রহস্যময় পৃথিবীতে মানুষই সেরা
রহস্যময় পৃথিবীতে মানুষই সেরা
-আওলাদ হোসেন
উপরে আকাশ শেষ নেই। বহুভাষি মানুষ আধিপত্য বিস্তারে যুদ্ধাংদেহী। প্রতিটি দেশই সীমান্তরক্ষী দ্বারা পরিবেষ্টিত। আনবিক বোমা ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের হাতেও আছে। প্রতিবাদী মনোভাব প্রতিটি তারণ্যের দীপ্তশপথ। ধোমক দিয়ে ছালা কাড়া যায় একবার। প্রতিবার প্রতি কাজে তা সম্ভব নয়। টকশোতে যারা রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বলিষ্ঠ কন্ঠে মানবাধিকার নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন অথবা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইসলামী দলগুলো বুঝাতে চাইছে যে, তারা বৃহৎদলগুলির চামচামি করতে রাজি না অথবা চায়ের ষ্টলে দেশবিরোধীর তালিকায় প্রায় সকল রাজনীতিবিদেরই জড়িত অথবা যারা সরাসরি মুক্তি সংগ্রামের সংগে শেষ জীবনে বুঝতে পারছে যে দেশের কর্ণধার বলতে কাদের বুঝায়, অসভ্য আর অশিক্ষিত জাতি বলতে কি বুঝায় তা বুঝবার মতো শক্তি আমাদের নেই কারণ আমরা বাকযুদ্ধে সারাক্ষণ অবতীর্ণ হলে প্রকৃত সমরাঙ্গনে আমাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। দ্বন্দ্ববাদ রহস্যময় পৃথিবীর একটি গূরুত্বপূর্ণ দিক যা স্রষ্টা কর্তৃক স্থাপিত যাতে শুধু এক দল দালালি করতে না পারে। যে কোনো সাধারণ মানুষই দেখতে পাচ্ছে যে, সংসারই একক কর্তত্ব করতে পারছে না। দৌরদন্ডপ্রতাপ পিতা বার্ধক্যে উপনীত হতেই ছেলেকে সমস্ত কর্তৃত্ব দিয়ে দিচ্ছে। সমাজে শিক্ষিতের পরিমান বৃদ্ধি পেলে সমাজ ভাগ হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার দূরত্ব কমানোর জন্য একাধিক মসজিদ নির্মান করা হচ্ছে। তাবলিগ জামাত ভাগ হয়ে একদল অপর দলের শত্রুতে পরিণত হচ্ছে। ৭০/৭৫ বৎসরে গড়ে ওঠা ইতিহাস ঐতিহ্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পীরদের পোয়াবার তারা ভাগ হয় না, সিল সিলা কায়েম রাখে। মালীক আল্লাহ, কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় দলের শেষ নেই যা আল্লাহর আইনে বারিত। বৃটিশ রাজত্ব শুনেছি দেশ ভাগ হয়েছে (Partition) ভোটের মাধ্যমে এখন ভোট হয় কাগজ কলমে। সব দলই ফলাফল ঘোষনার পর জানা যায় আসল ঘটনা। এ কাজে সমান পারদর্শী আমার একটি কবিতার নাম। ভোগা দিয়ে যে যত পারে, আর সরলমনা মৌলভীরা তাতে লাফিয়ে পড়ে। জাতি ২০০/৩০০ বৎসররের জন্য গোলামীর জিঞ্জির পড়তে বাধ্য হয়। Partition এ এমন ধোঁকা খেয়েও শিক্ষা হয় নাই, এখনও সেই ধারাই বজায় আছে শুধু সহজ সরল মনোভাবের কারণে। ভুল করলে আর ঠ্যাঙ গাতায় পড়লে উপায় নেই। কাল্পনিকভাবে যদি বলা হয় আমাদের দেশও শত্রু দেশের মতো পারমানবিক বোমা বানানোর পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘের সাহায্য ছাড়াই, তাহলে বুঝা যাবে কার শত্রু কে? মওলানা ভাসানী কোন দিন ভোট চান