আন্দোলনের সময় তোমরা মাঠে ছিলে না

 

 

নিজস্ব প্রতিনিধি  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম

ছাত্রদলের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বিএনপি প্রধান বলেন, ‘এরশাদবিরোধী আন্দোলন করেছি। দলকে তিনবার ক্ষমতায় এনেছি। ইনশা আল্লাহ দলকে সুন্দর করে গুছিয়ে, যোগ্যদের নেতৃত্বে সময় মতো আন্দোলন করে আবার ক্ষমতায় আনব। ’

ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা স্লোগানে বলো, খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই। এটা ভুল। তোমরা কেন, বিএনপির অনেক নেতাও আন্দোলনের সময় রাজপথে ছিল না। ’

গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর  ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে খালেদা বলেন, ‘ইসি গঠন নিয়ে আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছি রাষ্ট্রপতি তা পড়েছেন। এ জন্য আমাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। আমরা বলেছি, শুধু নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হলেই হবে না। একটি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারও দরকার। যারা নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। ’

আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে তিনি বলেন, তারা ক্ষমতা ছাড়তে আগ্রহী নয়। বিএনপি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাইলেও আওয়ামী লীগ চায় না।

প্রতিনিয়ত গুম-খুন চলছে অভিযোগ করে এসবের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করেন বিএনপি প্রধান। পুলিশ বাহিনীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যে জেলারই মানুষ হোন না কেন, আগে মনে রাখতে হবে আপনি বাংলাদেশি। ইউনিফর্মের মর্যাদা রাখুন। কথায় কথায় গুলি করা বন্ধ করুন।

বাংলাদেশে ভিনদেশের গোয়েন্দার উপস্থিতি রয়েছে দাবি করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে অন্য দেশের কতজন গোয়েন্দা আছে তা জনগণকে জানাতে হবে। এ দেশে বিদেশি গোয়েন্দা থাকতে পারবে না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা বলেন, তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চাননি। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মানুষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে।

খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার জিয়াউর রহমানের বদনাম করছে। মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে তাঁর সম্পর্কে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বড় প্রকল্পের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ কমিশন খাচ্ছে। তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পসহ সব প্রকল্পে ব্যয় বাড়িয়েই চলেছে। দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছে তারা।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমাদের জাগতে হবে। ঘুমিয়ে থাকলে চলবে না। তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ। সংখ্যা আমি দেখতে চাই না, যারা সত্যিকারভাবে দল করতে চায়, তাদের চাই। আমি কোয়ান্টিটি চাই না, কোয়ালিটি চাই। ’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতীয় পার্টির সমাবেশ ছিল আজ। সেখানে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি আরো বাঁচতে চান। এ জন্য তাঁকে রাষ্ট্রপতি বানাতে হবে, প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে। এ ধরনের একজন লোককে দূত বানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তাঁর দলকে বিরোধী দলের মর্যাদা দিয়েছেন। কিন্তু জনগণের আস্থা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর।

ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ড. লুৎফর রহমান খান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!