ঘাটাইলে বিদ্যুৎতের খুঁটি উফড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ভোগান্তিতে হাজারও মানুষ
মোঃ সবুজ সরকার সৌরভ, ঘাটাইল(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারনে রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশ যখন ভয়াবহ বন্যার কবলে নিমজ্জিত ঠিক তারি ধারাবাহিকতায় কোন ভাবেই পিছিয়ে নেই টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলাটিও।ভয়াবহ এই বন্যার কবলে পড়ে মানুষ যখন দিশে হারা ঠিক তখনি নতুন করে দেখা দিয়েছে আরেক এক বিপত্তি।উপজেলার একটি পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়নের পিডিবি,র বিদ্যূৎতের খুঁটি পানিতে উফড়ে পড়ে ও খুঁটি ভেঙ্গে পানিতে তলিয়েগেছে ১৫ ও ৪৫০ কেবি ধারন ক্ষমতা সম্পণ্য সিমেন্ট ও কাঠের তৈরি খুঁটি সহ হাই ভোল্টেজের তার। পাশা পাশি দুই শতাধিক বিদ্যূৎতের খুঁটির গোড়ার মাটি পানির স্রোতে আগলা হয়ে ঝুলে রয়েছে ফসলি জমি,গাছ পালা,ও বাড়ির আঙ্গিনায় । যে কোন সময় খুঁটি গুলো ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে মারাত্বক ক্ষতি ও ব্যাপক প্রাণ হানির ঘটনা ঘটতে পারে বসে ধারণা করছেন এলাকাবাসি। অপরিকল্পিত ভাবে ফসলি জমিতে, বাড়ির আঙ্গিনা ও জমির লাইলে এ সব খুঁটি স্হাপন করায় এমন বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারনা করছেন এলাকা বাসি। তারা বলেন এ ছাড়াও সড়ক ও মহাসড়ক গুলোতেও এ সব খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। এতে এক দিকে যেমন ঘটছে নানা ধরনের দূর্ঘনা অপর দিকে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই খুটির গোড়ার মাটি আগলা হয়ে সরে গিয়ে কোথাও কোথাও খুঁটি গুলো ভেঙ্গে পড়ছে আবার কোথায় খুঁটি গুলো মাটির দিকে হেলে পড়ে পানির মধ্যে তার সহ ঢুবে রয়েছে।কোন ভাবেই বুঝার উপায় নেই পানিতে বিদ্যূৎতের তার ছিড়ে পড়ে মৃত্যূর ফাঁদে পরিনত হয়ে আছে।সরজমিনে ঘাটাইলের ১নং দেউলাবাড়ি ইউনিয়র,জামুরীয়া ইউনিয়ন, দিঘলকান্দি ইউনিয়ন ও পৌর সভার বেশ কিছু এলাকা ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ করা গেছে।খুঁজ নিয়ে জানা যায়, দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের চৈথট্র,পাঞ্জনা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চিতাই গাঙ্গের ভেহি টোকের উপরে অন্তত ২/৩ টি খুঁটি একে বারেই ভেঙ্গে পানিতে তার সহ পড়ে রয়েছে।অত্র এলাকায় বিদ্যূৎ সর্বারাহ ৩/৪ দিন যাবত একে বারেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।স্হাণীয় ভাবে কিছু শ্রমীক দিয়ে বাঁশের কেচার করে খুঁটি গুলো পেলা দিয়ে দাড় করানোর ব্যার্থ চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি।অপর দিকে ঘাটাইল- ভূয়াপুরের ফিডারের জামুরীয়া ইউনিয়নের সাধুর গলগন্ডা, গলগন্ডা, ডেউজানি, ফুলহারা, হাতিবর ফুলহারা ও সুনুটিয়া সহ বেশ কিছু এলাকায় ঠিক একই চিত্র লক্ষ করা গেছে। এখানে ৩৩ হাজার ভোল্টের খুঁটি সম্পূর্ন উলটে গিয়ে বিদ্যূতের তার পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে এবং বাঁশের খুঁটি দিয়ে ৩৩ হাজার বোল্টের লাইনের তারের সাথে সংযোগ দিয়ে বাঁশের খুঁটির মাধ্যমে পানির উপর দিয়েই এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে নিয়ে দেধারছে বিদ্যূৎত চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ তারা জানেনা কত বড় ধরনে দূর্ঘনা তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। কিছু অসাধু বিদ্যূৎ কর্মি তাদের এই কাজে সহযোগিতা করছে। পিডিবি কতৃপক্ষও দেখে না দেখার ভান করে বসে রয়েছে।