নাই। তার ডাকে মানুষ দলে দলে ভীড় জমাত। টাঙ্গাইলের মানুষ হিসেবে দেখেছি তার সংগ্রামী জীবন, দেখেছি তার শেষ জীবনের শেষ অধ্যায়। বাঙ্গালির ৭০/৭৫ বৎসরের জীবনে শুধু দেখেছি ছুতা খুঁজতে তাই ভাসানী তার শিষ্য বানাতে ভুল করেন নি। তার নামে বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে বটে কিন্তু সন্তোষের জন্য নির্ধারিত না। তার নামে কোন ট্রাষ্ট আছে কি না বা ট্রাষ্টের টাকায় সবকিছু চলে কিনা ইত্যাদি আমার জানা নেই, তবে প্রতিবৎসর ফারাক্কা লংমার্চ পালিত হয়ে থাকে। এই মূহুর্তে আল্লাহ পাক যদি শয়তানকে উঠিয়ে নেন তবে দেখা যাবে যে ভাইয়ে ভাইয়ে বিবাদ বাদ দিয়ে মসজিদমুখি হয়ে গেছে, স্বার্থ বলতে কিছু নেই, সবাই স্রষ্টাকে খুঁজে বেড়াবে এবং মৃত্যুকে দেখতে পাবে। আর এ কারনেই স্রষ্টা শয়তানকে সমস্ত শক্তি দিয়ে মানুষকে বিপথগামী করতে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ সৃষ্টি করেছে। এটাই দ্বন্দ্ববাদ, এটাই খেলা। মূল কথায় যাওয়ার আগে পৃথিবীর এই অপূর্ব রহস্য কথাটির অর্থ মর্ম বুঝে নেওয়ার জন্য অপ্রাসংঙ্গিক কিছু কথা বলে নিলাম। ভেবেছিলাম আমি একাই রাত্রে ঘুম হয় না এখন টকশো, ইউটিউব, ইন্টারনেট ইত্যাদি এবং কলাম লেখাতো আছেই তাতে দেখা যায় আমার চিন্তা ভবনা নগন্য, অনেক অনেক প্রতিভাধর আছেন যারা দেশ নিয়ে প্রতিনিয়ত চিন্তা করেন সে তুলনায় স্বার্থবাদীরা নগন্য মীর-জাফর একবার একজনই জন্মগ্রহন করে থাকে এবং দ্বন্দ্ববাদ আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত এবং শয়তান কর্তৃক লালিত একটি ব্যবস্থা যা আল্লাহপাক বলেছেন- কাইফা তাকফুরুনা……………ছুম্মা ইলাইহি তুরজাউন- অর্থ দেখে নিবেন। আল্লাহ পাককে দেখা যায় না, আকাশটি দিয়েই সে প্রমান করা যায় তিনি কত বড়, বাতাসকে দিয়েই তা বুঝা যায় তিনি কত সূক্ষ্ম, সূর্যকে দিয়ে বুঝা যায় তাঁর দাপট কত, চন্দ্রকে দিয়ে বুঝা যায় তার স্নিগ্ধতা কত মধুর। মানুষ তার দেহের ভিতরে অবস্থিত আত্মাকেও দেখতে পায় না অথচ অন্য কোনো প্রাণীর চাইতে মানুষ বুদ্ধিমান, শিক্ষিত তুলনাহীন। তবুও আল্লাহকে অস্বীকার করে, মানুষ অস্তিত্তহীন ছিল, আল্লাহই তাকে অস্তিত্ব দিয়েছেন। অন্যত্র সূরা ইয়াসিন এ বলা হয়েছে-মানুষকে শুক্র বিন্দু দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তবুও ঝগড়া বিবাদ করে। অন্যত্র বলা হয়েছে ঝগড়া বিবাদ মানুষের নিজস্ব সৃষ্টি। অবাধ্যদের সম্বন্ধে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাদের অবাধ্যতা আরও বাড়িয়ে দেন। পৃথিবী রহস্যময় নানান কারণে- ১। নিজে ঘুরে অন্যকে ঘুরায় ২। পানি পানে যদি ক্ষুধা নিবৃত হতো তাহলে পৃথিবী অচল হয়ে যেত ৩। মানুষের যদি মৃত্যু না হতো ৪। সৃষ্টাকে যদি দেখা যেত ৫। ধনী গরীব যদি না থাকতো ৬। বাতাস গ্রহনের যদি প্রয়োজন না থাকতো ৭। চন্দ্র সূর্য যদি না থাকতো ৮। পাহাড় পর্বত না থাকতো বা বৃষ্টি না হতো ৯। মানুষ যদি পাখা দিয়ে উড়তে পারতো ১০। বন্যপ্রানী মাংসাসী যদি না হতো বা সাপের বিষ না থাকতো ইত্যাদি। এমনিভাবে যদি যে কোন একটি কারণে পৃথিবী অচল হয়ে পড়তো তাহলে কেমন হতো? রহস্যময় পৃথিবীর রহস্য যদি মানুষ বুঝতে পারতো। কিন্তু স্রষ্টা পৃথিবীকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে তিনি অদৃশ্য, নিরপেক্ষ। মানুষ কর্মফল ভোগ করে ইহকালে এবং পরকালে। এখন মানুষ রহস্যময় কেন? মানুষ সৃষ্টি যে কত কারুকার্যময় তা এনাটমি থেকে উল্লেখ করা প্রয়োজন যা মানুষ সৃষ্টি করেননি বা করতে পারেননি। আল্লাহপাক কুন ফাইয়াকুন এর মাধ্যমে করেছেন। ডাক্তারী বিদ্যা তবে সাধারণ মানুষ জানলে উপকৃত হবে। মানবদেহের গঠন প্রণালী যে কত বৈচিত্রময় সূক্ষ্ম কারুকার্য দ্বারা সাজানো এবং কত প্রকারের যন্ত্রপাতি দ্বারা তৈরি তা সত্যিই বিষ্ময়কর। দেহের মধ্যে যে সব কারখানা অনবরত কাজ করছে তার মধ্যে প্রধান হলো-হার্ট, ফুসফুস, লিভার, পাকস্থলী, কিডনি, রক্তসঞ্চালণ, পরিপাক তন্ত্র, ব্রেইন সর্বোপরি মন। এদের কাজ এতই সুশৃঙ্খল যে, রক্তের প্রবাহ, হজম প্রক্রিয়া, মল-মূত্র ত্যাগ, বাতাস গ্রহণ, হাজারো প্রক্রিয়া ২৪ ঘন্টা কার্যকর রয়েছে টেরও পাওয়া যায় না। টের পাওয়া যায় অসুখে কোন যন্ত্রের কত গুরুত্ব কত প্রয়োজন।
এর ৩টি কাজ- 1. Blood with waste- Renal artery 2. Filtered blood up 3. Waste to the bladder under. সহজ ভাষায় বলা হয় Filter বা ছাকনি। বর্জ ২ প্রকার মল ও মূত্র। মূত্র নিষ্কাষনের জন্য কিডনি এ পর্যায়ে কাজ করে এবং দেহের ভারসাম্য বজায় রাখে, যিনি বানিয়েছেন তিনিই শুধু জানেন, প্রস্রাব কিভাবে কোন পদ্ধতিতে দেহ থেকে বের করতে হবে। তিনিই বড় বৈজ্ঞানিক। গঠন প্রণালী বর্ণনা করাতো আরো কঠিন (চিত্র)।
রক্ত কিডনিতে যায়, সেখানে পরিশ্র“ত হয়ে বিশুদ্ধ রক্ত উপরের দিকে যায় এবং বর্জ বা মূত্র ইউরেটার দিয়ে মূত্রথলিতে প্রস্রাবের ধারা বইতে থাকে। সবকিছু পরিচালিত হয় যন্ত্রচালিতের মত।
ব্লাড সারকুলেশন-রক্ত সংবহণ তন্ত্রঃ রক্ত সংবহণ তন্ত্র ৫টি অংশ- রক্ত-হৃদপিন্ড-ধমনী-শিরা-কৈশিক জালিকা। হৃদপিন্ড একটি পাষ্প- অক্সিজেন গ্রহণের জন্য ফুসফুসে প্রেরন করে, অক্সিজেনযুক্ত রক্ত ফুসফুস থেকে হৃদপিন্ডে আসার পর সারা দেহে ছড়িয়ে দেয়। হৃদপিন্ড ৪টি প্রকোষ্ঠ নিয়ে গঠিত। ডান অলিন্দ, ডান নিলয়, বাম অলিন্দ, বাম নিলয়। ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের মাঝে ট্রাইকাসপিড কপাটিকা থাকে এবং বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়ের মাঝে বাই কাসপিড কপাটিকা থাকে।
৩। পরিপাকতন্ত্র-
পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত, সিকাম, মলাশয়, মলনালী, পায়ুপথ, কোলন, ডিওডেনাম, জেজুনাম, ইলিয়াম, ইত্যাদি কার্যকর থাকে।
৪। লিভারঃ
