হোমিও রোগী পর্যবেক্ষণ শিক্ষার্থীর কাজ

 

 

ডা. আওলাদ হোসেন

প্রশ্ন হচ্ছে রোগীলিপিতে সাবজেক্টিব ও অবজেক্টিব পর্যবেক্ষ থাকতে হবে। এতে অসাধারণ ও বৈশিষ্ট্য পূর্ণ লক্ষণ না থাকলে তা প্রকৃত রোগীলিপি হয় না এখানেই Observation কথাটি সামনে আসে। যেমন রোগী এলোপ্যাথ চিকিৎসা শেষ করে তার পর হোমিও ওষুধ গ্রহণ করতে এসেছে। তাকে কোন ওষুধ না দিয়ে Observation এ রাখা। প্রশ্নের ধরণ- কোন সময় এ লক্ষণটি দেখা যায়? কি প্রকারের ব্যাথা? ব্যথা কতক্ষণ থাকে? দিন অথবা রাত্রের কোন সময়ে হয়? সুনির্দিষ্ট তথ্য অনুসন্ধান করা। মলের বৈশিষ্ট্য কি? কিভাবে প্রস্রাব করে দিন-রাতের নিদ্রা কেমন? স্বভাব, মেজাজ স্মৃতিশক্তির অবস্থা কি? পিপাসা কেমন? কেমন স্বাদ অনুভব হয়? কি প্রকার খাদ্য ও পানীয় বেশি পছন্দ? কি প্রকার খাদ্য ও পানীয় অপছন্দ? মাথা, বাহু, পেট, সম্পর্কে কিছু বলার আছে কি? মল, বমন, প্রস্রাব, নিদ্রা, শয়ন, শীতল, গরম শীত, ঘর্ম, ঋতুস্রাব। রোগী পর্যবেক্ষণ কালে কেমন আচরণ করে? বিষন্ন ঝগড়াটে, হঠকারী, ক্রন্দনশীল, উদ্বিগ্ন, হতাশ, দু:খিত, আশাবাদী অথবা শান্ত কিনা? মুখের বর্ণ, চক্ষের বর্ণ, ত্বকের বর্ণ কি? মুখের গন্ধ, শ্রবণ শক্তি, চক্ষু তারকা, জিহ্বা, শ্বাস-প্রশ্বাস, অন্দকারে, আলোতে কেমন? সদৃশ্য চিকিৎসাবিধানে লক্ষণ রূপে গণ্য হয়। রোগের কারণ জানতে হবে। আত্মহত্যার চেষ্টা, হস্তমৈথুন, স্বপ্নদোষ, অমিতাচার, মদ, উত্তেজক বস্তু, অতিভোজন, যৌন রোগ চুলকানি, ভালবাসা, ঈর্ষা, অশান্তি, বিরক্তি, দু:খ, দুর্ব্যবহার, প্রতিশোধ আহত, আর্থিক দুরবস্থা, ভয়, অনাহার, গুপ্ত অঙ্গের ত্রুটি, বিদারণ, স্থানচ্যুতি ইত্যাদি। মহিলাদের চিররোগ গর্ভধারণ, বন্ধ্যাত্ব, যৌন আকাঙ্খা, সন্তান প্রসব, গর্ভপাত, স্তন্যদান, মাসিক ঋতুস্রাব ইত্যাদি সম্পর্কে মনোযোগ দেয়া। ঋতুস্রাব অবিরাম নাকি থেমে থেমে, পরিমান, বর্ণ, স্বেতস্রাব, দৈহিক অথবা মানসিক যন্ত্রনা কিরূপ অনুভূতি ও ব্যাথা, স্বেতস্রাবের বিস্তারিত বিবরণ। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান সামান্য বিষয় জানতে চাইলে বিরক্তিবোধ করা, কৌশলে সব লক্ষণ অবগত হওয়া। অতিরঞ্জিতভাবে প্রকাশ করা। অথবা অলসতা, অহেতুক লজ্জা, নম্রতা, দূর্বলতা ইত্যাদি কারনে লক্ষণ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা। মুক্ত মনে রোগী পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তার পর রোগীর অধিক আকর্ষনীয়, অসাধারণ, বিরল বৈশিষ্টপূর্ণ (রোগের চরিত্রগত) লক্ষ্মণসমূহ নির্ণয় করতে হবে। ঔষধ খুঁজতে হবে সাদৃশ্যের ভিত্তিতে। উচ্চ শক্তিতে এবং ক্ষুদ্রতম মাত্রায়। ওষুধের ক্রিয়াকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করা