আইজিপির বদলে চিফ অব পুলিশ, একাধিক আইজিপি পদ, মেডিকেল কলেজ, দূতাবাসে প্রতিনিধি ও স্বতন্ত্র পুলিশ বিভাগ
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) বদলে ফোর স্টার জেনারেল পদমর্যাদার ‘চিফ অব পুলিশ’ পদ চাইছে পুলিশ। এর বাইরেও একাধিক আইজিপি পদ, মেডিকেল কলেজ, আরও ১ লাখ পুলিশ নিয়োগ, বিভিন্ন দূতাবাসে পুলিশসহ একগুচ্ছ দাবি উঠছে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহে। ‘পুলিশ-জনতা ঐক্য গড়ি, মাদক-জঙ্গি নির্মূল করি’ স্লোগানের পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এসব দাবি তুলবেন বলে নিশ্চিত করেছেন সূত্র। ২১ জানুয়ারি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অনুষ্ঠিত ‘পলিসি গ্রুপ’-এর সভায় দাবিদাওয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি ও ইউনিট প্রধান উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে পুলিশ বিভাগে মোট জনবল রয়েছেন ২ লাখ ১১ হাজার। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী পাঁচ বছরে ১ লাখ নতুন জনবল নিয়োগের বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। এ ছাড়া পুলিশের জন্য আরও যানবাহন কেনাসহ অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্টের বিষয়টি দাবি হিসেবে উত্থাপনের পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। সঙ্গে থাকছে স্বতন্ত্র পুলিশ বিভাগের দাবি। যদিও একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী পাঁচ বছরে পুলিশ বিভাগে ৫০ হাজার নতুন জনবল নিয়োগের বিষয়ে এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন। ২০ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে তিনি এ ইঙ্গিত দেন। পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনকল্যাণে দিন দিন পুলিশের ভূমিকা বাড়ছে। এরই মধ্যে মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) পদকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছে। আইজিপির গাড়িতে থ্রি স্টার ব্যবহার করা হচ্ছে, যা অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। পুলিশের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বাড়াতে সরকারকে আরও উদ্যোগ নিতে হবে। বাড়াতে হবে জনবল। কারণ পুলিশে নতুন অনেক ইউনিট গঠন করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে পুলিশ কর্মকর্তা অ্যাটাশে রাখার জোর দাবি জানানো হবে। বাংলাদেশে অবস্থিত প্রায় সব বিদেশি দূতাবাসে পুলিশ কর্মকর্তা অ্যাটাশে রয়েছেন। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও প্রবাসীদের বিভিন্ন আইনগত সমস্যা সমাধানে এবং অধিকার আদায়ে অনেক গ্যাপ থেকে যায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সেসব ক্ষেত্রে খুব একটা দক্ষ নন। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এ সরকারের সময়ে পুলিশকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এবার বিশাল এই বাহিনীর জন্য পুলিশ লাইনসে ২৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল স্থাপনেরও দাবি জানানো হবে। পুলিশ সদস্যদের সুচিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজন একটি মেডিকেল কলেজ। এ ছাড়া আবাসন সংকট দূর করা, থানাগুলোয় যানবাহন ও লোকবল বাড়ানোর দাবি জানানো হবে। এবারের পুলিশ সপ্তাহে বিডি পুলিশ হেল্প লাইন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে সেবা প্রাপ্তি, আইজিপি কমপ্লেইন সেল, নারী ও শিশুবান্ধব পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং ইত্যাদি সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা হচ্ছে। সম্প্রতি রাজশাহীতে পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, কর্মক্ষেত্রকে সেবার কেন্দ্রস্থলে পরিণত করতে হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বাস্তবায়নে পুলিশ সাফল্য দেখিয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি মো. সোহেল রানা জানান, পুলিশ সপ্তাহের সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এবারের স্লোগান থাকছেথ- ‘পুলিশ-জনতা ঐক্য গড়ি, মাদক-জঙ্গি নির্মূল করি’। তিনি বলেন, সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গি দমন ছাড়াও পুলিশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে। কমিউনিটি ব্যাংক নামে পুলিশের বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ৯৯৯ সার্ভিসসহ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাধীনতা লাভ, পুলিশ মেমোরিয়াল ডে করা হয়েছে।