খামোশ

খামোশ
সিডনীর কথকতা-২৭
রণেশ মৈত্র (সিডনী থেকে)
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ

আজ অনলবর্ষী বাগ্মী, সত্যানুরাগী জননেতা, যিনি মজলুম জননেতা বলে সর্বমহলে সুপিরিচিত ছিলেন, সেই মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে বড্ড বেশি করে মনে পড়ছে। সে মওলানা ভাসানীকে মনে পড়ছে যিনি ১৯৪৮ এ পূর্ব বাংলার সকল গণতান্ত্রিকমহল সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের যোগ্য আহবায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে গনসম্পৃত্তি ঘটাতে বিপুল অবদান রেখে সকল মহলের শ্রদ্ধার পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন।

মনে পড়ছে সেই মওলানা ভাসানীকে যিনি আপোষহীন মনোভাব নিয়ে তাঁর প্রিয় বয়োকণিষ্ঠ কিন্তু অসীম সম্ভানাময় তরুণ সহকর্মী শেখ মুজিবর রহমানকে (যাঁকে তিনি ডাকতেন ‘মজিবর’ বলে) ভাষাদ্রোহী খুনী নুরুল আমিনের নেতৃতা¡ধীন মুসলিম লীগ সরকারকে পরাজিত করে পূর্ব বাংলায় একটি গণতান্ত্রিক জনবান্ধব সরকার গঠনের লক্ষ্যে তার নিজের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ. কে ফজলুল হকের যৌথ নেতৃত্বে একটি যুক্তফ্রণ্ট গঠন করে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে মুসলিম লীগকে ধরাশায়ী করে, চিরতরে সমাধিস্থ করে, একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সরকার শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের নেতৃত্বে জনগণকে উপহার দিতে নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছিলেন। পেরেছিলেন বাঙালিকে বাঙালি জাতীয়বাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধিতা।

না, আমি এই নিবন্ধটি মওলানা ভাসানীর অসাধারণ গুণাবলী বর্ণনার জন্য লিখতে বসিনি। তবে অদূর ভবিষ্যতই তা আমার স্মৃতি থেকে লিখবার বাসনা পোষণ করে বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে দেশে তাঁর মতো নেতৃত্বের নতুন করে প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি বলেই তাঁর বহুল উচ্চারিত “খামোশ” শব্দটিকেই নিবন্ধটির শিরোনাম নিয়ে আমার প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদেরকে চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে বিচার বহির্ভূত হত্যালীলার চরম দুঃখজনক ঘটনাবলীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষনণ করছি।

শুরুতে একমাত্র স্পষ্ট করেই বলতে চাই যে মাদক-বিরোধী অভিযানের আমি একজন উদ্যোগী সমর্থক কারণ আমাদের বর্তমান প্রজন্মের প্রতিশ্রুতিশীল যুবসমাজকে বাঁচাতে হলে সাধ্যানুযায়ী মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গঠন অপরিহার্য। আবার তেমন একটি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দেশের আনাচে কানাচে শহরে, নগরে, বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা মাদক উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ী, মাদক চোরাচালানী, মাদক-আমদানীকারক ছোট বড় ব্যবসায়ীকে অবশ্যই গ্রেফতার করতে হবে দল-মত নির্বিশেষে তাদের সকলকে সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে প্রয়োজনে এবং অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় ফাঁসিও দিতে হবে।

একদা যখন বলি, তখন একথাও দ্বিধাহীনভাবে উচ্চারণ করি, বিচার বহির্ভূতভাবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে এক ঘন্টার জন্যও কারাদ-, সামান্যতম জরিমানা বা কোন প্রকার দ- প্রদান করা যাবে না। বা বিচার বহির্ভূত হত্যা তো দূরের কথা কোন প্রকারে কাউকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিতও করা যাবে না।

এত কথার আয়োজন সাম্প্রতিকতম হত্যালীলা যা নিঃসন্দেহে একটি চরম নিন্দনীয় রাষ্ট্রীয় হত্যালীলা যার ফলে টেকনাফের ওয়ার্ড কমিশনার একরামুলকে নির্মম হত্যার শিকারে পরিণত করলো রাষ্ট্র নিয়োজিত আইন শৃংখলা বাহিনীরা- তাকে কেন্দ্র করেই।

প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের নিশ্চয়ই স্মরণে আছে যে সরকার কর্তৃক মাদক বিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে সকল মহল থেকে দাবি উত্থাপন করা হচ্ছিল যে কুখ্যাত মাদক স¤্রাট, ইয়াবা চোরাচালানীর অন্যতম শীর্ষ নেতা এবং অপরাধী হিসাবে গ্রেফতারের তালিকাও অন্তর্ভুক্ত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য কক্সবাজারের বদি-কে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক। দেশের সকল প্রান্ত থেকেই ওয়াকিবহাল মানুষ এমন দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠার পর আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্ভবত অত্যন্ত বিচলিত হয়ে গণমাধ্যমে জানালেন, তিনি ( অর্থাৎ বদি) তো একজন জনপ্রতিনিধি তাই তাকে ধরা অত সহজ নয়। সাক্ষ্য প্রমাণ পেলে যদি বুঝা যায় যে তিনি অপরাধী তখনই কেবল তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে ।