এবং ওষধ নির্বাচনের উপর তার নিজেরই আস্থা থাকে না। রোগী পর্যবেক্ষণে ব্যাতিক্রমী জ্ঞান আবশ্যক। মানবীয় প্রকৃতি ষড়ঋপুর অন্তর্ভূক্ত যথা কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য। এসব রিপু সম্পর্কে চিকিৎসকের পূর্ণ জ্ঞান থাকা দরকার। চিকিৎসকের দৈর্য, অধ্যবসায় এবং সাবধানতা অবলম্বন করার ক্ষমতা থাকতে হবে। অচির ব্যাধি সমূহের লক্ষণ টাটকা থাকে, স্বেচ্ছায় চিকিৎসকের নিকট বলে থাকে। অনুমানকে প্রকৃত পর্যবেক্ষণে বিকল্প করা যাবেনা। আবির্ভূত প্রতিটি ব্যাধি অনেকদিক দিয়ে সক্রিয় বিশেষত্বপূর্ণ, পূর্বের সকল মহামারী থেকে ব্যাপক আলাদা। কতগুলো রোগীর নিবিড় পর্যবেক্ষণ দ্বারাই কেবল লক্ষণ সমষ্টি গভীরভাবে অবগত হতে পারে। রোগের ক্ষেত্রে কারণ খুঁজে না পাওয়া, সামঞ্জস্যহীন, বেখাপ্পা যেমন- রাতে নির্দিষ্ট সময় ব্যাপী নিয়মিত নিদ্রাহীনতা। যদি এর কোন কারণ না থাকে তাহলে এটি এ রোগীর একটি অসাধারণ লক্ষণ। প্রকৃত পক্ষে হোমিওপ্যাথিতে যে লক্ষণের ব্যাখ্যা পাওয়া যায় তার অসাধারণত্ব কমে যায়। অদ্ভূত, বিরল চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি রোগীর মধ্য থেকে বের করে আনতে পারাই দক্ষ হোমিওপ্যাথির একমাত্র সাধনা। এই কাজটি যদি হোমিওপ্যাথগণ সাফল্য ও দক্ষতার সঙ্গে করতে পারতেন তাহলে কোন হোমিওপ্যাথি ওষুধে নির্বাচনে ব্যর্থ হতেন না এবং ওষুধে কাজ হয়নি ফলে ডাক্তার পরিবর্তন করতে হতো না, ডাক্তারের ভিজিট সমপর্যায়ে চলে আসত, কেউ এক রোগীতে ২০০/- অপর কেউ ১০০০/- টাকা নেয়ার সুযোগ পেত না। আর এই পার্থক্যের মূল কারণ হচ্ছে কেউ অর্গাননের মাধ্যমে রোগীর চিকিৎসা দেন আবার কেউ মেটেরিয়া মেডিকার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। একটি প্রযুক্তি নির্ভর অপরটি হাঁতুরে। ড. কেন্ট যেটাকে লাকী চান্স বলেছেন। সোরিক লক্ষণগুলো মূল্যায়ন করে এদেরকে এন্টিসোরিক ওষধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যা দ্বারা সোরা গঠিত ব্যাথি সহজে ও নির্ভুলভাবে দ্রুত আরোগ্য করা যায়। লক্ষণ সমষ্টি যা ব্যাধিকে পৃথক ও স্বতন্ত্রভাবে চিহ্নিত করে, রোগচিত্রের প্রকার যাই হোক একবার নির্ভুলভাবে অঙ্কিত হয় তখন কাজের সর্বাধিক কঠিন অংশ সম্পন্ন হয়। চরিত্রগত লক্ষণ সমূহ বুঝতে পারে। সদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতিগতভাবে ওষুধ নির্বাচন ও প্রয়োগ করে যে সমস্ত রোগ আরোগ্য হয়েছে তা বাদ দেয়া এবং যে সমস্ত রোগ রয়ে গেছে তার সঙ্গে নতুন কোন রোগ লক্ষণ যুক্ত হলে একত্রে পূনরায় ওষুধ নির্বাচন ও প্রয়োগ করতে হবে এটাই হোমিওপ্যাথি-নব আবিস্কৃত রোগীর চিকিৎসা ব্যাবস্থা।

