এস আই গগণ এর গল্প-নিশিকন্যা

নিশিকন্যা

——— এস আই গগণ

রিমঝিম, বরাবরই আত্মকন্দ্রেকি। সমাজের উচুতলার মেয়েদের একজন। তেমন কারো সাথে মেশাতো দূরে থাক, কথা বলতেও দেখিনি। পড়াশুনা আর ছোট ভাইকে মানুষ করার মানসে এগয়িে চলছে। স্কলারশিপ পেয়ে আমেরিকায় চলে গেল, জেনেছিলাম পাড়ার লোকদেরে কাছ থেকে। পাশাপাশি বাড়ি থাকা সত্ত্বওে কখনো কথা হয়নি ওর পরিবারের সাথে। পড়াশুনা শেষ করে আমিও লন্ডন চলে গেলাম কাজের উদ্দেশ্যে।
চাকরি করতে করতে আর যান্ত্রকি শহরে চলতে চলতে অসহনীয় এক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে ছুটে এলাম আমার প্রিয় ভূমি বাংলায়। চলে গেলাম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার।রাতের আকাশে চাঁদের আলো আর মিটিমিটি তাঁরার মেলায় নিজেকে বড়ো অসহায় মনে হল, এ জীবনে কি করলাম? শুধুই পড়ালখো? প্রকৃত সুখ বলতে তো কিছুই পেলাম না। পেলাম না কারো ভালোবাসা। মা মারা গেলেন আমাকে জন্ম দেওয়ার সময়। সৎ মায়ের ভালোবাসা তো দূরে থাক বকাটাও জোটেনি। কোনো কোথাই বলতো না, এখনো কথা বলার ইচ্ছা আমার মায়ের হয়নি। হয়তো কখনো হবেও না। নিজ ইচ্ছায় এতদূর পৌঁছালাম ঠিকই কিন্তু হিসাব মেলাতে যেয়ে হিসাবটা কেমন যেন গড়বড় হয়ে গেল। জগতের কয়েকটা মূল্যহীন কাগজ (সার্টিফিকেট) ছাড়া কি পেলাম? যে দেশে যোগ্যতার বলিদান হয়, প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তো দূরইে রইলো। চিন্তা করতে গেলেও কোন রাজনৈতিক ব্যক্তির টেলিফোন অথবা মিষ্টি খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। যা সমাজের সবার পক্ষে সম্ভব নয়। যাই হোক, প্রসঙ্গ পাল্টানোই শ্রেয়।
সমুদ্রতীরে হাঁটতে বেশ ভালই লাগছে, বরাবরই এটা আমি করে থাকি, এবারও তার ব্যতিক্রম হলনা। এক ফ্লাক্স রং চা, এক প্যাকেট সিগারেট, তিনটা দিয়াশলাই। বীচের পাশে সারি সারি শেডযুক্ত ছাউনির একেবারে শেষেরটাতে সারারাত বসে বসে ফ্লাক্সের মুখে চা ঢেলে খাওয়া, সঙ্গে একটা সিগারেট। মনে হতো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখ বুঝি এটাই। আসলে কি তাই?
তিন কাপ চা শেষ করে স্মৃতিচারণ করায় মনোযোগী আমি। হঠাৎই কোত্থকেে উড়ে এসে জুড়ে বসলো আমার পাশের ছাউনতে, অস্পষ্ট চেহারার একটি মেয়ে।

আমার তাতে কিচ্ছু যায় আসেনা, আমি আমার র্কম সম্পাদনে ব্যস্ত, নিজেকে নিজেই আনন্দ দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করাটাই এখন আমার বিষয়বস্তু। সুতরাং, কে বা কারা পাশে বসলো আমি দেখতে চাইনা। আচমকা হ্যালো দিয়ে কথা শুরু করলো মেয়েটি, যতক্ষণনা র্পযন্ত জানতে পারলাম মেয়েটি নিশিকন্যা ততক্ষন বশে ভালই লাগছিল। বাঁধ সাধলো বিবেক নামের বস্তুটি। ওদিকে কেউ যেন কানের কাছে আওড়াচ্ছে, খেয়াল করলাম সুখ নামক বস্তুটি চাইছে কিছু একটা।
পিছনে পিছনে হাঁটছে আর কথা বলইে যাচ্ছে।
আচ্ছা, তোমার নামটা তো জানাই হয়নি?
রিম, রিম আমার নাম!
আমি মুক্ত।
আপনি যে মুক্ত সেতো আমি দেখতেই পাচ্ছি।
আরে না…… আমার নাম মুক্ত।
ও…
কথা বলতে বলতে দরজা খুলে রুমে ঢুকতইে মনে হলো, নিশিকন্যার মুখখানি এখনো র্দশন করা হলনা কেন?সামনে রাখা ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় ললনার চেহারা দেখে শুধু আঁতকে উঠলাম না ভয়ও পেলাম।আমি মনে করেছিলাম রিমঝিম নামের মেয়েটি আমাকে চিনতো, রিমঝিম থেকে নিশিকন্যা রিম হওয়ার গল্পটা শুনতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লাম। রাত পোহাতে চললো কিন্তূ গল্পটা……
বাবা মারা যাওয়ার পর মা ম্যানেজার আঙ্কেলকে বিয়ে করলেন। এক বছর পর ছোট ভাই অনিককে জন্ম দিতে যেয়ে মা মারা গেলেন। নানা রকম অত্যাচার আর অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে যাই। বুঝতে পারিনি যে ম্যানেজার রুপি জানোয়ার আমাকে ভোগ্য পণ্য হিসেবে ব্যবহার করবে। কিছূই করার ছিলনা। প্রতি রাতে জানোয়ারের বন্ধুরা মদ খেয়ে মাতাল হয়ে অসহ্য নির্যাতনে মেতে উঠতো। এমনকি নিজের ছেলে অনিককেও একবার মেরে ফেলতে চাইলো, বাধা দিতে যেয়ে আমার হাত ভেঙ্গে দিয়েছিলো, ভাঙ্গা হাত নিয়েও আমি রেহাই পাইনি জানোয়ার ম্যানেজারের কাছ থেকে। বেশ কিছুদিন পর আলি আহমাদ নামের একজন দালালের কাছে আমাকে বিক্রি করে দিল। পরিচিতজন না থাকায় কারো কাছে অভিযোগ দেওয়ার সুযোগ হয়নি, মোবাইলটা র্পযন্ত কেড়ে নিয়েছিল। দালাল আলি আহমাদ আমাকে দুবাই পাঠিয়ে দিল।

