হার্টের রিংয়ের দাম কমাতে ১৫ সদস্যের কমিটি
হেল্থ ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
করোনারি রিং বা হার্টের রিং (স্টেন্ট) এর সঠিক দাম ঠিক করার জন্য একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেছে ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিজিডিএ)।
হার্টের রিং এর দাম পুনর্বিবেচনার বিষয়টি নিয়ে আজ ডিজিডিএ এক বৈঠক করে। বৈঠকে হার্টের ( স্টেন্ট) রিং এর দাম, মান ইত্যাদি নিশ্চিত এবং নিয়ন্ত্রণে একটি ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়। তবে কে কে কমিটিতে থাকবেন, কমিটি কীভাবে কাজ করবে এসব বিষয় চূড়ান্ত হয়নি। কয়েকদিনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ভারতের ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিকাল প্রাইসিং অথরিটি (এনপিপিএ) জীবন রক্ষাকারী করোনারি স্টেন্টের (রিং) দাম প্রায় অর্ধেকে কমিয়ে ফেলবে বলে খবর প্রকাশিত হয়।
এনপিপিএর প্রস্তাব অনুযায়ি স্টেন্টের দাম ২০ থেকে ৪০ হাজার রুপি করার চেষ্টা চলছে। সেটা হলে হাসপাতালে স্টেন্টের সর্বোচ্চ দাম হবে ৬৭,২৭২ রুপি। সঙ্গে আর ১৬ শতাংশ বাড়তি খরচ।
তাই বলা যাচ্ছে অল্প দিনের মধ্যেই ড্রাগ ইলিউটিং বা বায়োগ্রেডেবল স্টেন্ট কিনতে আর রোগীদের আর লাখ লাখ রুপি খরচ করতে হবে না।
ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন প্রস্তাবনা সাম্প্রতিক সময়ে চলমান একটি বিতর্কে নতুন করে মাত্রা যোগ করেছে, যে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এসব জিনিস রোগীদের কাছে সহজলভ্য হবে। একই সঙ্গে প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোরও কোনো ক্ষতি হবে না।
ভারতে স্টেন্ট তৈরিকারকরা এনপিপিএর কাছে দাবি জানিয়েছে, স্টেন্টের দাম সেই পর্যায়ে রাখা হোক, যে দামে হাসপাতালগুলো স্টেন্ট কিনে থাকে। সেটা করতে পারলেই রোগীর শরীরে স্টেন্ট বসানোর ১ লাখ ৯৫ হাজারের খরচ কমে আসবে অনেকখানি।
করোনারি স্টেন্ট হলো একটি তারের জালের টিউব যেটা হৃদপিণ্ডের ধমনীতে রক্তচলাচলের বাধাগুলো দূর করে হার্টঅ্যাটাক রোধ করে। স্টেন্ট তিন ধরনের। বেয়ার মেটাল, ড্রাগ ইলিউটিং এবং বায়ো-ডিগ্রেডেবল।
ভারতে সরকারি হাসপাতালগুলোতে বেয়ার মেটাল স্টেন্ট ১০ হাজারে পাওয়া যায়। ড্রাগ ইলিউটিং স্টেন্ট ১২-১৫ হাজারে। আর বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে ড্রাগ ইলিউটিং স্টেন্টের দাম শুরুই হয় ২২ হাজার টাকা থেকে। তা চড়তে থাকে দেড় লক্ষ, কখনও তা পৌঁছায় ২ লক্ষেও।
সেদেশে ব্যবহৃত স্টেন্টগুলোর ৯০ শতাংশই মেটাল স্টেন্ট। যা সবসময় ধমনী পুনরায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে। বর্তমানে এসব ড্রাগ ইলিউটিং স্টেন্টের দাম ২৩,৬২৫ থেকে ১.৫০ লাখ রুপি।
রোগীদের আরেকটি গ্রুপ অল ইন্ডিয়া ড্রাগ অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (এআইডিএন) এই প্রস্তাবের বিপক্ষে। তাদের দাবি, দামের উপর ১৬ শতাংশ বাড়তি দামের কারণে আরো বাড়তি সুবিধা নিবে হাসপাতালগুলো।
এর আগে ভারতের ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি (এনপিপিএ)-র প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, অস্বাভাবিক মুনাফা লোটার কারণেই এমন নাভিশ্বাস ওঠে রোগীর পরিবারের। প্রস্তুতকারক সংস্থা থেকে বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউটর, হাসপাতালের হাত ঘুরে স্টেন্ট যখন রোগীর পরিবারের হাতে এসে পৌঁছায়, তখন মূল্য বেড়ে যায় ১০ গুণ পর্যন্ত।
এনপিপিএ নির্দিষ্ট ভাবে জানাচ্ছে কমপক্ষে ২৭০% থেকে শুরু করে কখনও কখনও ১০০০% পর্যন্ত লাভে হাসপাতালগুলোতে বিক্রি হয় স্টেন্ট।