গোপালপুর থানার ওসি’র অভিনব নববর্ষের উপঢৌকন সর্বমহলে প্রশংসিত
মো. সেলিম হোসেন, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে পহেলা বৈশাখের আগের রাত্রে গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আল মামুন এর দেওয়া সুধিজনদের অভিনব বৈশাখী উপঢৌকন উপজেলার সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী উপঢৌকন ছিল সকলের নজরকাড়া। বাঙ্গালী চেতনার ধারক হিসাবে বাংলা নববর্ষে আদি বঙ্গ সংস্কৃতজাত পণ্যের মিশেলে অভিনব উপহার দিয়েছেন তিনি। বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহি মৃৎশিল্পের কলসীকে বহু বর্ণের আল্পনায় মুড়িয়ে অন্দরে দিয়েছেন বঙ্গবাসির আদি মুখরোচক চিড়ার মোয়া, সাদাঝুড়ি, চিনির সাঁজ, কদমা, খাঁজা, খুরমা, গুড়ের ঝুড়ি, বিন্নি ধানের খৈ ও নিমকি। এসব খাবারের সাথে বাঙ্গালীর হাজার বছরের পরিচয়। বাঙ্গালীর রসনা তৃপ্তির মধুমেয় অনুযোগ।
পহেলা বৈশাখের এসব উপঢৌকন সামগ্রী নিয়ে উপজেলার সর্বত্র সর্বস্তরের মানুষের মাঝে এখনো দেখা যায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বিষয়ক আলোচনা ও ওসি’র বাঙ্গালী জাতির সৃজনশীল মানুষিকতার প্রশংসা।
গোপালপুর প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন এ বিষয়ে বলেন ‘উপঢৌকন দেওয়া সুশীল সমাজের গন্ডি পেরিয়ে এখন ইতরভদ্র সব সমাজে উপহার প্রথা সমাদৃত। নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, তৈজসপত্র, গৃহস্থালী সামগ্রী থেকে হাতী, ঘোড়া, বিমান পর্যন্ত উপঢৌকন এখন প্রথা সিদ্ধ। উপহার যে সব সময় বেশি দামি হতে হবে, এমন কিন্তু নয়। শুধু দুধভাতে অথবা মাছভাতে বঙ্গ সন্তানরা রসনা নিবৃত্ত করতে পারেন না। তাই পুজাপার্বন, যাগ বা হোমযজ্ঞ, মহরম, নবান্ন বা নববর্ষে তৈরি করেন বাহারী পদের চর্ব, চোষ্য, লেহ্য জাতীয় হালকা খাবার। বাড়ির আঙ্গিনা পেরিয়ে একদিন তা দশজনের ভোগে লাগানোর চিন্তা দেখেই গ্রামীণ মেলার পণ্য হিসাবে বিচরণ। আর সেই সুত্রে নব বর্ষের শুভ দিনে মৃৎপাত্রের পরিচ্ছন্ন মোড়কের আড়ালে হারানো খাবারের পসরা পরিবেশনা যেমন ছিল প্রশংসনীয়, তেমনি অতীতকে সম্মান জানানোর ব্যতিক্রমী প্রয়াস।’
আলমনগর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মোমেন এমন বৈশাখী উপঢোকন পেয়ে বলেন, ‘এটি বাঙ্গালী সংস্কৃতি লালন করার উৎকৃষ্ট উদাহরণ ও সৃজনশীল মানুষিকতার অভূতপূর্ব নজির।
ওসি হাসান আল মামুন জানান, ‘সবার আগে আমরা খাঁটি বাঙ্গালী। আমাদের আছে বাংলার অভূতপূর্ব সংস্কৃতির ইতিহাস। সে ইতিহাসকে বুকে লালন করে পথ চলা প্রতিটি বাঙ্গালীর অহংকার। আমার এই সামান্য উপঢোকনের মাধ্যমে আমি সেই বাঙ্গালীর কালজয়ী সাংস্কৃতিমনা ইতিহাসকে সবার মাঝে তুলে ধরার চেষ্ঠা করেছি।’