শহর থকেে অনকে দূর,ে কোন এক র্পযটন কন্দ্রেরে একটা হোটলেে আমাকে থাকতে বলা হলো। কছিু মানুষরূপী জানোয়ার হায়নোর মতো ঝাঁপয়িে পড়তে লাগলো প্রতনিয়িত। একজন টুরস্টি এর সহায়তায় পালয়িে আসতে সক্ষম হয়ছে।ি একমাস হলো কক্সবাজার এসছে।ি টুরস্টি ছলি একজন ইন্ডয়িান। কৃষ্ণকান্ত বাবু চয়েছেলিনে আমাকে নয়িে যতে,ে আমি যাইন।ি শ্রদ্ধয়ে বাবা মায়রে কবর যে দশে,ে সে দশে ছড়েে অন্য কোথাও যতেে মন সায় দলিনা। এক প্রকার বাধ্য হয়ইে কৃষ্ণকান্ত বাবু আমাকে আসতে দলিনে। দশেে এসে কারো কাছে যাইন।ি আমি জানি আমার কোন শুভাকাঙ্ক্ষী নইে। বলা চলে এ দশেে আমার আপন বলতে কউে নইে মৃত বাবা মা ছাড়া। অনকে এতমিখানায় গয়িছেি আশ্রয়রে জন্য, বভিন্নি ওজুহাত দয়িে তাড়য়িে দয়িছেে আমাক।ে চাকররি জন্য ঢাকাসহ বভিন্নি জলোয় ঘুরছে।ি সবাই শুধু কু-প্রস্তাব দয়ে, প্রস্তাবে রাজি হলে চাকরি মলিব,ে অন্যথায় মলিবে না। অবশষেে আজ সকালে কক্সবাজারে এসে পৌঁছালাম এবং অনকে ভবেে দখেলাম, শরীর দয়িে যদি চাকরি করতে হয় তবে সে চাকরি করার চয়েে নশিকিন্যা হয়ে এ নরক রাজ্যরে জানোয়াররূপী রাজাদরে প্রজা হয়ে থাকাটাই শ্রয়ে। অন্তত সুবধিা বঞ্চতি নারদিরে তালকিায় আমার নাম থাকবনো। ভাবতে ভালই লাগছ,ে আমার নরকরে প্রথম রাজা আমার প্রতবিশেী, যে আমাকে চনিতো,জানতো আমি পড়াশুনার জন্য আমরেকিা গয়িছেলিাম, অথচ সত্যটিা ছলি লুকায়তি। যটো আজ প্রথম আপনাকে বললাম।
হতবম্ভ হয়ে তাকয়িে রইলাম রমিঝমিরে দকি।ে বুঝতে পারছলিামনা আমার কি করা উচৎি। সমস্ত চন্তিার অবসান ঘটয়িে রমিি নামক রমিঝমিকে র্অধাঙ্গনিি করে ফলেলাম। বয়িরে সদ্ধিান্তটাকে জীবনরে শ্রষ্ঠে সদ্ধিান্ত বলে মনে হল। এতদনি পরওে অপরচিতি কারো বোঝার উপায় নইে আমাদরে বয়িরে বয়স ২৪ বছর।হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসায় সক্তি আমি আজও র্গব করে বলে বড়োই, জীবনরে শ্রষ্ঠে ভাল কাজটি আমইি করছে।ি ববিাহ পরর্বতি জীবনে এ র্পযন্ত সতরেো জন নশিকিন্যার আয় রোজগাররে ব্যবস্থা করে দয়িছে।ি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়ছেি ছোট্ট কুটরি শল্পিরে কারখানা। যখোনে অসহায়, অবহলেতি, সুশীল সমাজরে আর্বজনা হসিবেে আখ্যায়তি নারীদরে প্রাধান্য দয়িে অসহায়ত্ব ঘোচানোই রমিঝমি ও আমার মূল উদ্দশ্যে।

এস আই গগণ

সোনাডাঙ্গা, খুলনা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!