ভারত সফর শেষে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যখন একজন সাংবাদিক বদির গ্রেফতার প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন তিনি জবাবে বললেন অপরাধী হলে বদি কেন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক বিরোধী চলমান অভিযানে কোন প্রকার বাড়াবাড়ি যদি কেউ করে তাকেও সানাম্যতম ছাড় দেওয়া হবে না।

কিন্তু, ঘটনা পরম্পরায় বলতে বাধ্য হচ্ছি বাস্তবে সরকারের ঐ মনোভাবের কোন প্রতিফলন নেই। বিচার বহির্ভূত হত্যালীলা একদিকে চলছে দ্বিধাহীনভাবে অপরদিকে রাঘববোয়ালের দিব্যি বিচরণ করে ফিরছে সীমাহীন নির্বিঘেœ।

তাঁরা দু’জনই জন প্রতিনিধি। উভয়েই তারা কক্সবাজারের বাসিন্দা। একজন হলেন ওয়ার্ড কমিশনার একরামুল হক, অপরজন হলেন সংসদ সদস্য বদি। এই দুজনের ক্ষেত্রে কি আইন সমভাবে প্রয়োগ করা হলো? এ প্রশ্নে আজ বিশ্বজুড়ে । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহ বিশেষ করে ফেসবুকের বিগত দু’দিনে দেশ বিদেশ থেকে প্রদত্ত পোষ্টগুলি তার সুষ্পষ্ট প্রমাণ ।

বিশ্বব্যাপী প্রচারিত একটি অডিও ক্লিপ নিতে একরামুলের স্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্য যে নিদারুণ সত্যটি তুলে ধরলো যে মাদক বিরোধী অভিযানের নামে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলি, যাদের একাংশ নিজেরাই মাদকের অবৈধ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত, এ যাবত প্রায় দেড়শত মানুষকে বিচার বহির্ভূত নির্মম হত্যালীলার অসহায় শিকারে এ যাবত ( জুন ৩ ২০১৮ পর্যন্ত) পরিণত করেছে সহ¯্রাধিক মানুষকে আরও নানাভাবে নির্যাতিত করেছে।

অপরদিকে বদি? গ্রেফতারের তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও কক্সবাজারের সংসদ সদস্য বদি যাকে সকলেই ইয়াবা স¤্রাট বলে দীর্ঘকাল যাবত অভিহিত করে আসছেন তিনি দিব্যি বহাল তবিয়তে ঐ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ-সহায়তায় বিমানে উড়ে আজ সৌদি আরবে ‘সওয়াব’ আদায়ের জন্য ওমরাহ হজ্জ পালন করছেন। কি করে গেলেন তিনি? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এহেন এক মাদক স¤্রাটকে দেশত্যাগ করতে দিলেন কি করে যখন তাঁরা নিজেরাই “মাদক-বিরোধী” অভিযান পরিচালনায় খ্যাত? যখন সারাটি দেশে অজ¯্র বাড়িতে মায়েদের, মেয়েদের বধুদের চোখে সীমাহীন অশ্রুধারা?

এ অশ্রু মোছাতে হবে রাষ্ট্রকেই। কিছুতেই আর যেন একটি প্রাণও না যায় তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধে। অর্থাৎ বিচার বহির্ভূত হত্যালীলায়। একটাও যেন ইয়াবা বড়ি এদেশে আর না থাকে। না আসে অন্য কোন মাদক , না ঘটে তার বিপণন, তার সর্বত্র বিস্তার। মাদক আমদানীর উৎসমুখগুলি বন্ধ করা হোক অবিলম্বে। প্রথমেই তার জন্যে সকল রাঘববোয়ালকে নির্দ্ধিধায় গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
জানা গেল লক্ষাধিক মাদক সংক্রান্ত মামলা আদালতে বিচারাধীন। আরও জানা গেল প্রায় ২৮,০০০ মামলা তার মধ্য থেকে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং সেগুলিতে আসামীরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। এ খবর আরও আতংকের। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে এবং সরকারকে এ বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। সরকারকে দেখতে হবে তদন্ত ঠিকমত হয়েছিল কিনা। চার্জশীটে যথার্থভাবে প্রণীত হয়ে আদালতে জমা হয়েছিল কিনা এবং সরকারি কৌঁশুলি ঠিকমত মামলাগুলি সততার সাথে পরিচালনা করেছেন ও করছেন কিনা। দেখার পরে প্রয়োজনে তদন্ত কর্তৃপক্ষের উপযুক্ত পরিবর্তন, সরকারের কৌঁশুলির পরিবর্তন প্রভৃতিও অবিলম্বে করা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গক্রমে এ সংক্রান্ত আইনটিরও পর্যালোচনা করা সম্ভবত প্রয়োজন। যদি আইনের ত্রুটির কারণে অভিযুক্তরা ক্রমাগতভাবে মুক্তি পেয়ে থাকে যথাযথ তদন্ত, চার্জশীট ও সরকারী কৌঁশুলির সঠিকভাবে মামলাগুলি পরিচালনা সত্ত্বেও। তাহলে আইনের যথাযথ সংশোধন অতিদ্রুত সম্পন্ন করা দরকার। কোন যুক্তিতেই ২৮,০০০ মামলার আসামীদের খালাস পাওয়া মেনে নেওয়া যায় না।