এখন ভেবে দেখতে পারেন হোমিও চিকিৎসা কতটা সহজ কতটা কঠিন। রোগে কি আরোগ্য করতে হবে? রোগীলিপিতে দেখা যায় চির রোগের ক্ষেত্রে রোগীর বিভিন্ন দিক যাচাই বাছাই করে ওষুধ দিতে হবে। ৯টি রোগী যদি রক্ষা পায় ভাল কিন্তু একটি যদি ভুল চিকিৎসার শিকার হয় তাহলেই সব গেল। আর এইসব গেলকে রক্ষা করার জন্য এত চিন্তা-ভাবনা । এখন পরীক্ষা করে দেখুন কতজন হোমিও চিকিৎসা প্রদান করেন? যদি করেন ভাল, কিন্তু যদি না করেন, না পারেন তাহলে ডাব্লিউ এইচ ও এর মতে হোমিও কোন চিকিৎসা না এ কথাটির কাউন্টার কিভাবে দিবেন? তারপরও বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বিভিন্ন নামে শিশি বোতলে, সুন্দর মোড়কে, স্বল্পমূল্যে হাতের কাছেই পাওয়া যাচ্ছে যা ডা. হ্যানিম্যানের আবিস্কৃত হোমিওপ্যাথির ধারের কাছেও না, তার পরও ডাক্তার হ্যানিম্যানের নামে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। যদি কারো মৌলিক অবদান বা বিকল্প কোন তত্ত্ব আবিস্কৃত হয়ে থাকে তবে তা ঐ ডাক্তারের নামেই প্রচার করা উচিত অন্যথায় তার থিউরীকে চুরি করে প্রচার করাকে গর্হিত অপরাধ বলা হয়। তার পরও যারা অর্গানন বুঝতে অক্ষম তারা অন্য কোন বিষয় কিভাবে বুঝতে সক্ষম হন বা পারদর্শিতা দেখিয়ে পয়সা কামাই করে তাদের অবশ্যই অর্গানন বাদ দিয়ে অন্য কোন থিওরী থাকলে ডা. হ্যানিম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজের নামে বই বের করে অন্য কোন প্যাথির নাম ব্যবহার করে হোমিও (ইউনানী) অথবা ভেষজের ডাক্তার বলে প্রচার করে জনগণকে প্রতারিত না করাই ভাল। তবে রোগী যদি আরোগ্য লাভ করে যেমন বায়োকেমিক, তা অস্বীকার করার কিছু নেই। যাতে ডাক্তার হ্যানিম্যান বহির্ভূত কিছু হয়ে থাকলে তার গ্রহণযোগ্যতা ও সুস্পষ্টতা ও পৃথক বৈশিষ্ট সহ চিকিৎসা জগতে স্থান লাভ করে ধন্য হতে পারে। তবে অর্ধেক গ্রহণ এবং অর্ধেক বর্জন ডা. হ্যানিম্যানের সময়কাল থেকেই চলে আসছে। প্রকৃত স্থান থেকে চিকিৎসা দেয়াটা মায়ের কাছে মামার বাড়ীর গল্প করার মতই বেমানান দৃষ্টিকটু এবং ভঙ্গুর। কারণ প্রকৃত স্থান থেকে সরে যাওয়ার অর্থই হচ্ছে পরিস্থিতিকে কিছুটা ঘোলাটে করা। যেমন বোতলজাত ওষুধ ঝাঁকি দেয়ার সুযাগ নেই। অথচ, হোমিওপ্যাথির মূল কথাই হচ্ছে ঝাঁকি দেয়া। আর (Totality of symptom) ছাড়া হোমিওপ্যাথি অর্থই হচ্ছে ২৯১টি সূত্রকেই অস্বীকার করা অথবা অপারগতা প্রকাশ করা যা না যেনে চিকিৎসা করা নিষেধ, তাতে যত পান্ডিত্যই দেখানো হোকনা কেন? সূত্র-৬।

