খানসামায় গ্রামবাসীর স্ব-উদ্যোগে ১৮০ ফুট সাঁকো নির্মাণ
ভূপেন্দ্র নাথ রায়, খানসামা(দিনাজপুর) প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বন্যার করাল গ্রাস আর নেই। কিন্তু রেখে গেছে বন্যার ভয়াবহ ক্ষতি। দিনাজপুরের খানসামায় ব্রীজ, কালভার্ট, রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যার অন্যতম একটি গ্রামের নাম বাসুলী। এটি উপজেলার আলোকঝাড়ি ইউনিয়নের উত্তরের একটি গ্রাম। ওই গ্রামের ভুল্লির বাজার ও বোর্ডের হাট যাতায়াত রাস্তার ভুল্লি নদীর ওপর থাকা ব্রীজ এবং পূর্ব পাশের সংযোগ সড়ক বন্যার োতে ভেঙে গেছে। আর ভাঙনের স্থানে সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২৫ ফুট গভীর একটি গর্ত।
ফলে, নদীর পশ্চিম পাশের বাসুলী, বিষ্ণুপুর, ফরিদাবাদ, কাশিনগর, দুয়ানি কাশিমনগর, সাজাপুরের বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা পূর্বের ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্ষেত-খামার এবং পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলায় যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েছে। অপরদিকে পূর্ব পাশের শিক্ষার্থী, বাসিন্দা ও পথচারীরা পশ্চিম পাশের ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও একমাত্র হাট ভুল্লির বাজার যাতায়াত ছাড়াও নীলফামারী, ভবানীগঞ্জ, রামকলা, বেলতলী এলাকার লোকজন ওই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতাযাত করছে পারছেন না।
আর এতে করে উভয় পাশের বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও পথচারী মিলে প্রায় ৩৩ হাজার জনসাধারণ ভীষণ বেকায়দায় পড়েছে। এছাড়াও ওই এলাকায় চাষিদের উৎপাদিত কলা, আদা, করলা, পটল, বেগুন বেচাকেনা করতে আসা ট্রাক, পিকআপ, যাত্রীবাহী রিকশা-ভ্যান, অটোবাইক ও মোটার সাইকেল চলাচলে দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তাই, এসব লোকের স্বাভাবিক চলাচল ফিরে আনতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নুর ইসলাম সহ ৫২ জনের একটি দল নিজ উদ্যোগে ভুল্লি নদীর ওই স্থানে ১৮০ ফুট একটি বাঁশের সাঁকো তৈরির কাজ করে যাচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, তারা গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্রীজের দুই পাশ থেকে সাঁকো পর্যন্ত প্রায় ৫০ ফিট রাস্তা তৈরি ও বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে নানা জনের কাছ থেকে ৩৮০টি বাঁশ সংগ্রহ করেন। আর এলাকাবাসীর স্বতঃফুর্ত অংশগ্রহণে রাত-দিন পরিশ্রম করে সাঁকো নির্মাণের কাজ প্রায় অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন করেছেন।
সাঁকো নির্মাণ কর্মী শেখ মোকলেছার রহমান, সন্তোষ কুমার, ইয়াকুব আলী এবং হবিবর রহমান বলেন, ব্রীজটা ভেঙে আমাদের চলাচলে খুব কষ্টকর হয়েছে। সরকারী ভাবে কাজ করতে অনেক দেরি হতে পারে। তাই আমরা নিজেরাই নিজেদের জন্য বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করছি।
বাসুলী ভুল্লি এলাকার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ এমদাদুল হক, জহুরুল ইসলাম, নফেল শাহ ও দীজেন্দ্রনাথ জানায়, আমরা নদীর পশ্চিম এলাকার মানুষ জমি চাষাবাদ আর ফসলক্ষেত দেখা শোনা করতে পূর্ব দিকে যাই। আর পূর্ব এলাকার মানুষ সারা দিন তো চলাচাল করেই। তাছাড়া এইসব এলাকার লোকজন বাজার খরচের জন্য ভুল্লির বাজারে সব সময়ই আসে। এটি এই এলাকার নিকটবর্তী একমাত্র হাট।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান এড. আ. স. ম. আতাউর রহমান বলেন, এই ইউনিয়নের ভুল্লি নদীতে ৭টি ব্রীজ ভেঙেছে। এছাড়াও গোটা ইউনিয়নে আরও ১১টি ব্রীজ, ৪ কি. মি. পাকা রাস্তা, ২ কি.মি. আধা পাকা রাস্তা এবং প্রায় ১০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সাঁকো নির্মাণ, রাস্তা তৈরি এবং ব্রীজ-কালভার্ট মেরামতের জন্য সাধ্যমত সহায়তা দিচ্ছি।
- কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।