কথা আরও থাকে। প্রকাশিত খবর সত্য হলে লক্ষাধিক মামলা বিচারাধীন থাকছে কী করে? সম্ভবত দুটি কারণে। এক. বিচারকের স্বল্পতা এবং দুই. অনৈতিকভাবে সময়ক্ষেপণ অর্থাৎ আদালতে সরকারি কৌঁশুলি সাথে যোগসাজশে আসামী পক্ষ থেকে নানা অজুহাতে মামলার তারিখ পেছানো। এগুলি সবই ভালভাবে খতিয়ে দেখে তার সুষ্ঠু সমাধান ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন।

একরাম বা আরও যারা যারা বিচার বহির্ভূত হত্যালীলায় প্রাণ হারিয়েছেন তাদেরকে কোনভাবেই ফেরত পাওয়া যাবে না। সরকার ক্ষেত্র বিশেষে ক্ষতিপূরণে হিসেবে কাউকে কাউকে দু’চার লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকেন। এর এবং উপযুক্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সরকারকে এই হত্যালীলা বন্ধ করতে হলে এর জন্য দায়ী সকলকে কঠোরভাবে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শুধুমাত্র ডিউটি থেকে ‘ক্লোজড’ নামক ঐ লোক দেখানো অসার, অর্থব ব্যবস্থা নয় রীতিমত তাদের বিরুদ্ধে খুন এবং কর্তব্যে অবহেলা ও ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ এনে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

দেশের একমাত্র সমস্যা মাদক নয়। তবে মাদক নিঃসন্দেহে একটি গুরুতর এবং প্রাণঘাতি সমস্যা। তাই অভিযান বন্ধ নয় বরং তা আইন মোতাবেক জোরদার করা এবং যাদের অবহেলায় সমস্যাটি অর্থাৎ মাদক এত বেশি আমদানী ইত্যাদি হতে পারলো তন্ন তন্ন করে তা খুঁজে বের করে ভবিষ্যতে যাতে নিয়মিত আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় সমাধানে পৌঁছা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। আইনমন্ত্রী এ অভিযান বন্ধ করতে চান বলে জানা গেল। কেন? এ অভিযান চলুক অন্যান্য ক্ষেত্রেও। আরও অগণিত সমস্যা রয়েছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে। এগুলির মধ্যে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমগ্র দেশবাসী নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সরব। একটি পিওন বা কেরানীর চাকরিও ঘুষ ছাড়া হয় না বলে সর্বত্র অভিযোগ। স্কুল, কলেজগুলিতেও শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনেক লক্ষ করে টাকা দিতে হয় বলে শুনি। প্রশ্ন, যদি দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হয় সেই শিক্ষক কতটা সততা অবলম্বন করে শিক্ষাদান করবেন শিক্ষার্থীদেরকে ? সম্ভবত একটি কারণ, ব্যাঙের ছাতার মত কোচিং সেন্টার গজিয়ে ওঠার।

এটি তবুও ছোটখাট ব্যাপার। কী ঘটছে আমাদের ব্যাংকগুলিতে? হাজার হাজার কোটি টাকা সবগুলো সরকারি, এবং অনেকগুলি বেসরকারী ব্যাংক থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এম.পি, মন্ত্রীরা কেউ কেউ ইংল্যান্ড, আমেরিকায় স্বনামে, বেনামে প্রাসাদোপম বাড়িঘর কিনছেন বা গড়ে তুলছেন। কীভাবে সম্ভব হচ্ছে এগুলো? স্যুইস ব্যাংকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা তারা জমাচ্ছেন কেন? কার টাকা?

মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষক আমাদের খাবার জমাচ্ছে, শ্রমিকেরা একইভাবে খাটুনি করে বাঁচিয়ে রাখছে দেশটিকে তার আমদানী রফতানী বানিজ্যকে যার সর্বজন প্রশংসিত খাত হলো আমাদের পোষাক শিল্প। যাকে আমরা বলে থাকি গার্মেন্টস। এই কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষদেরকে তাদের শ্রমের বিনিময়ে কি দেওয়া হয়? কিন্তু ডাকাতি আর লুট পাট করে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা উধাও করে দেওয়া হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আজও কেন ব্যবস্থা নেই কেন?

তাই একদিকে দাবি করি বিচার-বহির্ভূত হত্যাকা-ের এবং দুর্নীতিগুলির তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন অবিলম্বে গঠন করা হোক। মাওলানা ভাসানীর মতো বলি‘খামোশ’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!