ওসি মোয়াজ্জেমকে নেওয়া হয়েছে সাইবার ট্রাইব্যুনালে
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে এবং তা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। ফেনী পুলিশ ও শাহবাগ থানা পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় তাকে শাহবাগ থানা থেকে গাড়িতে করে সাইবার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় তাকে বহনকারী গাড়িটি শাহবাগ থানা থেকে রওনা হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় সাইবার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায়।
এর আগে ফেনীর সোনাগাজী থানায় তার অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট (গ্রেফতারি পরোয়ানা) থাকায় সেই থানার পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল সকালে ঢাকায় আসে। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ফেনী পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
এরপর তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নেয়া হয়। হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোতালেব হোসেন বলেন, ২টার দিকে তাকে সাইবার আদালতে তোলা হবে।
এরও আগে রোববার শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় মোয়াজ্জেমকে। এরপর আজ সকালে তাকে ফেনীর সোনাগাজী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
ওই ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি খতিয়ে দেখতে ১৩ এপ্রিল ডিআইজি এসএম রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ২ মে প্রতিবেদন পুলিশ সদর দফতরে জমা দেয়। ফেনীর এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার এবং সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, এসআই ইকবাল ও এসআই ইউসুফের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।
রাফির পরিবার ও এলাকার সচেতন মহলের অভিযোগ, ওসির মদদে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা এলাকায় দাপট নিয়ে চলতেন। একাধিকবার অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে ছাত্রী নিপীড়নের গুরুতর অভিযোগ উঠলেও তার কোনো সুরাহা হয়নি। সাহস ও প্রতিবাদ নিয়ে রাফি রুখে দাঁড়ানোয় বেরিয়ে এসেছে সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসা ঘিরে নানা অপকর্মের কাহিনী।