সরকার চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে: সোহেল
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, সরকার আমাদের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। মনের শান্তিও কেড়ে নিয়েছে।
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, ‘আজকে যখন আমরা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছি, ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পিজি হাসপাতালের ছোট্ট একটি কক্ষে অবস্থান করছেন। আমাদের নেত্রী হুইল চেয়ারে থাকা মানে বাংলাদেশের মানবাধিকার হুইল চেয়ারে থাকা। সত্যিই বাংলাদেশের মানবাধিকার আজ হুইল চেয়ারে, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ হুইল চেয়ারে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র এমনকি সমগ্র বাংলাদেশ আজ হুইল চেয়ারে।’
বেগম জিয়ার ত্যাগের কথা উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এই সভাপতি বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নেত্রী আছেন কিনা আমার জানা নেই, যিনি তাঁর সমস্ত শরীরে মনেপ্রাণে দেশকে বহন করছেন ধারণ করছেন। তিনি আবারও প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশ মানেই বেগম খালেদা জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া মানেই বাংলাদেশ।’
কেন আজকে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে- তারও ব্যাখ্যা দিয়ে সোহেল বলেন, ‘কিছুদিন আগে প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর অপরাধ আমাদের নেত্রী মুক্ত থাকলে বাংলাদেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা যায় না। তিনি মুক্ত থাকলে ৭০০০ টাকায় বালিশ কেনা যায় না। ৩৭ লক্ষ টাকায় পর্দা কেনা যায় না। তিনি মুক্ত থাকলে শেয়ারবাজার লুট করা যায় না, তিনি মুক্ত থাকলে বাংলাদেশকে ডাম্পিং গ্রাউন্ড বানানো যায় না। আজকে আমাদের নেত্রীকে কারাগারে রেখে বাংলাদেশকে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পরিণত করা হয়েছে। আমরা এটা কোনদিনও মানতে পারি না। এটা কোনোভাবেই হতে দেবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেগম জিয়ার জন্য আজকে মায়েরা কান্না করছে, বাবারা কান্না করছে, ভাইয়েরা কান্না করছে, বোনেরা কান্না করছে। লক্ষ লক্ষ বিএনপির নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমাদের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, মনের শান্তি কেড়ে নিয়েছে এই সরকার। আজকের এই সমাবেশ থেকে বলে দিতে চাই শেখ হাসিনা যদি অনতিবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেন আমাদের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী রাজপথে রক্ত দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
এসময় নেতাকর্মীদের কাছে তিনি প্রশ্ন রাখেন- ‘বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে আপনারা কি রাজপথে রক্ত দিতে প্রস্তুত আছেন?’ জবাবে সমস্বরে হাজারো নেতাকর্মী ‘হ্যা’ সূচক জবাব দেন।
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদের পতনের আগে যেমন জেহাদ ও মিলনের রক্ত আগুন ঝরিয়েছিল, তখন যেমন এরশাদের ক্ষমতার তক্ত তাউশ জ্বলে দাও দাও করছিল- একইভাবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আমরা লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী প্রয়োজনে রক্ত দেবো। তখন যে আগুন জ্বলবে আপনি শেখ হাসিনা পৃথিবীর সমস্ত দমকল বাহিনী নিয়ে এসেও সে আগুন নেভাতে পারবেন না।’
এসময় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা:এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুজিবুর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষকদরের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও কৃষকদল নেতা মাইনুল ইসলাম প্রমুখ।