ইমরান এইচ সরকারকে শাহবাগে দৌড়ানি দিল ছাত্রলীগ
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
হেফাজতে ইসলামের দাবি মেনে সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদের মিছিল থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়ায় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে পেটানোর জন্য শাহবাগে তার ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক জহিরুল কবির জহিরের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল কর্মী তাকে পেটানোর জন্য গেলে ইমরান এইচ সরকার শাহবাগে পাবলিক লাইব্রেরির ভেতর দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান।
ছাত্রলীগের এই সহ-সম্পাদক জানান, “মঞ্চের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে জনসম্মুখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিদ্রুপাত্মক স্লোগান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মানহানি করায় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাকে শাহবাগে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরেও আজ তাকে শাহবাগে দেখতে পাওয়ায় তাকে কুত্তার মতো করে পেটাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পাবলিক লাইব্রেরির ভেতর দিয়ে সে পালিয়ে যাওয়ায় আজ পেটাতে পারলাম না। ভবিষ্যতে ওকে যদি শাহবাগের ত্রি-সীমানায় দেখা যায় তবে এই মূর্তিপূজককে এমনভাবে নেড়ি কুত্তার মতো করে পেটানো হবে যাতে ওর বাবা-মার নামটাও ঠিকমতো মনে করতে না পারে।”
এই হামলার আগে গত সোমবার রাতে ছাত্রলীগের একটি মিছিল থেকে শাহবাগে ইমরান সরকারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিল।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যেখানে ইমরান এইচ সরকার ও সনাতনকে (সংস্কৃতিকর্মী) যেখানেই দেখা হবে, সেখানে কুত্তার মতো পেটানো হবে” বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার পর তাকে শাহবাগে দেখা যাওয়ার পর তাকে এই দৌড়ানি দেয়া হলো।
হেফাজতের ‘দাবি মেনে’ সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য সরানোর পর গত বৃহস্পতিবার ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ইমরান বলেছিলেন, মৌলবাদীদের ‘তুষ্ট করতে নোংরা রাজনৈতিক খেলায়’ নেমেছে সরকার, ‘আখের গোছাতে ব্যবহার করছে’ ধর্মকে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদে ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে গণজাগরণ মঞ্চের এই মশাল মিছিল থেকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে ওই স্লোগান দেওয়া হয়েছিল, ‘ছি ছি হাসিনা, লজ্জায় বাঁচি না।’
ওই স্লোগানের ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সোমবার রাতে মিছিল বের করেন সংগঠনটির এক দল নেতা-কর্মী।
প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিদ্রুপাত্মক স্লোগান দেয়ায় ঢাকা ও গাজীপুর সহ আরো কয়েকটি জেলায় তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা করেছে ছাত্রলীগ নেতারা।
ভাস্কর্য সরানোর পক্ষে অবস্থান জানিয়ে ছাত্রলীগ নেতা জহির বলেন, “পৃথিবীর কোথাও ন্যায়বিচার প্রতীক হিসেবে জাস্টিসিয়া ভাস্কর্য নেই।
“কোর্টের সামনে সেটা স্থাপন করা হয়েছে, কিন্তু জাতীয় ঈদগাহের পাশে থাকায় জামাত থেকে দেখা যায়। তাই সরানোর পরামর্শ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরিয়েছেন, সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন তিনি।”