তবে এত সমস্ত কথা লিখে কোন লাভ নেই। প্রকৃত হোমিও অনুসারী গণ সূত্র অনুসারে যে চিকিৎসা দেন তার আনন্দই আলাদা এবং কৃতকার্যের হার ১০০%। কিন্তু অর্গাননের বিদ্যা দিয়ে যেভাবে রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয় তা অসম্ভব বলে মনে করি। সূত্রের প্রয়োগ বিরল প্রতিভার কাজ এবং প্রায় ডা. হ্যানিম্যানের জ্ঞানের ও সাধনার কাছাকাছি যেতে হয়। সূত্রের কাজ হচ্ছে রোগীলিপিকে রোগের মূল কারণ ধরিয়ে দেয়া যা মন্ত্রমুগ্ধের মত কাজ করে। কেন রোগীকে কি ওষুধ দিবেন এটা অনেক হোমিওপ্যাথ ভাল জানেন কিন্তু এই জ্ঞানের উৎস্য হচ্ছে অর্গানন, যা কেউ অনুসরণ করেন না কারণ এখানে মেটেরিয়া মেডিকার মত কোন রোগে কি ওষুধ দেবেন তা লেখা নেই। ফলে সভাবতই আমার মত অজ্ঞ ডাক্তার বুঝতেই পারবে না যে অর্গানন দিয়ে তাহলে কি কাজ করা হবে? শুধুই কি পড়ার জন্যই পড়া? নিশ্চই না, সেই গুপ্ত বিদ্যাটিই রপ্ত করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু অন্যদের মত আমিও মেটেরিয়া মেডিকা দিয়ে চিকিৎসা দিতে অক্ষম। ফলে রোগীকে পলিপাসে ক্যালকেরিয়া কার্ব অথবা লাইকো দিয়ে যে লক্ষণের উপর ভিত্তি করবো সে ক্ষেত্রে দেখা গেল সাল্ফ দিয়ে শুরু করা হলো। সি. হেরিং এর বই খুলে দেখি সাল্ফ পুরোপুরি মিলে আছে যার দ্বিতীয় কোন ওষুধ এই রোগীর ক্ষেত্রে নেই এবং যারা দিবেন তারা কম্পাউন্ডার হওয়ারও যোগ্য নন। অনেকেই দ্বিমত পোষণ করবেন এবং বলবেন এমন চিকিৎসা আমাদের কাছে খুবই সহজ। ভাল কথা, কিন্তু কোন সূত্র অনুসারে দেয়া হলো তা বলতে হবে এবং রেপার্টরী দেখে নিশ্চিত হতে হবে যে, রেটিং এন্ড গ্রেডিং এর ক্ষেত্রে এপরোপ্রিয়েট কোনটি? হতে পারে আপনার দেয়া ওষুধটি এই প্রক্রিয়ায় মিলে গেল? আর প্রমাণ হলো ডা. হ্যানিম্যান কেন অর্গাননকেই হোমিওপ্যাথি বলে দাবী করে গেলেন? অচির রোগের বৃদ্ধি ২ প্রকার- অন্তর্মুখী, বহির্মুখী। অন্তমুূখী হলে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয় এবং লক্ষণ সংকট দেখা দেয়। এঅবস্থায় সূক্ষ্মদৃষ্টিভঙ্গি ও বেশী সতর্কতার সাথে রোগী পর্যবেক্ষণ করে লক্ষণ আবিস্কার করতে হবে। বহিমুখী হলে লক্ষণ স্পষ্টভাবে দেখা যায় এবং চিকিৎসার জন্য খুবই সহজ হয়। সেই সঙ্গে বলা হয় মরণ ব্যাধির কোন লক্ষণ থাকে না। পর্যবেক্ষণের জ্ঞান, কৌশল ও পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব জীবনীশক্তি আভ্যন্তরীণ ব্যাধিকে জীবন নাশের হাত থেকে রক্ষা করতে বহিরঙ্গে স্থানীয় ব্যাধি প্রকাশ করে থাকে এতে ৩ টি মায়াজম দোষ আরোগ্যের সুযাগ করে দেয় এবং অনারোগ্য থাকার কারণে আভ্যন্তরীণ ব্যাধি বৃদ্ধি পেতে থাকে (২০১)। সতর্ক পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। রোগী পর্যবেক্ষণকালে রোগীর বয়স, পেশা, জীবন প্রণালী, পথ্যাদি দাম্পত্য সুখ-শান্তি বিষয়ে জানতে হবে। অনেক ওষধ আছে কন্ট্রা ইন্ডিকেশন যা প্রায়ই রোগীর স্বভাব ও মানসিক লক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়। সদৃশ সদৃশে আরোগ্য হওয়া-ঐশ্বরিক আরোগ্যনীতি। পূর্ণাঙ্গ রোগচিত্র অংকন করা সদৃশ ওষুধ নির্বাচনের পূর্ব শর্ত।

