগ দানের দাবী জানানো হয়। সকল ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে, ভিসি, প্রভিসি, কোষাধ্যক্ষ, সকল হলের প্রভোস্টগন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকগন, বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সিণ্ডিকেটের প্রতিনিধি প্রভৃতি সমন্বয়ে গঠিত হয় “বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদ”। সেখানেই ডাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় আলোচনা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ছাত্র সংগঠন গুলোর দাবী মেনে ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। ১৪ টি ছাত্র সংগঠনের জোট ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ প্যানেল সুলতান – মুস্তাক – নাসির জয়ী হয়। ছাত্রদলের দুদু-রিপন পরিষদও ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। আওয়ামী ছাত্রলীগের সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ভিপি, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি মুস্তাক হোসেন জিএস ও ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদদুজা এজিএস নির্বাচিত হয়। ১৯৮৯ সাল কেটে যায় এরশাদ বিরোধী রুটিন কর্মকাণ্ড দিয়ে।

১৯৯০ সালে আবারও ডাকসু নির্বাচন হয় সেই নির্বাচনে অনেকগুলো প্যানেল হয়। ছাত্রদলের আমান খোকন পরিষদ, ছাত্রলীগের আলম-কামরুল পরিষদ, ৮টি বাম ছাত্র সংগঠনের মুস্তাক-স্বপন পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়নের বাবুল-নাসির পরিষদ, ৩টি ছাত্র সংগঠনের ফয়জুল – শাহীন পরিষদ ইত্যাদি। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে ছাত্রদলের প্যানেল বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়।

এর মাত্র ৩ মাস পর ১০ই অক্টোবর এরশাদ বিরোধী একটি মিছিলে পুলিশের গুলিতে ঢাকা পলিটেকনিক এর ছাত্র জেহাদ নিহত হলে তার লাশ ঢাকা মেডিক্যাল এর মর্গে রাখা হয়। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র নেতা পুলিশের কাছ থেকে লাশ ছিনিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে নিয়ে আসে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সমস্ত সংগঠনের ছাত্র নেতারা ও হল থেকে সব ছাত্র অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমা হয়। ডাকসু ও ২৪টি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে তাৎক্ষনিক গঠিত হয় ঐতিহাসিক “সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য”। ডাকসু ভিপি আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে শপথ হয় এরশাদকে উতখান না করে ঘরে ফিরে যাব না।

ছাত্রনেতারা তাঁদের কথা রেখেছিলেন । কিন্তু এই আন্দোলন সোজা পথে অগ্রসর হয় নি । অনেক ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক ভেদাভেদকে ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হয়েছিল। ১৩ই অক্টোবর আবারও পুলিশের গুলিতে নিহত হয় মনির হোসেন। তার লাশও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়। আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ক্যাম্পাসে বক্তৃতা শেষে জয় বাংলা শ্লোগান দিলে তাৎক্ষনিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় কিন্তু ছাত্র নেতাদের ঐক্যের দৃঢ় মনোবলের কারণে সেই বিশৃঙ্খলা বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি।

“সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য” গঠিত হওয়ার পর কোনভাবেই মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরুনো যাচ্ছিল না, মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে গেলেই পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করতে থাকে। এইভাবে কয়েকদিনের মধ্যেই প্রায় সব ছাত্র নেতারাই হাঁসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর আস্তে আস্তে আন্দোলন বেগবান হয়। ভয়াবহ ২৫-২৬-২৭ শে নভেম্বর এরশাদের ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনীর সাথে রীতিমত যুদ্ধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল মুক্ত রাখা হয়।

২৭ তারিখ ডঃ মিলন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হলে সর্বস্তরের জনগণ আন্দোলনে যোগ দেয় ও আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। এর পর বিভিন্ন জেলায় ও থানায় এরশাদ উৎখাতের আন্দোলন তীব্র আকার ধারন করে। ময়মনসিংহে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ফিরোজ-জাহাঙ্গীর। এরশাদের দেয়া কারফিউ জনতা না মানলে আন্দোলন গন অভ্যুত্থানে রুপ নেয়। এমন পরিস্থিতিতে ৪ ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদ পদত্যাগের ঘোষণা দেয় ও ৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করে ।

অনেক ত্যাগ , অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় এই বিজয়। শুরুটা যেমন ছিল ছাত্রদের রক্তাক্ত লড়াই দিয়ে, শেষটাও হয়েছে ছাত্রদের রক্তাক্ত লড়াই দিয়ে।

৯ বৎসরের ছাত্র গন আন্দোলনের ফসল হিসেবে ৬ ডিসেম্বরকে যেভাবে মর্যাদা দেয়া উচিৎ রাজনীতির নীতিহীন কার্যকলাপে সেই বিজয় আজ মাত্র ২৬ – ২৭ বৎসরে ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। অথচ একটি প্রজন্ম এই আন্দোলনে নিজেদের উৎসর্গ করে দিয়েছে, এই আন্দোলনের ভিতর দিয়ে বড় হয়েছে কয়েকটি প্রজন্ম। সেই প্রজন্মের কাছে ৮২ থেকে ৯০ এর দিনগুলো অত্যন্ত বিভীষিকাময়। কিন্তু সবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সেই এরশাদকে ক্ষমতার স্বার্থে ব্যবহার করে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। সেই কারনেই গুরুত্বহীন হয়ে যাচ্ছে ৬ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের বিজয় দিবস।

ইতিহাস একদিন হয়তো এই দিনকে মূল্যায়ন করবে কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থরা তা দেখে যেতে পারবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।


প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!