হোমিওপ্যাথির প্রাণ সূত্রের সহজ সরল ব্যাখ্যা
হোমিওপ্যাথির প্রাণ সূত্রের সহজ সরল ব্যাখ্যা
-আওলাদ হোসেন
১। জীবনীশক্তি-সূত্র-৯-
২। সূক্ষ শক্তি-পাদটীকা-৭
৩। ঔষধ নির্বাচন প্রণালী-ব্যাখ্যা-সূত্র-১৮
৪। ঔষধের রোগ লক্ষণ উৎপাদন নিরঙ্কুশ কিন্তু ঔষধের নিরঙ্কুশ আরোগ্য ক্ষমতা নেই-ব্যাখ্যা-সূত্র-৩৩
১। জীবনীশক্তি-সূত্র-৯, মানুষের সুস্থ অবস্থায় অদৃশ্য জীবনীশক্তি (একনায়কতন্ত্র), সূক্ষ্ম চালিকা শক্তিই জড়দেহকে(সুসংগঠিত প্রাণীদেহে) জীবন্ত রাখে, অসীম কর্তৃত্বে শাসন কওে এবং দেহের সকল যন্ত্রাংশকে প্রশংসনীয়, সুশৃঙ্খল জৈব ক্রিয়াকলাপে সচল রাখে, এমনকি অনুভূতি ও ক্রিয়াকলাপের দিক থেকেও, যাতে আমাদের অন্তঃবাসী বিবেকপ্রাপ্ত মন আমাদেও অস্তিত্বেও মহৎ লক্ষ্য সাধনের নিমিত্তে স্বাধীনভাবে এ-জীবন্ত সুস্থ যন্ত্রটিকে নিয়োগ করতে পারে।
ব্যাখ্যাঃ- মানুষের এ-জীবন সত্তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা নতুন নয়। এ নিয়ে প্রধানত দুরকমের ধারণা প্রচলিত আছে। এক দল বস্তবাদী। তারা মনে করে ’জীবন’ হলো বস্তুর সুশৃঙ্খল সমন্বয়ের ফল। তা যদি সত্য হয় তাহলে দেহে যখন জীবনসত্তার অন্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন এ যন্ত্রটি কেন তার সকল সুর হারিয়ে ফেলে? কেন অচল হয়ে পড়ে থাকে? অথচ তখনো এ দেহের সকল রাসায়নিক উপাদান অটুট থাকে এবং সুবিন্যস্ত ও সুসংগঠিত অবস্থায়ই থাকে। কিন্তু দেহে থাকে না শুধু অদৃশ্য প্রাণশক্তি। অতএব প্রাণশক্তিই দেহযন্ত্রের মূল চালক। এই অদৃশ্য জীবনীশক্তিই সুস্থ ও অসুস্থ অবস্থায় আমাদের দেহকে পরিচালনা করে। সুস্থ অবস্থায় স্বাধীন, স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা কওে এবং পীড়িত অবস্থায় অদৃশ্য রোগশক্তির অধীনে এবং বিশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করে। এই জীবনীশক্তিই রোগশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের দেহের একমাত্র রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা। এর জন্য আমরা সুস্থ থাকি। এই জীবনীশক্তি যখন কোন রোগের প্রতি সংবেদনশীল হয় তখন আমরা সেই রোগেই সংক্রমিত বা পীড়িত হই। আবার জীবনীশক্তির এই সংবেদনশীলতা যখন কৃত্রিম রোগশক্তি দ্বারা অর্থাৎ সদৃশ ঔষধশক্তি দ্বারা পূরণ হয় তখন প্রাকৃতিক ব্যাধি নির্মূলভাবে অপসারিত হয়। এই অদৃশ্য জীবনীশক্তিই আমাদের দেহ ও মনের সকল প্রকার অনুভূতি ও ক্রিয়াকলাপের মূলশক্তি। আমাদের দেহটি এর যন্ত্রবিশেষ। এই জীবনীশক্তি এর সুস্থ অবস্থায় আমাদের দেহ ও মনকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করে বলেই আমরা আমাদের অস্তিত্বের মহৎ উদ্দেশ্য সাধন করতে পারি।
২। সূক্ষশক্তি-পাদটীকা-৭, সূক্ষ্ম ক্রিয়াশীল প্রভাব-সূক্ষ শক্তি কী?
