সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুবার্ষিকীতে কর্মসূচি ছিল না
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গতকাল। সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একজন মাত্র কেন্দ্রীয় নেতা বনানী কবরস্থানে প্রয়াত নেতাকে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য যান।
বিকাল ৫টায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সৈয়দ আশরাফের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে প্রয়াত নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সংসদ সদস্য সেলিম আলতাব জর্জ, সাবেক ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান মনির, রিয়াজুল আহসান খান, মাজারুল আলম সুমন প্রমুখ। অবশ্য সৈয়দ আশরাফের বোন ও কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূরসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা গতকাল সকাল ৮টায় ফুল দিয়ে প্রয়াত নেতাকে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানো শেষে মোনাজাতের আয়োজন করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।
গণমাধ্যমের কর্মীরা সকাল থেকেই বনানী কবরস্থানে সৈয়দ আশরাফের কবরের সামনে উপস্থিত ছিলেন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের খবর সংগ্রহ করতে। সারাদিন অপেক্ষা করে হতাশ হন গণমাধ্যম কর্মীরা। এ খবরে দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
সৈয়দ আশরাফের কবরের পাশে অপেক্ষমাণ ক্যামেরা ও সাংবাদিকদের একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী বাণী ইয়াসমিন হাসি লিখেন, ‘ছবিটা আজ সকালের। বনানী কবরস্থানে সাংবাদিকদের অপেক্ষা। আওয়ামী লীগের বড় কোনো নেতা হয়তো সৈয়দ আশরাফ ভাইকে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন; এই ভেবে উনারা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছিলেন। না, কেউ যাননি। কারও সময় হয়নি। জীবিত সৈয়দ আশরাফের চেয়ে মৃত সৈয়দ আশরাফ আরও বেশি শক্তিশালী! লাখো কর্মীর আবেগ সৈয়দ আশরাফ। অনুভূতির আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের স্বল্পভাষী, ডেডিকেটেড এবং প্রজ্ঞাবান আশরাফ ভাইকে মননে মগজে ধারণ করে। সেই নাম মোছার সাধ্য কারও নেই।’
বিকাল ৫টায় মাহবুব-উল আলম হানিফের শ্রদ্ধা নিবেদনের ছবিটি শেয়ার করে বাণী ইয়াসমিন হাসি আবার লেখেন, ‘সকালে খুব মন খারাপ করে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম নিজের ওয়ালে। আওয়ামী লীগের কোনো নেতা আশরাফ ভাইকে শ্রদ্ধা জানাতে যাননি বলে। কিছুক্ষণ আগে পাওয়া এই ছবিগুলো দেখে আমি কাঁদছি। যাক কেউ একজন তো লাখো কর্মীর মনের কথা আর চোখের ভাষা বুঝল। বঙ্গবন্ধুর বাঙালিদের পক্ষ থেকে সৈয়দ আশরাফকে স্মরণ করার জন্য ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা মাহবুব-উল আলম হানিফ ভাই।’
গতকাল বিকাল ৩টার পরে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ফেরার পথে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া এবং মোনাজাত করেন। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুউদ্দিন আহমেদ তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় : ১/১১ কঠিন সময়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করা সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুবার্ষিকীতে দলীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি না থাকায় গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে।
সিনিয়র সাংবাদিক জায়েদুল আহসান পিন্টু ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ দুই বছর হলো সৈয়দ আশরাফের চলে যাওয়ার। তাঁর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে দলের কেন্দ্রীয় কোনো নেতা সময় পাননি।’
ডিবিসি নিউজ চ্যানেলের সংবাদকর্মী জাহিদ হাসান ফেসবুকে লিখেছেন ‘তবে কি আওয়ামী লীগ থেকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার উঠে যাচ্ছে! সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যায়নি দলটির জাতীয় নেতারা। নেই কোনো আনুষ্ঠানিকতা। আবদুর রাজ্জাক, জোহরা তাজউদ্দিন, আবদুস সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ কোনো জাতীয় নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে দলীয় কোনো কর্মসূচি নেই!’
সাবেক ছাত্রনেতা রাশেদুল মোহাম্মদ সাবেক ছাত্রনেতাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের ছবি নিজের ফেসবুকে দিয়ে লেখেন, ‘মহাপ্রয়াণের এই দিনে কে ফুল দিতে গেল আর কে যায়নি, সে বড় কথা নয়… বাংলার মানুষের অতল শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সৈয়দ আশরাফ আছেন হৃদয়ের গহিনে, রাজনৈতিক অভিধানে আপনি এক অক্ষয় বর্ণমালা…।’