প্রায় একই অবস্থা দিঘলকান্দি ইউনিয়নেও। এখানেও কয়েকটি গ্রামের বিদ্যূৎতের খুঁটি উফড়ে গিয়ে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে গ্রামের বেশ কয়েক জন মুরব্বি, যুবক, মহিলা ও জন প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যূৎতের তার খুটি ভেঙ্গে পানিতে পড়ে থাকার কারণে আমরা পানিতে, টিউবওয়েলে হাত দিতে ভয় পাই। না জানি কখন কারেন্ট চলে আসে। একেতো ঘর থেকে বের হতে পারিনা। চার দিকে পানি আর পানি। বাড়ি ঘর পানিতে ডুবে গেছে। ঘরের ভেতরে মাচা পেতে শিশু ও বৃদ্ধাদের নিয়ে নীড়ঘোম রাত্রি যাপন করছি, অপর দিকে কারেন্ট না থাকায় পোকামাকড় ও বিষাক্ত সাপের ভয়ে দু- চোখের পাতা এক করতে পারছিনা। সন্ধা হলেই মনের মধ্যে নানা ধরনের ভয় কাজ করে।হারিকেনের আলোয় রাত্রি পোহাতে হয়। আমাদের দুঃখ কষ্ট দেখার কেউ নেই। আমরা সত্যিই বড় কষ্টে দিনাতিপাত করছি। অতি দ্রুত আমাদের এই সমস্যার সমাধান না হলে ঘরের ভেতরেই দম বন্ধ হয়ে মরতে হবে।
এ ব্যাপারে জামুরীয়া ইউনিয়নের ইউ,পি মেম্বার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,কারেন্ট নিয়ে ভোগান্তি এ আর নতুন কিছু নয়। কারেন্ট নিয়ে সমস্যার শেষ নেই। যখন খুশি তখন বিদ্যূৎ চলে যায়,মন চাইলে আসে আবার নাও আসে।তার উপর রয়েছে আবার মনগড়া বিদ্যূৎ বীলের ঝামেলা। বর্তমানে দেখা দিয়েছে নতুন করে আরেক ঝামেলা।বিদ্যূতের খুটি গুলি ভেঙ্গে ও খুটির গোড়ার মাটি সরে গিয়ে মাটির দিগে ঝুলে বিদ্যূতের তার গুলি যে ভাবে পানির নিচে ঢুবে আছে তাতে মনে হয়, হঠাৎ বিদ্যূত চলে আসলে কারেন্টের তারে জড়িয়ে ও পানিতে বিদ্যূৎ তৈরি হয়ে অনেক মানুষ মাছ ধরতে গিয়ে মারা যাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই দ্রুত এর সমাধান জরুরী।
অপর দিকে দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খান ও জামুরীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইখলাক হোসেন শামীম বলেন, বিষটি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। ইতি মধ্যেই সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষকে বিষয়টি গুরত্ব সহ কারে দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।প্রয়োজন হলে, যেখানে গেলে সমাধান হবে সেখানে গিয়েই আমরা এর ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্ঠা অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যাব।
বিষয়টি নিয়ে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের ঘাটাইল শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম বিষয়টির সততা স্বিকার করে বলেন, এখন বর্ষা কাল। কোথাও কোথাও এমন সমস্যা হতেই পারে। তাছাড়া আমরাও তো বসে নেই। আমাদের সব রকমের চেষ্ঠা অব্যাহত রেখে রাত দিন মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের টিম স্বার্ক্ষনিক কাজ করে যাচ্ছে। যেখান থেকেই সমস্যার খবর আসছে সেখানেই দ্রুত ছুটে গিয়ে কাজ করছে। চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি আশা করি দ্রুতই এর সমাধান করা হবে ৷