যকৃতে পিওরস উৎপন্ন হয়। Hepatic vein Inferior venacava, portal vein, Gall bladder. এতে (লিভারে) রয়েছে বাইল, হরমোন, ভিটামিন উৎপাদন, Digestion, Blood supply, Metabolism-বিপাক ইত্যাদি কার্যকর রয়েছে।
৫। ব্রেইন- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ দেহ পরিচালনায় গুরু ও লঘু মতৃষ্ক, Medula, Parotid, gland সহ কোমা বা স্ট্রোক দেখা দেয়।
৬। মন- Mindt-মন যে কি তা মন নিজেও জানে না। দেহের প্রতিটি অঙ্গ পরিচালিত হয় এই মন দ্বারা যা অদৃশ্য। আর এই মনকে যিনি পরিচালনা করেন তিনিও অদৃশ্য। কার মন যে কিরুপ তা কেউ বলতেও পারে না,দেখতেও পারে না। জগতের অন্য কোন প্রাণীর এরুপ কোন ক্ষমতা আছে কি না দেখা যায় না বা প্রমানীত না। মানুষ একক সত্ত্বা এবং রহস্যময় দুই অদৃশ্যের অপূর্ব মিল। তবে একটি স্রষ্টা স্থির, অপরটি সৃষ্টি চলমান। একটি ঘুরায় অপরটি ঘুরে। স্থির জগতের মৃত্যু নেই তাই মানুষের মৃত্যুর মাধ্যমে স্থির জগতে প্রবেশের সুযোগ হয় এবং স্থায়ী জীবন লাভ করে। এটাই জীবন দর্শন। প্রিয় পাঠক যাদের বয়স ৬৫ বা ৭০ তারা ইন্টারনেটে ২৪ ঘন্টা সুললিত কণ্ঠে তেলাওয়াত করা কোরআনের আয়াত চক্ষু বন্ধ করে শুয়ে শুয়ে শুনতে পারেন, সে সুযোগ হাতের কাছেই আছে। তাবলীগ জামাত বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন অথবা কোন পীরের দরবারে একটু কষ্ট করে আল্লাহর বাণী ধ্বনিত হতে পারে। তবে কাজটি কঠিন। আশা করা যায় রাজনীতির ভাগ্যাকাশে ঝড়ঝঞ্জা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে কারো পাকা ধানে মই দেয়া হবে না এবং কেউ কারো পাকা ধানে মই দিতে আসবে না। আর যদি সুললিত কণ্ঠের সঙ্গে চক্ষু চির তরে বুজে আসে তাহলে আমি মনে করি ঘুম হতে জেগেই আদর আপ্যায়নের সহস্র ফুল্গুধারা প্রবাহিত হতে থাকবে। এটাইতো জীবন।
৭। অন্যান্য- প্রজননতন্ত্রঃ
দেহের বাহিরে সৌন্দর্যমন্ডিত নারী ও পুরুষ যুগল যৌন পরিমন্ডলে প্রেমের উৎকৃষ্ট আকর হয়ে প্রতিটি স্তরে সবচেয়ে আশ্চর্য জনক উপায়ে বিভিন্ন যৌনাঙ্গের মাধ্যমে Female Reproductive System ও Male Reproductive Syste কাজ করে এবং কবিতায় দৃশ্য ও অদৃশ্য জগতের অপূর্ব সৃষ্টি হয়ে পরে নিজেরাই দন্ডমুন্ডের কর্তা হয়ে মহান স্রষ্টাকে ভুলে বা বাদ দিয়ে নিজেরাই স্রষ্টার স্থান দখল করে আছে। অথচ এই বিশাল পৃথিবী,অনন্ত আকাশ,কোটি কোটি গ্রহ নক্ষত্র কোথা হতে কিভাবে এলো তার কোন হদিস নেই। আস্তিক আর নাস্তিক দ্বন্দ্ববাদ দিয়ে পৃথিবী ঘিরে আছে। একটি পজিািটভ অপরটি নেগেটিভ। মানুষ তোমার পরাজয় বা মৃত্যু হলে পৃথিবীতে কোটি কোটি তোমার মত তোমার স্থান দখল করবে, এক মুহুর্তের জন্যও থেমে থাকবে না। ১ হাজার, ২ হাজার, ৫ হাজার, ১০ হাজার বৎসর পর তোমার নাম ঠিকানা দূরের কথা কোন কিছুরই কোন অস্তিত্বই থাকবে না। কুল্লু মান আলাইহা ফানিউ ওয়া ইয়াবকা ওয়াজহু রাব্বিকা জুল জালালি ওয়াল ইকরাম।