টাঙ্গাইলে আদালতের মাধ্যমে ২০১৭ সালে ২০ সহস্রাধিক মামলা নিষ্পত্তি

 

 

মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল), টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

টাঙ্গাইলের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০১৭ সালে ২০ সহস্রাধিক মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। একই সাথে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে রেকর্ড গড়েছেন এই আদালত। ম্যাজিস্ট্রেটগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সুষ্ঠু আদালত ব্যবস্থাপনা এবং কর্মঘন্টার সঠিক ব্যবহার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের ফলেই এ সাফল্য এসেছে বলে আদালত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এজলাস সংকট ও বিচারক সংকট ছিল বছরজুড়ে। বিগত বছরের বিভিন্ন সময়ে পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট এক থেকে ছয় মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণে অংশ নেন। তবে বিচারিক কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় এজন্য তাদের জায়গায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অন্য ম্যাজিস্ট্রেটগণ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। বিচারক সংকটের পাশাপাশি আদালতে অন্যান্য জনবলেও ঘাটতি ছিল। তারপরেও ২০১৭ সালে ২০ হাজার ১৩০টি মামলা নিষ্পত্তি (বদলীসহ) করেন এই আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণের ক্ষেত্রেও ছাড়িয়ে গেছে পূর্বের সকল রেকর্ড। ২০১৭ সালের শেষ অবধি সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় ১৭ হাজার ৩৬০ জন সাক্ষীর। বিদায়ী বছর প্রারম্ভিক মামলা ছিল ২৬ হাজার ৪০১টি এবং নতুন মামলা দায়ের হয়েছে ১৬ হাজার ৮৮০টি এবং চলমান মামলা ছিল ২৩ হাজার ১৫১টি।
অন্যদিকে ২০১৬ সালে টাঙ্গাইলের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রারম্ভিক মামলা ছিল ২৯ হাজার ৮৯৫টি। নতুন মামলা দায়ের হয় ১৫ হাজার ৩৫৪টি। মামলা নিষ্পত্তি (বদলীসহ) করা হয় ১৮ হাজার ৮৪৮টি এবং ওই বছর ১৪ হাজার ১৮৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়। একই বছর আদালতে চলমান মামলা ছিল ২৬ হাজার ৪০১টি।
আদালতের তথ্যমতে, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার পর কয়েক বছর মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা ওঠানামা করলেও ২০১৪ সাল থেকে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নানা প্রতিকুলতার পরেও ম্যাজিস্ট্রেটদের কর্মদক্ষতা ও আইনজীবীদের সহযোগিতায় ২০১৪ সালে ১২ হাজার ৬৪১টি, ২০১৫ সালে ১২ হাজার ৮৪৩টি, ২০১৬ সালে ১৮ হাজার ৮৪৮টি এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালে ২০ হাজার ১৩০টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এছাড়া ২০০৭ সালে এক হাজার ৩৫৫টি, ২০০৮ সালে ১২ হাজার ৫৭৭টি, ২০০৯ সালে ১২ হাজার ১২৪টি, ২০১০ সালে ১১ হাজার ১৬৭টি, ২০১১ সালে ১২ হাজার ৮৫টি, ২০১২ সালে ১১ হাজার ২৮৪টি এবং ২০১৩ সালে ১৪ হাজার ৭২৪টি মামলা নিষ্পত্তি হয়।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম খালেদা ইয়াসমিন বলেন, বিগত বছরজুড়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা থাকলে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা যেত। এই অধিক সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটগণের সুষ্ঠু আদালত ব্যবস্থাপনা, কর্মঘণ্টার সঠিক ব্যবহার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ মূল ভূমিকা রেখেছে।
জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফারুক আহমেদ বলেন, এই আদালতের বিচারক, আইনজীবী এবং আইনজীবী সহকারী ও আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একান্ত সহযোগিতায় এক বছরে এতগুলো মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে। এটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই।


কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!