আমাদের পৃথিবী গোপন অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে আটাশ দিন কয়েক ঘন্টায় চন্দ্রকে তার চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ করায় এবং চন্দ্র পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট সময়ে (অর্থাৎ অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময়) আমাদের উত্তর অঞ্চলের সমুদ্রে জোয়ার সৃষ্টি কওে এবং পুনরায় অনুরূপভাবে ভাটা সৃষ্টি করে। দৃশ্যতঃ তা কোন স্থল উপকরণের মাধ্যমে সংঘটিত হয় না, উৎপাদনে ব্যবহৃত কোন যন্ত্রেও সাহায্যেও হয় না। আমরা আমাদের চারপাশে আরো অনেক ঘটনা দেখি যা কোন এক সূক্ষ্ম সত্তার উপর আরেক সূক্ষ্ম সত্তার অদৃশ্য ক্রিয়ার ফল। কিন্তু কারণ ও ফলের মধ্যে কোন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য যোগসূত্র আমরা শনাক্ত করতে পারি না। কেবলমাত্র তুলনা ও বিশ্লেষণে দক্ষ, সুশিক্ষিত ব্যক্তি তার নিজের মধ্যে এক ধরণের অতীন্দ্রিয় ধারণা গঠন করতে পারে, যা তার চিন্তায় যান্ত্রিক এবং বস্তুগত যা কিছু আছে তার সবকিছুকে এরুপ ধারণা থেকে পৃৃথক করার জন্য যথেষ্ট হবে। তিনিই এরুপ ক্রিয়াফলগুলোকে সূক্ষ্ম প্রভাবজনিত, গুণগত বলে স্বীকার করেন, অর্থাৎ যা নিরঙ্কুশ, সুনির্দিষ্ট, বিশুদ্ধ শক্তি থেকে উৎপন্ন হয় এবং এক সূক্ষ্ম সত্তার উপর অপর সূক্ষ্ম সত্তার ক্রিয়া হিসাবে সংঘটিত হয়।
৩। ঔষধ নির্বাচন প্রণালী-ব্যাখ্যা-সূত্র-১৮, রোগে সহচর হ্রাস-বৃদ্ধির বিবেচনাসহ লক্ষণসমষ্টি (সূত্র-৫) ছাড়া কোনভাবেই আর কিছু আবিষ্কার করা যায় না, ব্যাধি হ্রাস-বৃদ্ধিও মাধ্যমে তাদের আকাক্সক্ষা ব্যক্ত কওে, এ-অকাট্য সত্য থেকে অনস্বীকার্যভাবে প্রতীয়মান হয় যে, সকল লক্ষণের সমষ্টি এবং রোগের প্রত্যেক স্বতন্ত্র অবস্থার হ্রাস-বৃদ্ধিসহ অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ রোগলক্ষণ, ঔষধ নির্বাচনে আমাদের পথ দেখানোর জন্য একমাত্র নিয়ামক।
ব্যাখ্যাঃ- মহাত্মা হ্যানিম্যান রোগে দুটি বিষয় আবিষ্কার করেছেন, এক রোগলক্ষণ, দুই রোগলক্ষণসমূহের হ্রাসবৃদ্ধির অবস্থা। উল্লেখ্য যে, এক লক্ষণবিশিষ্ট কোন কোন রোগে হ্রাস-বৃদ্ধি থাকে না, সে-সব ক্ষেত্রে কিভাবে রোগের মূল্যায়ন করতে হবে তা যথাস্থানে আলোচনা করা যাবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগের হ্রাস-বৃদ্ধি থাকে। নানা প্রকার কারণে রোগের হ্রাস-বৃদ্ধি হতে পারে। যেমন-আবহাওয়াগত হ্রাসবৃদ্ধি, সঞ্চালনগত হ্রাস-বৃদ্ধি, সময়গত