কিম জং এর ভয়ানক বিলাসবহুল জীবন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
২৭ বছর বয়সে দায়িত্ব নেয়া উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শাসনভার হাতে নেয়ার পরই তিনি পুরো বিশ্বের কাছে হয়ে উঠেন অসীম আগ্রহের অন্যতম কারণ। বিলাসিতার ব্যাপারে কিম জং উন একেবারেই সিদ্ধহস্ত, বাহারী সিগারেট, প্রাইভেট জেট এবং সুস্বাদু ক্যাভিয়ার – উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের অভাব নেই কিছুরই। আর তিনি যখন এই বিলাসবহুল জীবন উপভোগ করছেন তখন শুধু ধড়ে প্রাণ পাখিটাকে আটকে রাখতে নজিরবিহীন সংগ্রাম করতে হচ্ছে উত্তর কোরীয়দের। অদ্ভুত এ শাসকের অদ্ভুত বিলাসীতা নিয়েই আমাদের আজকের এ সংকলন।
দেশে তৈরি মদ একাধারে সস্তা এবং সুলভ হলেও তা মুখে রোচে না উনের। নেতা এবং তার অভিজাত নিকটজনদের জন্য মদ আমদানি করতে বছরে ৩০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় হয় উত্তর কোরিয়ার কোষাগার থেকে। উনের পছন্দের অ্যালকোহল হুইস্কি এবং কোগন্যাক, তবে তা যেনতেন ব্র্যান্ডের হলে চলবে না। হেনেসির মতো দামী ব্র্যান্ডই চাই তার যেগুলোর প্রতি বোতলের দাম ২ হাজার ডলারেরও বেশি। খাবার-দাবারের বেলায় কোরীয় নেতা কিমের যেন মোঘলাই রুচি। ডেনমার্কের থেকে মানসম্মত পোর্ক, ইরান থেকে ক্যাভিয়ার, চীনা তরমুজ, আর গোমাংস থেকে তৈরি জাপানের অত্যন্ত সুস্বাদু ‘কোবে’ না হলে তার চলে না। কিম এবং তার কাছের লোকদের খাবার-দাবারে বছরে কত খরচ হয়, তা নির্দিষ্ট করে না জানা গেলেও অঙ্কটা মিলিয়নের ঘর ছাড়াবে নিঃসন্দেহে।
উত্তর কোরিয়ার সাধারণ জনগণের পরিস্থিতি কিন্তু পুরো উলটো। সরকারের পক্ষ থেকে আসা নামমাত্র রেশনের ওপর নির্ভরশীল বেশিরভাগ মানুষ। ২০১৫ সালের আগস্টের এক হিসাব অনুযায়ী, খাদ্য হিসাবে প্রতি সাধারণ উত্তর কোরীয় নাগরিকের জন্য দৈনিক বরাদ্দ ২৫০ গ্রাম শস্যদানা মাত্র। প্রোটিন এবং শুকনো মাছ বা স্কুইডের মতো খাবার অত্যন্ত দুর্লভ। জনগণের প্রায় অধিকাংশই ভয়ানক অপুষ্টির শিকার।
বাহারি সিগারেট হাতে বিলিয়ন ডলার থাকলে নিশ্চয়ই রাস্তার পাশের সস্তা সিগারেট ফুঁকতে মন চাইবে না আপনার। কিমেরও তাই। বাহারি ফ্রেঞ্চ সিগারেটের পেছনে বিস্তর খরচ করেন তিনি। ফরাসি কোম্পানি দ্য ইয়েভস সেইন্ট লরেন্ট এর বানানো সিগারেটই তার পছন্দ, যার প্রতি পিসের দাম ৪৪ ডলার করে। আর এই সিগারেট বহনের জন্য যেই চামড়ায় তৈরি ব্যাগ, তার দাম ১৪৪ ডলার। কিম জং উন কোথায় থাকেন এর কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব দেয়াটা কষ্টকর। কারণ পুরো দেশজুড়ে তার ১৭টা প্রাসাদ তো আছেই, আছে একটা নিজস্ব দ্বীপও। আর বাদবাকি জনসংখ্যার প্রায় সবার বাস ভগ্নদশায় থাকা বাড়িতে, যেগুলোতে হিটিং ব্যবস্থা বা পানির সরবরাহই নেই। পানি সংগ্রহ করতে যেতে হয় অনেক দূরের জলাধারে, আর ঘর গরম করতে কাঠ কেটে আনা ছাড়া উপায় নাই। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের তথ্য অনুযায়ী, কিম জং উনের ব্যক্তিগত ঘড়ির সংগ্রহের যে মোট দাম, তা প্রায় ৮.২ মিলিয়ন ডলার।