চলে গেলেন ‘বেগম’ সম্পাদক নূরজাহান বেগম
উপমহাদেশের প্রথম নারী সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বেগম’ এর সম্পাদক নূরজাহান বেগম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ সোমবার সকালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এসময় তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৯১ বছর। নূরজাহানের স্বজনরা এ খবর জানিয়েছেন। গত ৫ মে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে ৭ মে নূরজাহানকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিয়ে যাওয়া হয়।
তারপর থেকে সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন এই প্রবীণ নারী সাংবাদিক। হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসকদের তরফ থেকে জানানো হয়, নূরজাহান বেগমের ফুসফুসে কফ জমে নিউমোনিয়া হয়েছে।
সাহিত্যক্ষেত্রে মেয়েদের এগিয়ে আনার লক্ষ্যে ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই কলকাতা থেকে বেগম পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। ১৯৫০ সালে এটি ঢাকায় চলে আসে। বেগম পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সওগাত পত্রিকার সম্পাদক ও নূরজাহান বেগমের বাবা মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন।
বেগম–এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল। তবে চার মাস পর থেকেই পত্রিকাটির সম্পাদনা শুরু করেন নূরজাহান বেগম। বেগম-এর প্রথম সংখ্যা ছাপা হয়েছিল ৫০০ কপি। মূল্য ছিল চার আনা।
বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকতার অগ্রদূত ও সাহিত্যিক নূরজাহান বেগম ১৯২৫ সালের ৪ জুন চাঁদপুর জেলার চালিতাতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৪৪ সালে কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ থেকে তিনি আইএ এবং ১৯৪৬ সালে একই কলেজ থেকে তিনি বিএ পাস করেন। ১৯৫২ সালে কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলার প্রতিষ্ঠাতা রোকনুজ্জামান খানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
নারীর অবস্থার উন্নয়ন ও সাহিত্যক্ষেত্রে অবদানের জন্য নূরজাহান বেগম বহু পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। ১৯৯৭ সালে তিনি রোকেয়া পদক পান। এছাড়া, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, লেখিকা সংঘ, কাজী জেবুন্নেসা মাহাবুবুল্লাহ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ সাংবাদিক ফোরাম, রোটারি ক্লাব প্রভৃতি সংগঠন থেকে তিনি স্বর্ণপদক পেয়েছেন।