সনৎ কুমার রায়, নীলফামারী প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
অনিয়ম-দুর্নীতি ও অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার সাংবাদিক সংগঠন ডিমলা রিপোর্টার্স ইউনিটির নয় জন সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে নীলফামারীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে নীলফামারী জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির আয়োজনে চৌরঙ্গীমোড়স্থ স্বাধীনতা স্মৃতি অম্লান চত্বরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন নীলফামারী জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি সহ উপজেলার সকল ইউনিটটির সদস্যরা।
নীলফামারী জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নুর আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সদস্য পারভেজ উজ্জলের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও আরটিভির জেলা প্রতিনিধি হাসান রাব্বী প্রধান, জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সদস্য আবু হাসান, একরামুল হক লাবু, তৈয়বুর রহমান মানিক, কিশোরগঞ্জ ইউনিটির সভাপতি বাদশা আলমগীর, ডিমলা উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম রেজা, কার্যকরী সদস্য জাহিদুল ইসলাম জাহিদ প্রমূখ।
উল্লেখ্য যে, জেলার ডিমলায় অভিনব কায়দায় যুগান্তরের ডিমলা প্রতিনিধি জাহেদুল ইসলাম জাহিদ ছিনতাইয়ের ঘটনা সাজিয়ে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে ডিমলা রিপোর্টার্স ইউনিটির নয় জন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। আর এ ঘটনায় জেলাজুড়ে সাংবাদিকদের মধ্যে এ ঘটনায় চরম ঘৃণা ও তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এরই প্রতিবাদে জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি পরবর্তী কর্মসূচী মানববন্ধন, কলম বিরতি,মুখে কাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলসহ সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষনা করা হয় মানববন্ধনে।
এর আগে গত ৭ মে জেলার ডোমারে রিপোর্টার্স ইউনিটির আয়োজনে ডিমলার যুগান্তর প্রতিনিধি জাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও কলম বিরতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডোমার বাজার রেলঘুন্ডি মোড়ে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন ও কলম বিরতী অনুষ্ঠানে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন নীলফামারী জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সকল সদস্য। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, একুশে টিভি’র জেলা প্রতিনিধি মোঃ আব্দুর রশিদ শাহ, চ্যানেল আই’র জেলা প্রতিনিধি আনোয়ারুল আলম প্রধান, মাই টিভি’র জেলা প্রতিনিধি আজিজুল বুলু ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
ঘন্টা ব্যাপী ওই মানববন্ধনে ৫ মিনিট কলম ও ক্যামেরা বিরতী পালন করা হয়।
ডোমার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি জুলফিকার আলী ভূট্টো’র সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন,সহ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রঞ্জু , সদস্য আবু হাসান, একরামুল হক লাবু, আব্দুল্লাহ আল মামুন সোহাগ, সাইফুল ইসলাম মানিক, ডোমার ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান হিল্লোল, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক রতন, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক রুবেল ইসলাম প্রমূখ। মানববন্ধনটির সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুর রশিদ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জেলার ডিমলায় অভিনব কায়দায় যুগান্তর পত্রিকার ডিমলা প্রতিনিধি জাহেদুল ইসলাম জাহিদ ছিনতাইয়ের ঘটনা সাজিয়ে নিজের ছিনতাইয়ের মামলার দায় থেকে রক্ষা পেতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ডিমলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে পাথর বালু উত্তোলনের নিয়ন্ত্রক জাহেদুল ইসলাম জাহিদ।
মামলার সূত্রমতে, দৈনিক মাতৃজগত ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল গ্রামবাংলা নিউজ’র ডিমলা প্রতিনিধি জাহেদুল ইসলাম গত ৩ মে নিজে বাদী হয়ে যুগান্তর পত্রিকার ডিমলা প্রতিনিধি জাহিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। যাহার মামলা নং-৪ তাং ০৩ মে’ ১৭।
মামলার আরজিমতে, উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও সামসুদ্দিন দীর্ঘদিন থেকে কুমলাই নদীতে অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন করছিলো। বালু উত্তোলনের এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য মামলার বাদী তার সহকর্মী আব্দুল কুদ্দুসকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করে। ওই সময় অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীরা তাদের নিয়ন্ত্রক হিসেবে এলাকায় পরিচিত জাহিদকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানায়। এরপরই অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়ে সাংবাদিক জাহেদুল ইসলাম ডিমলা থানায় পাথর বালুর নিয়ন্ত্রক জাহেদুল ইসলাম জাহিদ, আনোয়ার ও সামসুদ্দিনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অপরদিকে বাদীকে মিথ্যা ছিনতাইয়ের মামলায় জড়িয়ে জাহেদুল ইসলাম ঘটনার তিন দিন পর ৬ মে থানায় সাংবাদিক জাহিদসহ আরো ৮জন সাংবাদিককে আসামী করে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দায়ের করে।