অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী ভবন থেকে নামতে পারেননি, পুড়ে মরলেন স্বামীও
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বন্ধু ছিলেন রিয়া ও রিফাত। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। প্রেম থেকে বিয়ে করে বছর দুয়েক হল। আর কদিন পরেই প্রথম সন্তানের মুখ দেখতেন তারা। সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলেন রিয়া। প্রথম বাবা হওয়ার উন্মাদনা কাজ করছিল রিফাতের মধ্যেও।
কিন্তু পুরান ঢাকার চকবাজারের আগুন কেড়ে নিল সবকিছু। রিয়া-রিফাতের বাবা-মা হওয়ার স্বপ্নও পুড়ে ছাড়খাড় হয়ে গেল।সঙ্গে তারাও।
চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের ‘ওয়াহিদ ম্যানশন’ ভবনের তৃতীয় তলায় স্ত্রী রিয়াকে নিয়ে থাকতেন রিফাত। বুধবার রাতে আগুন লাগার পর অন্ত:স্বত্ত্বা রিয়া ভবন থেকে নামতে পারেননি, তাই নামেননি রিফাতও। গর্ভের সন্তানসহ দু’জনেরই আগুনে পুড়ে হয়েছে করুণ মৃত্যু।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে মরদেহ শনাক্ত করতে আসা রিয়া ও রিফাতের স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
রিয়া ও রিফাতের বন্ধু আল-আকসার সাজিদ জানান, ওয়াহিদ ম্যানশন ভবনের যে বাসায় রিয়া ও রিফাত থাকতেন তা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেখানে গিয়ে তাদের না পেয়ে সোজা ছুটে এসেছেন হাসপাতাল মর্গে। তিনি জানান, চেহারা দেখে মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
সাজিদ জানান, রিয়া অন্তঃসত্ত্বা হওয়া ছাড়াও নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিল। আগুন লাগার পর রিফাতের পরিবারের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। কিন্তু রিয়াকে নিয়ে নামতে পারছিল না বলেই রিফাতও নামেনি। দু’জনই পুড়ে মারা যায়।
সাজিদ জানান, এ খবর শুনে রিয়ার পরিবারের লোকজনও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। রিফাতের পরিবারের লোকজন এসেছেন।তারা লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত লাশ শনাক্ত করা যায় নি।
প্রসঙ্গত রাজধানীর চকবাজার এলাকার নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবনে বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুনের ভয়াবহতা কিছুটা কমলেও আবারও বেড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট একযোগে কাজ করে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। উদ্ধার অভিযান চলে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এ ঘটনায় অন্তত ৭০ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন ৪১ জন। উৎস-যুগান্তর।