আজ ১০ই ডিসেম্বর ঘাটাইল হানাদার মুক্ত দিবস
মোঃ সবুজ সরকার সৌরভ, ঘাটাইল(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
আজ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদারের কবল থেকে মুক্ত হয় ঘাটাইল। দীর্ঘ নয় মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঘাটাইলের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কাদেরিয়া বাহিনীতে বিশেষ বীরত্বের অবদান রাখেন এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা। কাদেরিয়া বাহিনীর নেতৃত্বে যমুনা নদীতে পাকিস্তানী যুদ্ধ জাহাজ ধবংস করা হয়।
এ সময় মুক্তিসেনারা ২১ কোটি টাকার গোলা বারুদ ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে মুক্তিযুদ্ধের নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী পাকিস্তানী বাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে দুর্বার লড়াই গড়ে তুলেন। মাকড়াই যুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর হাতে গুলি লাগলে তিনি মারাত্বক আহত হন। ৭ ডিসেম্বর ভুঞাপুর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় ৮ ডিসেম্বর রাত্রেই ঘাটাইলের প্রতিটি পাকবাহিনীর অবস্থানে এক যোগে আক্রমন করা হবে খোদ কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে।
এই মর্মে প্রতিটি কোম্পানী ও কোম্পানী কমান্ডারদের আক্রমন স্থল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই লক্ষে ৫ হাজার মক্তিযোদ্ধাকে ৩০টি কোম্পানীতে বিভক্ত করে ৫টি মূল দলে ভাগ করে আক্রমনের স্থান নির্ধারণ করা হয়। ৮ ডিসেম্বর রাত ১১টায় হাবিবুল হক বেনুসহ আরও একটি কোম্পানী রতনপুর অবস্থান নেয়। গোলাপের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে বানিয়া পাড়া সেতুর পশ্চিম পাশে তেলেঙ্গাপাড়া গ্রামে অবস্থান নেয়। ৯ ডিসেম্বর কাদের সিদ্দিকীর নিদের্শ অনুযায়ী কালিদাস পাড়া, গুণগ্রাম, ঘাটাইল সদর ও বানিয়াপাড়া সেতু একযোগে আক্রমণ করা হবে। সে পকিল্পনা মোতাবেক ভোর চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত চতুর্দিক থেকে বৃষ্টির মত গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘাটাইল থানা আক্রমণ করেন মুক্তি বাহিনীরা। পরে কমান্ডার হাবিব ভোরে বানিয়া পাড়া সেতু, মেজর মোস্তফা কালিদাস পাড়া সেতু দখল করে ঘাটাইল থানার দিকে অগ্রসর হন। কাদের সিদ্দিকী নিজেই পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ করেন। এ যুদ্ধে ৫০ জন পাকিস্তানীহানাদার নিহত ও ১৫০ জন বন্দী হয়। এই দিন সম্পূর্ণরূপে ঘাটাইল থেকে হানাদার মুক্ত হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে ঘাটাইল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করেছেন।