নীলফামারীতে ব্লাস্ট রোগে পুড়ে গেছে কৃষকের কপাল ও ধানক্ষেত
সনৎ কুমার রায়, নীলফামারী প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
নীলফামারীর জেলায় অধিকাংশ বোরো ধানে নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমনে ধান ক্ষেত পুড়ে যাওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কৃষকরা কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন ফল পাচ্ছেনা। কৃষকরা বলছে আর দু সপ্তাহ পরে তারা ধান কাঁটা মারাই শুরু করবে। কিন্তু শেষ মুহুত্বে ধানের যে অবস্থা তাতে তাদের ফলন বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের দাবি ধানের ব্লাস্ট রোগ দমনে কৃষকদের মাঝে কৃষকদের করনীয় শীর্ষক লিফলেট বিতরন সহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
সেই সাথে মাইকিং করে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যাবহার করতে বলা হয়েছে।
ডোমার,ডিমলা,জলঢাকা,কিশোরগঞ্জ উপজেলা ঘুরে দেখা যায় একই রোগে ধানক্ষেত নষ্ট হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবারে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন জাতের মিলে ১০ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। অর্জিত হয়েছে ১০ হাজার ৬৩০ হেক্টর। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার ৯ শত ১১ মেট্রিকটন। উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ব্যাপক হারে এ রোগে আক্লান্ত হয়েছে ক্ষেত। বিভিন্ন ধানের জাতের মধ্যে ব্রি-২৮ ধানের ক্ষেতে শীষ আসা ধান ক্ষেত শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।
ডিমলা উপজেলায় নাউতারা ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের কৃষক সীতানাথ বলেন, আমি এবার তিন বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ধান আবাদ করেছি। আমার পুরো ধান ক্ষেতে এই রোগের আক্রমন দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে তার পুরো ধান ক্ষেত শুকিয়ে গেছে।
ডিমলা সদর ইউনিয়নের তিতপাড়া গ্রামের মোতালেব আলী বলেন, আমি এবারে ৪ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। ইতিমধ্যে ধানক্ষেতে এমকোর, কাসুমিন,আমোকসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করে কোন কাজ হয়নি। সর্বশেষ উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে টুপার, ও টর্নেডো-৭৫ ব্যবহার করেছি কিন্তু তারপর কোন কাজ হচ্ছেনা।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের কৃষক সবুর রহমান বলেন, আমার তিন বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘা জমিতে কিটনাশক প্রয়োগ করে কোন কাজ না হওয়ায় তা কেটে গরুর খাদ্য হিসাবে বাজারে বিক্রি করেছি। আর দুই বিঘা জমির ক্ষেতে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে দুই দিন পর পর কিটনাশক ব্যবহার অব্যহত রেখেছি।
এ বিষয়ে কথা বললে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, নেক ব্লাস্ট,লিফ ব্লাস্ট,ও গিট ব্লাস্ট এগুলো ধানের ছত্রাক জনিত রোগ। ধানের চারা অবস্থা থেকে ধান পাকার পুর্ব পর্যন্ত যে কোন সময় এ রোগ দেখা দিতে পারে। তবে এ রোগ শুধুমাত্র ব্রি-২৮ ধানে বেশি আক্রমন করেছে। এ জন্য উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের লিফলেট বিতরন সহ বিভিন্ন পরামর্শ অব্যাহত রেখেছে।