হ্রাস-বৃদ্ধি, তাপ-ঠান্ডাজনিত হ্রাস-বৃদ্ধি, খাদ্যজনিত হ্রাস-বৃদ্ধি ইত্যাদি। রোগের প্রকৃত চরিত্র নির্ণয় করতে হলে রোগলক্ষণকে হ্রাস-বৃদ্ধিসহ মূল্যায়ন করতে হবে। কারণ ব্যাধি এর হ্রাস-বৃদ্ধিও মাধ্যমে যথার্থ চিকিৎসা পাওয়ার জন্য এর আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করে। যেমন- কোন ব্যাধি ঠান্ডা চায়, কোন ব্যাধি তাপ চায়। কোন ব্যাধি চাপ পছন্দ করে, কোন ব্যাধি আবার চাপে বৃদ্ধি হয়। তাই সে চাপ পছন্দ করে না। কোন ব্যাধি সঞ্চালনে উপশম হয়। তাই সে সঞ্চালন আকাক্সক্ষা করে। রোগের ইচ্ছা অনুসারে রোগীর ইচ্ছাবৃত্তির পরিবর্তন হয়। যেমন- কোন ব্যক্তি অভ্যাসগতভাবে ভাতে টোকা লবণ খায়। কিন্তু তার রোগে দেখা যায় যে, সে লবণ পছন্দ করে না। আবার পারিবারিক শিক্ষা কিংবা অভ্যাস অনেক সময় রোগের প্রকাশযোগ্য আকাক্সক্ষা প্রচ্ছন্ন করে দেয়। যেমন কোন শিশু ছায়া দেখে ভয় পায়। কিন্তু পারিবারিক শিক্ষার জন্য সে শিশুটি তার নিজের ছায়া নিয়ে খেলা করে। রোগীর রোগ সংক্রান্ত আকাক্সক্ষাকে রোগীর সুস্থ অবস্থার অভ্যাস ও পারিবারিক শিক্ষা থেকে আলাদা করতে হবে। মহাত্মা হ্যানিম্যান মানুষের সুস্থ ও অসুস্থ অবস্থাকে আলাদা কওে দেখেছেন এবং সুস্থ অবস্থা থেকে অসুস্থ অবস্থাকে রোগলক্ষণের মাধ্যমে পৃথক করেছেন। তারপর রোগীর অসুস্থতার চিত্রটি স্বতন্ত্র কওে দেখিয়েছেন। রোগচিত্রকে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যকরণের একমাত্র পথ রোগলক্ষণকে এর হ্রাস-বৃদ্ধিসহ মূল্যায়ন করা। তবে সকল ক্ষেত্রেই রোগীর শিক্ষাগত ও অভ্যাসগত বিষয় অবগত হয়ে তার পীড়াগত আকাক্সক্ষাকে (morbid desire) মূল্যায়ন করতে হবে। কারণ রোগে রোগীর ইচ্ছাসংক্রান্ত লক্ষণ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিশেষত্বরূপে পরিগণিত হয়।
আমি এখানে রোগে রোগীর ইচ্ছার কথা বলছি এজন্য যে, কোন কোন ক্ষেত্রে আপাত দৃষ্টিতে রোগীর ইচ্ছা এবং রোগের ইচ্ছা পরস্পর বিপরীত হয়। যেমন-রোগী শীতে কাতর কিন্তু মাথা ব্যথায় ঠান্ডা চায় এবং মাথায় ঠান্ডা প্রয়োগে উপশম হয়। আমাদের আর্সেনিক অ্যাল্বাম ঔষধটি এরূপ দ্বৈত আকাক্সক্ষা উৎপাদন করে। লাইকোপোডিয়াম ঔষধটিও দ্বৈত লক্ষণ উৎপাদন করে। আবার কেলি আইওডের রোগী গরমে কাতর কিন্তু ঠান্ডা খাবারে তার পীড়ার বৃদ্ধি হয়। কেলি সাষ্ফের রোগী গরমে কাতর কিন্তু øানে বৃদ্ধি। ফসফরাসের রোগী শীতে কাতর কিন্তু পেটে ভীষণ ঠান্ডা খাবার চায়। অতএব দেখা যায় যে, আমাদেও অনেক ঔষধ সুস্থ শরীওে দ্বৈত আকাক্সক্ষা উৎপাদন কওে এবং রোগে দ্বৈত আকাক্সক্ষার সাথে সদৃশ হয়ে তা আরোগ্য করে। সেইহেতু রোগের দ্বৈত আকাক্সক্ষা থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। মূলত রোগের আকাক্সক্ষা এবং রোগীর আকাক্সক্ষা একই। তা দ্বৈত প্রকৃতিবিশিষ্ট হতে পারে।
উপসংহারে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, ব্যাধির সহচর হ্রাস-বৃদ্ধিই ব্যাধিকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করে। অতএব সদৃশ ঔষধ নির্বাচনে এর গুরুত্ব অনেক বেশি।
৪। ঔষধের রোগ লক্ষণঃ-ব্যাখ্যাঃ- সূত্র-৩৩- এ-সূত্রে বলা হয়েছে যে, সুস্থ মানবদেহে ঔষধের ক্রিয়াক্ষমতা নিরঙ্কুশ এবং বাঁধামুক্ত। সুস্থ শরীরে শক্তিকৃত ঔষধ সেবন করা হলে তার মুখ্য ক্রিয়া দেহে সংঘটিত হবেই। এ-জন্য মানবদেহে কোন প্রকার অনুকূল পরিবেশ কিংবা জীবনীশক্তির সংবেদনশীলতা বা ঔষধশক্তির প্রতি সাড়া দেয়ার ইচ্ছা আবশ্যক হয় না। জীবনীশক্তি একটি অদৃশ্য সেচ্ছাচারী সত্তা বটে। এর নিজস্ব প্রবৃত্তি আছে। কিন্তু সুস্থ অবস্থায় জীবনীশক্তির ইচ্ছা বা সংবেদনশীলতা ঔষধশক্তির অনুকূলে থাকে। এর ফলে সুস্থদেহে ঔষধশক্তি শর্তহীন এবং অবাধে ক্রিয়া করতে পারে। এ-কারণে রোগশক্তি অপেক্ষা ঔষধশক্তি শ্রেষ্ঠ। প্রকৃতিই ঔষধকে এরূপ শ্রেষ্ঠ শক্তি প্রদান করেছে। তবে রোগ আরোগ্য করার ক্ষেত্রে ঔষধ এর শ্রেষ্ঠ শক্তিকে অবাধে প্রয়োগ করতে পারে না। এক্ষেত্রে কেবলমাত্র সাদৃশ্যের ভিত্তিতে এর বিশুদ্ধ শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে পারে। অর্থাৎ কৃত্রিম রোগলক্ষণ উৎপাদন দৃষ্টে ঔষধ প্রাকৃতিক রোগলক্ষণের সদৃশ হলেই কেবল সে প্রাকৃতিক ব্যাধি আরোগ্য করতে পারে। কিন্তু সুস্থদেহে ক্রিয়া করার ক্ষেত্রে কোন শর্তই থাকে না। তাই সুস্থদেহে ঔষধের ক্রিয়াক্ষমতা অবাধ ও শর্তহীন এবং একেবারেই নিরঙ্কুশ। পক্ষান্তরে রোগশক্তি সুস্থ মানবদেহে অবাধে এবং নিরঙ্কুশভাবে রোগ উৎপাদন করতে পারে না। ব্যাধি শক্তিকে সুস্থ মানবদেহে সংক্রমিত হতে সম্পূর্ণভাবে জীবনীশক্তির সংবেদনশীলতার উপর নির্ভর করতে হয়। জীবনীশক্তির সংবেদনশীলতার উপর নির্ভর করতে হয়। জীবনীশক্তি যদি রোগশক্তির প্রভাব সেচ্ছায় গ্রহণ না করে তাহলে রোগশক্তি জীবনীশক্তিতে সংক্রমিত হতে পারে না। প্রকৃতি ব্যাধিকে কোন প্রকার অবাধ ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দেয় নি। তাই জীবনীশক্তি আমাদের স্বাস্থ্যকে নানা প্রকার রোগব্যাধি থেকে রক্ষা করতে পারে। জীবনীশক্তির এ-ক্ষমতাকে আমরা এর প্রতিরোধ শক্তি বলি। মূলত যতক্ষণ পর্যন্ত রোগশক্তির প্রতি জীবনীশক্তির সংবেদনশীলতা শূণ্যের কোঠায় ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের প্রতিরোধ শক্তি অটুট থাকে। মানসিক ও দৈহিক নানারূপ প্রতিকূল শক্তি দ্বারা যখন আমাদের জীবনীশক্তি ভীষণভাবে পর্যুদস্ত ও প্রভাবিত হয় তখনই কেবল জীবনীশক্তি প্রাকৃতিক ব্যাধিশক্তির প্রতি সংবেদনশীল হয়ে উঠে। যে মূহুর্তে জীবনীশক্তি কোন প্রাকৃতিক ব্যাধিশক্তির প্রতি সাড়া দেয় ঠিক সেই মূহুর্তে সে পীড়িত হয়। জীবনীশক্তি যেরূপ রোগশক্তি কর্তৃক অভিভূত ও সংক্রমিত হয় ঠিক সেইরূপ রোগলক্ষণ প্রকাশ করে।
এ-কারণে হ্যানিম্যান বলেছেন যে, সুস্থ মানবদেহে ঔষধের ক্রিয়া ক্ষমতা নিরঙ্কুশ ও শর্তহীন কিন্তু রোগশক্তির সংক্রমণ-ক্ষমতা জীবনীশক্তির অধীন বা অধঃস্থ এবং শর্তযুক্ত।
এ-সূত্রের ১৭ নম্বর পাদটীকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ-পাদটীকায় সদৃশ ঔষধের প্রতিষেধক শক্তির একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত আছে। বেলেডোনা স্কার্লেট ফিডার উৎপাদন করে। তাই সূক্ষ্ম মাত্রায় বেলেডোনা স্কার্লেট জ্বর আরোগ্য করে। শুধু তাই নয় স্কার্লেট ফিডার মহামারীরূপে দেখা দিলে সেক্ষেত্রে সূক্ষ্ম একমাত্রা বেলেডোনা সেবন রোগের প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। হ্যানিম্যান এ-পাদটীকায় বলেছেন যে, সূক্ষ্ম একমাত্রা করে বেলেডোনা যেসব শিশুরা সেবন করেছিল তারা কেউই স্কার্লেট জ্বরে আক্রান্ত হয় নি। কারণ যাদের জীবনীশক্তি স্কার্লেট জ্বরের প্রতি সংবেদনশীল হতো একমাত্রা বেলেডোনা তার সংবেদনশীলতা পূরণ করে দিয়েছে। অতএব জানা গেল যে, যেকোন মহামারী রোগের প্রাদুর্ভাবকালে উক্ত রোগের সদৃশলক্ষণবিশিষ্ট ঔষধ উচ্চ শক্তিতে একমাত্রা দিলেই উক্ত রোগের বিরুদ্ধে তা যথার্থ প্রতিষেধক হয়। কারণ ব্যক্তি যদি উক্ত রোগের প্রতি সংবেদনশীল থাকে তাহলে একমাত্রা ঔষধ তার সংবেদনশীলতা পূরণ করার জন্য যথেষ্ট হয়। আর যদি সংবেদনশীল না থাকে তাহলে একমাত্র ক্রিয়া জীবনীশক্তি একাই কাটিয়ে উঠতে পারে। অধিকমাত্রা প্রয়োগে ঔষধটি লক্ষণ উৎপাদন করতে পারে। তাই তিনি প্রতিষেধক হিসাবে একমাত্রা ঔষধ দিতে বলেছেন।
বিঃদ্রঃ সূত্রের ব্যাখ্যা না জানার কারণে Organon of Medicine বইটি দুর্বোধ্য হয়ে রয়েছে। Ñলেখক ডা. রেজাউল করিম, মোবা-০১৮১৫২১৯০৩৪, (করটিয়া) টাঙ্গাইল।