আমরা অধিকাংশ হোমিওপ্যাথগণ নোট/গাইড বই পড়ে চিকিৎসা দেই। এতে ওষুধ সম্বন্ধে জ্ঞান ও ওষুধ প্রয়োগ সম্বন্ধে জ্ঞানের ঘাটতি থাকে। বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, ডা. কেন্ট ফিলোসফি নাম দিয়ে যে বইটি লিখেছেন এতে সূত্রের ব্যাখ্যা ও নিজস্ব ধ্যান ধারনা উল্লেখ করেছেন যা পড়া বা জানা দরকার তার রেপার্টরী বইটির কাজ হচ্ছে প্রথমে রোগীর বিশেষ বিশেষ দিক পর্যবেক্ষণ করে রোগী, আত্মীয় স্বজন, ডাক্তার নিজে মানসিক, দৈহিক, সার্বদৈহিক একর্ডিং টু এনাটমিক্যাল অর্ডার হিসেবে খোঁজ খবর নিয়ে অদ্ভুত বিরল চরিত্রগত লক্ষণ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে রোগীর বিষয়াদিকে স্বতন্ত্র করণের জন্য প্রতিটি লক্ষণকে যাচাই বাছাই গ্রহণ বর্জন ইত্যাদির জন্য রেপার্টরীর আশ্রয় নিতে হবে এবং দেখা যাবে যে, প্রতিটি ক্ষেত্রে একাধিক ওষুধের নাম পেয়ে গেছেন এবং অন্যান্য নিয়মাবলী পালন করে একটি ওষুধ বা ২টি ওষুধ নির্বাচন করতে সক্ষম হলেন। তার পর মেটেরিয়া মেডিকার সাহায্যে প্রকৃত ওষুধটি পেয়ে গেছেন। এখন অর্গানন অব মেডিসিন বইটির নিয়মনীতি অনুসারে ওষুধ প্রয়োগ করতে থাকবেন ইত্যাদি। তার পর টেস্টি, ডানহ্যাম, বার্নেট, বেল, মার্ফি, হেরিংস, হিউজেস ও মহাত্মা হ্যানিম্যানসহ অন্যান্য ডাক্তারদের মেটেরিয়া মেডিকা পড়ে চিকিৎসা দেয়া প্রকৃত হোমিওপ্যাথ হওয়ার পূর্বশর্ত বলে মনে করি।

নিপুন কারুকার্যের মাধ্যমে রোগীর প্রকৃত রোগ খুঁজে পাওয়ার নাম হচ্ছে আর্ট এবং সত্যকে পাওয়াই হচ্ছে বিজ্ঞান। চিকিৎসকের কাজ শুধু রোগীর সাথে, রোগের সাথে নয়। বিষয়টি বুঝতে গেলেই রেফারেন্সে উল্লেখিত ডাক্তারদের হরেক রকমের বই পড়ে জ্ঞানার্জন এবং অতি দূর্লভ লক্ষণ সম্পর্কে যে সিদ্ধান্ত তা আমাদেরকে হতবাক করে। ডাক্তার রেজাউল করিম করটিয়া কর্তৃক অর্গানন বইটির অনুবাদ রেফারেন্স হিসেবে পড়ে দেখতে পারে। আমি যদি হাজারও বলি রেডিমেড ওষুধ দিয়ে হোমিওপ্যাথি হয়না তাতে কোন লাভ হবে না কারণ হোমিওপ্যাধির সঙ্গে বাঙালির অপূর্ব একটি মিল আছে যা বীরের জাতি কথাবার্তায় কাজে কর্মে জীবনীশক্তি শেষ এলোপ্যাথ ফেরৎ তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। জীবনীশক্তি কি তাই জানে না। অথচ এলোপ্যাথিতে নাকে মুখে নল দিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত অচেতন দেহ বাচিয়ে রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!