টাঙ্গাইলে সরিষা ফুলের প্রকৃতিতে যেন মৌমাছির গায়ে হলুদ
মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল), টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা টাঙ্গাইলের প্রায় প্রতিটি উপজেলার গ্রামগুলো। এই জেলার বারোটি উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই সরিষার চাষ হয়েছে। প্রকৃতিতে এখন যেন শুধুই হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের প্রকৃতিতে মৌমাছির গুঞ্জন মিলেমিশে একাকার। দেখলে মনে হবে যেন মৌমাছিদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলছে। এ জন্যই বুঝি চারিদিকে এত হলুদের ছড়াছড়ি। টাঙ্গাইলে বিশেষ করে সদর উপজেলা, ঘাটাইল, বাসাইল ও নাগরপুরে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে এই সরিষার। সরিষার বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখে মুখে আনন্দের রেখা ফুটে উঠেছে। এবার সরিষার হলুদ ফুলে মাঠ ঘাট ছেয়ে গেছে। মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে ফসলি মাঠ। প্রকৃতির এক অপার লীলাভূমি নেমে এসেছে এখানে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা কৃষকদের। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কৃষক বাবু মেয়ের সাথে কথা বলে জানা যায় বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথমদিকে কৃষকরা সরিষার বীজ বপন করে থাকে। কৃষকরা খুব কম সময়ে সরিষা ঘরে তুলতে পারে। নাগরপুর উপজেলার আবুল মিয়া বলেন, আমি দুই একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। প্রচুর ফলন হয়েছে, আশা করি দামও ভালো পাবো। তবে বিভিন্ন কৃষি পণ্যের পাশাপাশি সরিষার ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকলে এখানকার কৃষকরা আরো বেশি উপকৃত হতো। কালিহাতীর নারান্দিয়ায় গ্রামের কৃষক ফজল শেখ ও হাশেম খান জানান, এবার চার বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন। এতে খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হবে। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ড. উম্মে হাবিবা জানান, উপজেলায় ২ হাজার ২ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় প্রতি বছরই সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের ৫৫৭ হেক্টর জমিতে আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি ভাবে ও বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তায় উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষার আবাদ ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল সরিষা আবাদের জন্য সব সময়ই উৎসাহ ও সহায়ত করে থাকি। উপযুক্ত বীজ নির্বাচন, সুষম সার প্রয়োগে আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।