ঝড় তুফানে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আজান দেয়, ইসলামে এর কোন বৈধতা আছে কি?
ঝড়-তুফান বা কোন বালা-মুছীবতের সময় আযান দেওয়ার কোন সহিহ প্রমাণ পাওয়া যায় না। ঝড়-তুফানের সময় রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মুখের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যেত এবং তিনি বিভিন্ন দোআ পড়তেন।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ আমি তোমার নিকট এ ঝড়ের কল্যাণ কামনা করছি। যে কল্যাণ রয়েছে এর মধ্যে এবং যে কল্যাণ পাঠানো হয়েছে এর সাথে। আর তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি এ ঝড়ের অকল্যাণ হ’তে। যে অকল্যাণ এর মধ্যে রয়েছে এবং যে অকল্যাণ দ্বারা একে পাঠানো হয়েছে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৫১৩)।
উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, বায়ুপ্রবাহকে গালি দিয়ো না বরং তোমরা অপসন্দনীয় কিছু দেখলে বল اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هَذِهِ الرِّيْحِ وَخَيْرِ مَا فِيْهَا وَخَيْرِ مَا أُمِرَتْ بِهِ وَنَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ الرِّيْحِ وَشَرِّ مَا فِيْهَا وَشَرِّ مَا أُمِرَتْ بِهِ- (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৫১৮) সহীহ হাদীসে এসেছে।
একবার মদীনায় এক সপ্তাহ একাধারে প্রবল বৃষ্টিপাত হল। অবিরাম বৃষ্টির সমূহ ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে সাহাবীগণ প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহর দরবারে দুআ করার জন্য অনুরোধ করেন। তখন নবীজী এভাবে দুআ করেন, নবীজীর দুআর ফলে মুহূর্তে মদীনার আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ১০১৪] এমনিভাবে ঝড়-তুফানের সময় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দুআ করতেন আর বাতাস কমে বৃষ্টি নেমে এলে তাঁর চেহারা উজ্জ্বল দেখাত। তখন তিনি আল্লাহর ‘হামদ’ করতেন, বলতেন, এটি ‘রহমত’। [ফাতহুল বারী ২/৬০৪, ৬০৮] তবে প্রচণ্ড ঝড়- তুফানের সময় বা অবিরাম ঝড় বৃষ্টি চলতে থাকলে সুন্নাত ও মুস্তাহাব মনে না করে এমনিই আযান দেয়াটা মুবাহ (জায়িয)। কারণ মনে করা হয় আজান দেওয়ার মাধ্যেম শয়তান দূরীভূত হয়। যদি কোন স্থানে প্রচণ্ড ঝড়-তুফানের সময় আযান দিতে হয়, তাহলে পূর্ণ আযান দিতে হবে। [কিফায়াতুল মুফতী:৩/৬, ইমদাদুল ফাতাওয়া:১/১৬৫]
তদুপরি সমপ্রতি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যাচ্ছে প্রচন্ড ঝড় তুফানের মধ্যে এক মুয়াজ্জিন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আজান দেন, এর সাথে সাথেই ঝড় তুফানের বেগ কমে আসে, দেখুন সেই ভিডিও
https://youtu.be/tt10qaduPcM