দেবীগঞ্জে ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় পুড়ে গেছে কয়েকশ একর জমির ফসল
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ইট ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে পুড়ে গেছে কয়েকশ বিঘা জমির ধান ও ফলজ বৃক্ষসহ রবি শস্য। ধারণা করা হচ্ছে কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে এতে।
উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের শিমুলতলী গ্রামের কে এস বি নামে একটি ইট ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় এ ঘটনা ঘটে। ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় ফসলের ক্ষেত ছাড়াও আম, কাঁঠাল ও জলপাই গাছসহ পুড়ে গেছে বাঁশ ঝাড়।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১৯ তারিখ রাতে কেএসবি নামে ইটা ভাটার কার্যক্রম চলতি বছরের জন্য বন্ধ করা হয়েছিল। বন্ধ করার সময় ভাটার চিমনী দিয়ে বের হতে থাকে বিষাক্ত এবং দুর্গন্ধযুক্ত ধোয়া। রাতে অনেকেই দুর্গন্ধযুক্ত ধোঁয়ার বিষয়টি আঁচ করতে পারলেও ফসলের এই ব্যাপক ক্ষতির বিষয়ে কিছুই বুঝতে পারে নি। সকালে কৃষকরা জমিতে গেলে বিষয়টি সামনে আসে। শুধু ধান নয়, আশপাশের ফলজ গাছের পাতা ও কুঁড়ি কুঁকড়ে গেছে। ঝড়ে পড়ছে ফল। লিচু ও আম বাগানের হয়েছে ব্যাপক ক্ষতি। বিষাক্ত ধোয়ায় শিমুল তলি, নয়নপাড়াসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
শিমুলতলি গ্রামের কৃষক সোবাহান আলী অভিযোগ করেন, ইট ভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসর কারণে তার জমির ধান চিটা হয়ে গেছে। এতে লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন ব্যয় তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
নয়নপাড়া গ্রামের রমেজ উদ্দিন জানান, আমার ২ বিঘা জমিই ছিল সম্বল। ধান চিটা পড়ে যাওয়ায় এখন আমি এক মণ ধানও পাবনা। আমি স্ত্রী সন্তান নিয়ে কি খাব?
দন্ডপাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামেদুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা অভিযোগ করার পর ভাটার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। আপাতত ভাটার কর্তৃপক্ষ তাদের নিজ খরচ ও জনবল দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেতে পানি ও ছত্রাক নাশক স্প্রে করছে। তাই কিছুদিন পর ফসলের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকার কাজ এখনো চলছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি কর্মকর্তা শামীম ইকবাল জানান, কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করার পাশাপাশি যাতে আর ক্ষতি না হয় তার জন্য নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। পুরো ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। তবে কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ যেন কম হয় যে জন্য যথা সম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে।