টাঙ্গাইলে কন্যা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা পিতার সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন
মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল), টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
টাঙ্গাইলে চাঞ্চল্যকর ছালেহা হত্যা মামলার আসামীদের ফাঁসির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছেন মুক্তিযোদ্ধা পিতা, বীর মুক্তিযোদ্ধাগন, নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। হত্যা মামলার মুল আসামীসহ অন্যান্য আসামীরা জামিনে মুক্তি পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় আসামীদের হুমকি ধামকিতে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছামাদ ও তার পরিবার নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন। টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু ভিআইপি অডিটরিয়ামে ১৯ জানুয়ারি রোববার সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত ছালেহার পিতা ১১নং সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুস ছামাদ। তিনি বলেন, বিগত ২০১১ সালের ১৩ মে দেলদুয়ার উপজেলার গড়াসিন গ্রামের মৃত শাহজাহান মিয়ার ছেলে আশরাফুল আলম ছাত্তারের সাথে দুই লাখ এক টাকা কাবিনমুলে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কন্যা ছালেহা আক্তারের সাথে চাহিদামত ফ্রিজ, খাট, টেলিভিশন ও গহনাপত্র দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিদেশে যাওয়ার জন্য আরো ৫ লাখ টাকা দাবি করে ছেলের পরিবার। যৌতুকের টাকা না দেয়াতে ছালেহা আক্তারের উপর নেমে আসে নির্যাতন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ২০১২ সালের ১৮ আগষ্ট ছালেহাকে অমানবিক নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার পর সিলিং ফ্যানের সাথে অর্ধঝুলন্ত অবস্থায় ফাঁসিতে টাঙ্গিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় ছালেহার স্বামী, শ্বাশুড়ী, প্রতিবেশী ইয়াকুব সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩জনকে আসামী করে দেলদুয়ার থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছামাদ। পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টেও ছালেহার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এছাড়া ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ছালেহাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রামানিত হয়। এরপরও মুল আসামী ছালেহার স্বামী আশরাফুল আলম ছাত্তারসহ অন্যান্য আসামীরা জামিনে মুক্তি পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে করে মুক্তিযোদ্ধা পিতা কন্যা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার খন্দকার আনোয়ার হোসেন, সাবেক সহকারী কমান্ডার মো. সোলায়মান মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শামছুল আলম চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ, পৌর কাউন্সিলর কামরুল হাসান মামুন, নিহতের ছোট বোন সাবিহা আক্তার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি মোঃ মাহমুদুর রহমান খান (বিপ্লব), সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খান মেনন (রাসেল), সহ-সভাপতি এম এ মামুন নাহিদ, মোঃ শাহ আলম মিয়া, মোঃ রুবেল আনসারী, বিমল কুমার আচার্য’ সহ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনের পর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ।